বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত ৯ আগস্ট আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ-হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছিল গোটা বাংলা। জুনিয়র চিকিৎসকদের (Junior Doctor) সেই আন্দোলনে উঠে এসেছিল সরকার বিরোধী স্লোগান। কিন্তু মাঝের এই কয়েক মাসে অনেকটাই স্তিমিত হয়ে গিয়েছে আরজিকর কান্ডের প্রতিবাদ আন্দোলন। রাজ্যের সদ্য সমাপ্ত উপনির্বাচনেও কোনো প্রভাব পড়েনি এই প্রতিবাদ আন্দোলনের। ৬ কেন্দ্রেই বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছে রাজ্যের শাসকদল। তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে এত প্রতিবাদ, এত আন্দোলন সবটাই কি তবে বিফলে গেল? এপ্রসঙ্গে এবার নীরবতা ভাঙলেন রাজ্যের আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকরা (Junior Doctor)।
কটাক্ষের জবাবে এবার মুখ খুললেন RG Kar-র জুনিয়র ডাক্তাররা (Junior Doctors)
শুরু থেকেই জনরোষের মুখে পড়ে আরজি কর আন্দোলনকে বারবার অপমান করেছে বাংলার শাসক দল। এমনকি অভিযোগ করা হয়েছে এই আন্দোলন নাকি আসলে শাসক বিরোধী বিজেপি এবং সিপিএম-এর। যদিও প্রথম দিন থেকেই এই আন্দোলনকে জুনিয়র ডাক্তাররা (Junior Doctor) ‘অরাজনৈতিক’ বলে এসেছেন।
এরইমধ্যে দেখতে দেখতে ১০ দিন কেটে গিয়েছে উপনির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার। এপ্রসঙ্গেই এবার সাংবাদিক বৈঠকে কার্যত ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ‘জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট’-এর দেবাশিস হালদার, কিঞ্জল নন্দরা। তাঁদের স্পষ্ট জবাব ‘আন্দোলন সিস্টেমের বিরুদ্ধে’। কোনও রাজনৈতিক আন্দোলন নয়, স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বদল, দুর্নীতি এবং থ্রেট কালচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছেন তাঁরা।
তাই বারবার এই আন্দোলনকে দলীয় রাজনীতির মাপকাঠিতে ফেলে দেওয়ার চেষ্টাকে ধিক্কার জানাচ্ছেন তাঁরা। বুধবার একটি বিবৃতি দিয়ে ডাক্তাররা জানিয়েছেন, ‘ ক’দিন আগে পশ্চিমবঙ্গে ছ’টি আসনের উপনির্বাচনে শাসকদল জিতেছে বলে আমাদের নাগরিক আন্দোলনকে ব্যঙ্গাত্মক ভাবে আক্রমণ হল— বলা হল, ‘কী হল এত আন্দোলন করে, সেই তো শাসকদল জিতেই গেল!’
আরও পড়ুন: এবার খসবে মোটা টাকা! স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে বড় ঘোষণা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের
সেইসাথে আরও সংযোজন, ‘বার বার এই ভাবে আন্দোলনকে দলীয় রাজনীতির মাপকাঠিতে ফেলে দেওয়ার কদর্য প্রয়াসকে তীব্র নিন্দা আমরা আগেও জানিয়েছি, এখনও জানাচ্ছি।’বারবার রাজনীতির কথা টেনে এনে এই আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
তবে এসবের মধ্যেই আরও একবার স্বাস্থ্যভবন অভিযানের ডাক দিয়েছেন প্রতিবাদী চিকিৎসকরা। আগামীকাল, ৬ ডিসেম্বর শুক্রবার মেডিক্যাল কাউন্সিলের সামনে জমায়েত করে স্বাস্থ্যভবন অভিযান করবেন তাঁরা। কিন্তু উপনির্বাচনের ফলাফলের পর এই আন্দোলন কতটা সফল হবে তা নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন।
আরজিকর কান্ডে দেহ উদ্ধারের দিন ক্রাইম সিনে দেখা গিয়েছিল অভীক দে, বিরূপাক্ষ বিশ্বাসকে। এছাড়াও রাজ্যের একাধিক কলেজে থ্রেট কালচারসহ আরও বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছিল তাঁদের বিরুদ্ধে। তারপরেই তড়িঘড়ি মেডিক্যাল কাউন্সিল থেকে সরানো হয়েছিল তাঁদের। তদন্ত কমিটিও গঠন করে স্বাস্থ্য ভবন।
কিন্তু মাত্র ৪ মাসের মধ্যেই রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলে আবার ফিরে এসেছেন তাঁরা। যা নিয়ে এবার ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। একইসাথে আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অভিযুক্ত সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের চার্জশিট দাখিল করলেও রাজ্য সরকার এখনও কেন ছাড়পত্র দেয়নি সেই প্রশ্নও তুলছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।