বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বাংলাদেশে অশান্তির পরিবেশ তৈরি হওয়ার পর থেকেই হু হু করে বেড়ে চলেছে ভারতের জাল পাসপোর্ট তৈরি করার কারবার। ওপার বাংলার শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর থেকে বহু মানুষ চাইছেন বাংলাদেশ ছেড়ে পাকাপাকিভাবে ভারতের এসে বসবাস করতে। আর এই সুযোগেই ব্যাপকভাবে মাথাচারা দিয়েছে জাল পাসপোর্ট (Fake Passport) তৈরীর চক্র।
জাল পাসপোর্ট (Fake Passport) তৈরির মামলায় পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ বিচারক
এবার এই জাল পাসপোর্ট (Fake Passport) তৈরির মামলায় পুলিশের ভূমিকায় বিরাট ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বিচারক। যারা এই সমস্ত পাসপোর্ট তৈরি করছেন তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? এ দিন তা জানতে চান বিচারক। কিন্তু কিন্তু পুলিশের কাছে এই প্রশ্নের কোন সদুত্তর ছিল না। আর তাতেই এদিন মেজাজ হারান আলিপুর আদালতের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সৌভিক দে। কেন তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়নি? তা নিয়েও এদিন প্রশ্ন তোলেন বিচারক।
তার মতে ভেরিফিকেশন সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্ত এগোয়নি একফোঁটাও। বৃহস্পতিবার এই মামলাটি উঠেছিল আলিপুর আদালতে। সেখানে এদিন বিচারক পুলিশের উদ্দেশ্যে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলে ওঠেন, ‘এই ভেরিফিকেশন তো পিওনরা করেন না। যারা এই সমস্ত জাল পাসপোর্ট-এর (Fake Passport) ভেরিফিকেশন করছেন তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?’
প্রসঙ্গত এখানে বলে রাখা ভালো পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের দায়িত্ব থাকে পুলিশের উপরে। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও কারও বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখার দায়িত্ব থাকে পুলিশের। শুধু তাই নয় সংশ্লিষ্ট আবেদনকারী ভারতীয় নাগরিক কিনা তাও দেখার দায়িত্ব থাকে পুলিশের। সমস্ত কিছু যাচাই করার পরেই পাসপোর্ট-এর জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়।
অভিযোগ উঠছে, বাংলাদেশি নাগরিকদের পাসপোর্টের জন্য এত কিছু ভেরিফিকেশন করাই হচ্ছে না। উল্টে তাদের হাতে খুব সহজেই চলে আসছে জাল পাসপোর্ট। ভারতের জাল পাসপোর্ট বানিয়ে তারা দিনের পর দিন এই রাজ্যেই থাকছেন।
আরও পড়ুন: ভূগর্ভস্থ জল চুরি করে দেদারে ব্যবসা! এবার কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছেন ফিরহাদ
এবিষয়ে এদিন আলিপুর আদালতের বিচারক সৌভিক দে বলেছেন যেক্ষেত্রে দেশের নাগরিকদের পাসপোর্টের জন্য এত ভেরিফিকেশন করতে হয়। সেখানে কিভাবে পুলিশের নজরদারি এড়ানো হচ্ছে? যাঁরা এই ভেরিফিকেশনের সাথে যুক্ত ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? এদিন তা জানতে চান বিচারক। যদিও উত্তরে তদন্তকারীরা শুধু জানিয়েছেন,’তদন্ত এগোচ্ছে’।
আর তাতেই রীতিমতো ধমক দিয়ে দিন বিচারক বলে ওঠেন, ‘তদন্ত এগোয়নি, গল্প শোনানো হচ্ছে।’ অন্যদিকে সরকারি আইনজীবী জানান, এইসব ঘটনার পেছনে কোন বড় চক্র রয়েছে। কারা সেই চক্র চালাচ্ছেন তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় পুলিশের জালে ধরা পড়েছে ৫ জন। পুলিশের দাবি এই ভুয়ো পাসপোর্ট চক্রের মাস্টারমাইন্ড সমরেশ বিশ্বাস। এই চক্র চালানোর কাজে সে নিজের ছেলে এবং স্ত্রীকেও ব্যবহার করেছিল।