বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মহারাষ্ট্রের মতোই কি আবারও একটি রাজ্যে সরকার পতনের সাক্ষী থাকতে চলেছে মানুষ? বর্তমানে সেই সম্ভাবনাই যেন ক্রমশ প্রকট হয়ে উঠছে আর সেই জল্পনা মাঝেই এবার সরকার বাঁচানোর স্বার্থে ঝাড়খণ্ড (Jharkhand) ছেড়ে অজানা গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন (Hemant Soren)। বিজেপির (BJP) ‘অপারেশন লোটাস’-এর হাত থেকে দলের বিধায়ক এবং জোট সঙ্গীদের বাঁচাতে এহেন পদক্ষেপ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সম্প্রতি, মহারাষ্ট্রে শিবসেনা সরকারের পতন ঘটিয়ে ক্ষমতায় আসে একনাথ শিন্ডে এবং বিজেপির জোট সরকার। শিবসেনার একাধিক বিধায়ককে ভাঙিয়ে পরবর্তীতে তাদের সকলকে নিয়ে সরকার গঠন করে বিজেপি। তাদের সেই অপারেশনই এবার ঝাড়খণ্ডে হতে চলেছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আর তার মাঝেই হেমন্ত সোরেনের বিধায়কদের সঙ্গে নিয়ে বাসে করে অজানা গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা সেই জল্পনাই যেন আরো উস্কে দিলো।
বর্তমানে ঝাড়খণ্ডে মুক্তি মোর্চা এবং কংগ্রেসের জোট সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। এক্ষেত্রে তাদের সকলকে নিয়েই বাসে করে এদিন রওনা দিলেন হেমন্ত। এক্ষেত্রে তাদের পরবর্তী গন্তব্য প্রসঙ্গে সুস্পষ্ট কোন ধারণা না মিললেও বিশেষজ্ঞদের মতে, সম্ভবত ছত্রিশগড় কিংবা বাংলায় নিয়ে আসা হতে চলেছে সকলকে।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন পূর্বে ঝাড়খণ্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়ককে গ্রেফতার করে বাংলার পুলিশ। এক্ষেত্রে গাড়িতে অসংখ্য টাকা থাকায় গ্রেফতার করা হয় তাদের। বিধায়ক ভাঙার কাজে সেই টাকা ব্যবহার করা হতো বলেই জল্পনা সামনে আসতে থাকে। অপরদিকে, বর্তমানে খনি কেলেঙ্কারিতে হেমন্ত সোরেনের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় সেই সম্ভাবনাই আরো প্রকট হয়ে উঠেছে। সূত্রের খবর, এদিন মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বাসভবনে সকল বিধায়কদের নিয়ে একটি বৈঠক আয়োজন করেন। পরবর্তীতে সকলকে নিয়েই বাসে করে রওনা দিলেন তিনি।
ঝাড়খণ্ডে মুক্তি মোর্চার ৩০ বিধায়ক সহ কংগ্রেসের ১৮ এবং আরজেডির একজন বিধায়ক রয়েছেন। এক্ষেত্রে তাদের বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনা না থাকলেও বর্তমানে খনি কেলেঙ্কারিতে মুখ্যমন্ত্রীর বিধায়ক পদ যেতে বসায় ক্রমশ আশঙ্কার সৃষ্টি হয়ে চলেছে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি খনিতে লিজ নেওয়ার মামলায় জড়িয়ে পড়েন হেমন্ত সোরেন। পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে তাঁর বিধায়ক পদ খারিজ করা প্রসঙ্গে একটি জল্পনা উঠে আসে। যদিও পরবর্তীতে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে সেই সম্ভাবনা একপ্রকার উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
সম্পূর্ণ ঘটনা প্রসঙ্গে হেমন্ত সোরেন বলেন, “বিজেপি আমাকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য চক্রান্ত করে চলেছে। ঝাড়খণ্ডের সরকার ফেলা ওদের মূল উদ্দেশ্য।” যদিও আবার অপরদিকে বিজেপির তরফ থেকে সোরেনের বিধায়ক পদ খারিজ করা প্রসঙ্গে দাবি করা হয়েছে। ফলে সব মিলিয়ে ঝাড়খণ্ডে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট একাধিক নাটকের সাক্ষী এবং ভবিষ্যতে সে রাজ্যের পরিস্থিতিও মহারাষ্ট্রের মত হয় কিনা, তা অবশ্য সময় বলবে।