বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত মাসে হাওড়ার (Howrah) পাঁচলায় একটি গাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থসহ গ্রেফতার করা হয় ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand) তিন কংগ্রেস (Congress) বিধায়ককে। এক্ষেত্রে তাদের কাছে ৪৯ লাখ টাকা কোথা থেকে এলো? তা নিয়ে শুরু হয় জল্পনা। এমনকি, বিপুল পরিমাণ টাকার পিছনে আদতে ঝাড়খণ্ডের জোট সরকার ফেলে দেওয়ার চক্রান্ত রয়েছে বলেও দাবি করে বাংলার পুলিশ। বর্তমানে অবশ্য কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) থেকে জামিন পেয়েছেন রাজেশ কাশ্যপ, ইরফান আনসারি এবং নমন দীক্ষিত নামে তিন কংগ্রেস বিধায়ক।
এদিন জেল থেকে ছাড়া পেতেই তৃণমূল কংগ্রেস এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বসলেন কংগ্রেস নেতা ইরফান আনসারি। তাঁর দাবি, “রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের কারণে আমাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। আমাদের কাছে যে টাকা ছিল, তাতে রাজনৈতিক রঙ লাগানোর চেষ্টা করা হয়েছে। আমি দিদিকে সম্মান করি। কিন্তু আমাদের সঙ্গে যে ব্যাপারটি ঘটানো হলো, তা একদম ভালো লাগেনি।”
উল্লেখ্য, গত ৩০ শে জুলাই হাওড়ার পাঁচলা থেকে একটি গাড়ি আটক করে পুলিশ। উক্ত গাড়িটিতে তিন কংগ্রেস বিধায়কসহ ৪৯ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে প্রশ্ন জাগে, এত বিপুল পরিমাণ টাকা নিয়ে তারা ঝাড়খণ্ড থেকে হাওড়ার উদ্দেশ্যে কেন রওনা দিয়েছিলেন? যদিও কংগ্রেস নেতারা দাবি করতে থাকেন যে, আদিবাসী উৎসব উপলক্ষ্যে বড় বাজার থেকে শাড়ি এবং ফুটবল কেনার জন্যই তারা বাংলায় আসেন। তবে পরবর্তীতে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ এবং দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ছাড়া পান ইরফান আনসারি। সংশোধনাগার থেকে বেরোতেই তিনি বলেন, “আদালতের মতে আমরা নির্দোষ। সেই কারণেই ছাড়া পেয়েছি। তাছাড়া যে টাকা আমরা নিয়ে এসেছিলাম, তা কেবলমাত্র বড় বাজার থেকে শাড়ি এবং ফুটবল ক্রয় করার জন্যই। আদিবাসী দিবস উপলক্ষ্যে উপহার কেনার জন্য আমরা বাংলায় এসেছিলাম। তবে এর ফলে আমাদের যে হয়রানি শিকার হতে হবে, তা কখনোই কল্পনা করতে পারেনি। আমি মমতা দিদিকে সম্মান করি। কিন্তু আমাদের সাথে যেটা হলো, সেটা আমার একদম ভালো লাগেনি। রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের কারণেই আমাদের ফাঁসানো হয়েছে। তবে আমি এটাই বলব যে, আমরা কংগ্রেসের সৈনিক। আমার বাবা কংগ্রেস দলের হয়ে কাজ করেছেন। আমাদের সঙ্গে বিজেপির কোনো রকম সম্পর্ক নেই।”
তবে ইরফান আনসারির বক্তব্যের পরেও জল্পনা কমার কোন লক্ষণ নেই। তৃণমূল কংগ্রেস সহ অন্যান্য একাধিক মহল থেকে দাবি করা হয়ে আসছে যে, এক্ষেত্রে ঝাড়খণ্ডের জোট সরকার ফেলার কারণেই তারা বিপুল পরিমাণ অর্থ বহন করে এনেছিলেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি এ প্রসঙ্গে মুখ খোলেন ঝাড়খণ্ডের অপর এক কংগ্রেস বিধায়ক জয়মঙ্গল সিং। তিনি জানান, “হাওড়ার পাঁচলায় যে কংগ্রেস বিধায়কদের আটক করা হয়েছে, তারা আমাকেও টোপ দিয়েছিল। আসলে ওদের উদ্দেশ্য ছিল, ঝাড়খণ্ডে জোট সরকারকে উৎখাত করা। তাই ওই তিন কংগ্রেস বিধায়ক অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমত বিশ্ব শর্মার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।” এমনকি, প্রত্যেক বিধায়ককে দশ কোটি টাকা করে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন জয়মঙ্গল সিং। তবে এর মাঝেই কংগ্রেস বিধায়ক আনসারির বক্তব্য আদতে কতটা সত্য, সে বিষয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন চিহ্ন দেখা দিয়েছে।