বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত একমাস থেকে আর জি কর (RG Kar) কাণ্ড নিয়ে তোলপাড় রাজ্য। দিকে দিকে চলছে প্রতিবাদ। তিলোত্তমার বিচারের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে রাজ্যের সকল শ্রেণীর মানুষ। সহকর্মীর নৃশংস মৃত্যুতে টানা কর্মবিরতিতে রয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। এরই মাঝে কোন্ননগরে একটি লরি দুর্ঘটনায় এক যুবকের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত ওই যুবককে শ্রীরামপুরের ওয়ালশ হাসপাতালে চিকিৎসার পর আর জি করে রেফার করা হয়। অভিযোগ ওঠে হাসপাতালে গিয়ে টানা দুই ঘন্টা বিনা চিকিৎসায় পড়ে ছিলেন ওই যুবক। এরপরই তাঁর মৃত্যু হয়।
আর জি কর নিয়ে উত্তপ্ত আবহেই ‘বিনা চিকিৎসায়’ যুবক মৃত্যুর এই ঘটনায় ফের শুরু হয় শোরগোল। তৃণমূলের অধিকাংশই এই ঘটনায় আন্দোলনরত চিকিৎসকদের উপর আঙুল তুলতে শুরু করে। এরই মাঝে এই নিয়ে সরব হন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তার দাবি, কোনো রকম চিকিৎসা না পেয়ে মারা যেতে হয়েছে সেই যুবককে।
গত ৬ সেপ্টেম্বর অভিষেক এক্স হ্যাণ্ডেলে (সাবেক টুইটার) অভিষেক লেখেন, প্রতিবাদ যদি করতেই হয় সেটা গঠনমূলক ভাবে করা উচিত। যেসকল চিকিৎসকরা প্রতিবাদ করছেন তাদের আরও মানবিক ও সহানুভূতিশীল হওয়া উচিত ছিল। তাদের প্রতিবাদকে ‘সমর্থন’ করলেও অভিষেক বলেন, আন্দোলনের কারণে বিনা চিকিৎসায় কোনও রোগীর মৃত্যু হলে তা কিন্তু অপরাধ। এর ক্ষমা হয়না। এভাবে কারোর জীবন ঝুঁকিতে ফেলা উচিৎ হয়নি।
এদিকে অভিষেকের দাবি ফুৎকারে উড়িয়ে চিকিৎসক সংগঠনের পাল্টা দাবি, বিনা চিকিৎসায় ওই যুবক মারা যাননি। পর্যাপ্ত চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া দেওয়ার পরও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। স্বাভাবিক নিয়মেই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। আর জি কর নিয়ে উত্তপ্ত আবহেই অভিষেকের এই ‘অভিযোগে’ রীতিমতো ফুঁসে ওঠে চিকিৎসক মহল।
এদিকে যুবক মৃত্যুর ঘটনায় পাল্টা শ্রীরামপুরের হাসপাতালের সুপার বলেন, ওই যুবককে শ্রীরামপুর থেকে কলকাতা মেডিকেল হাসপাতালে রেফার করা হয়ছিল। তাঁকে আরজি করে কেন নিয়ে যাওয়া হল জানা নেই। এরই মাঝে সোমবার আরও গড়াল জল। এদিন পশ্চিমবঙ্গ জয়েন্ট প্লাটফর্মস অফ ডক্টরসের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
আরও পড়ুন: ‘এক মাস তো হয়ে গেল’,‘পুজোতে ফিরে আসুন’, আরজি কর কাণ্ডের মাঝেই ‘আহ্বান’ মমতার
ওই বিজ্ঞপ্তিতে মৃত যুবকের চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্যপ্রমাণ পেশ করার কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে সকাল ৯টা ১০ মিনিট থেকে ১২টা পর্যন্ত ওই যুবককে চিকিৎসা করা হয়। সেই নিয়ে যথেষ্ট নথি ও তথ্যপ্রমাণ রয়েছে। তাই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি ভিত্তিহীন। তবে অভিষেকের এই ভিত্তিহীন দাবি ও উষ্কানিমূলক মন্তব্যের কারণে তারা বিপদে পড়তে পারেন। তাই গোটা ঘটনায় অভিষেককে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি মন্তব্য অবিলম্বে প্রত্যাহর করার কথা বলা হয়েছে।