বাংলা হান্ট ডেস্ক : হাজারো বিতর্কের পর অবশেষে এলেন তিনি। এগরার খাদিকুলে (Egra Blust) বিস্ফোরণে নিহত এবং আহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। শনিবার সকাল ১১টা নাগাদ তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। মমতা বলেন, ‘এই ঘটনা থেকে আমাদের চোখ খুলে গেছে। আগামী দু’মাসের মধ্যে রিপোর্ট আসবে। অবৈধ বাজি কারখানায় কাজ করে জীবন নষ্ট যেন না হয়।’
এদিন মমতা বলেন, ‘শুধুমাত্র গ্রিন ফায়ার ক্র্যাকারের ক্লাস্টার তৈরি হবে ফাঁকা জায়গায়। তাতে চাকরিটাও বাঁচবে। এমন দুর্ঘটনাও হবে না। শব্দবাজি কারখানা অবৈধ। লোভে পড়ে অনেকে এই বাজি তৈরি করতে যান। তাতে প্রাণহানি হয়।’ তিনি ঘোষণা করেন, নিহতদের পরিবারের হাতে আড়াই লক্ষ করে টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। পরিবার পিছু একটি করে হোমগার্ডের চাকরি দেওয়া হবে। মমতা নিহতদের পরিবারের সদস্যদের হাতে টাকার চেক তুলে দিয়ে বলেন, ‘অন্তত সংসার চালান।’
এগরাকাণ্ড নিয়ে রাজনৈতিক তর্জা চলছেই। নিহত এবং আহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি সেখান থেকে একাধিক দাবি তোলেন। এনআইএ তদন্তের দাবিও করেন তিনি। নিহতদের পরিবার পিছু ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। পাশাপাশি ভানুকে তৃণমূলের নেতা বলেও অভিযোগ ছিল তাঁর।
তবে শুভেন্দুর সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। শাসকদলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ পাল্টা দাবি করেন ভানু অধিকারীদের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। এই চাপান-উতোরের মধ্যে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল এগরায় গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়ে। এই প্রেক্ষাপটে স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এগরা-সফর বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল।
বিস্ফোরণকাণ্ডের ১১ দিন পর কেন এগরা যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী, এ নিয়ে কটাক্ষ করেছে গেরুয়া শিবির। মুখ্যমন্ত্রীর এগরা-সফরকে তোপ দেগে শুভেন্দু বলেন, ‘খাদিকুলে হেলিকপ্টার করে যাবেন, হেলিপ্যাড তৈরি হয়েছিল। গতকাল জামাইষষ্ঠী ছিল, আমি বলেছিলাম ভানু বাগের বাড়িতে জামাই ষষ্ঠী করতে যাবেন। কালকে যাননি। আগামিকাল ভানু বাগের শ্রাদ্ধ আছে। ভানু বাগ ওঁর সম্পদ। ভানু বাগের শ্রাদ্ধে খেতে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী।’’
প্রসঙ্গত, খাদিকুলে গত ১৬ মে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় কারখানার মালিক ভানু বাগ-সহ মোট ১১ জনের। সিআইডি তদন্তে উঠে এসেছে, বিস্ফোরণের পর আহত ভানু ওড়িশায় পালিয়ে গিয়ে সেখানকার একটি হাসপাতালে জাল আধার কার্ড দিয়ে ভর্তি হন। পরে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।