বাংলা হান্ট ডেস্ক: দীর্ঘ ৫৯ বছর পর ফের একবার পৃথিবীর (Earth) সবচেয়ে কাছে আসতে চলেছে সৌরজগতের (Solar System) সর্ববৃহৎ গ্রহ বৃহস্পতি (Jupiter)। এমতাবস্থায়, জ্যোতির্বিজ্ঞানীরাও এই মহাজাগতিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তুমুল আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ইতিমধ্যেই নাসার (The National Aeronautics and Space Administration, NASA) তরফে জানানো হয়েছে যে, আগামী ২৬ সেপ্টেম্বরের পুরো রাত ধরেই বৃহস্পতিকে চাক্ষুস করা যাবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বৃহস্পতি পৃথিবী থেকে প্রায় ৬০০ মিলিয়ন মাইল দূরে অবস্থিত রয়েছে। যদিও, আগামী সোমবার অর্থাৎ ২৬ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতি পৃথিবী থেকে মাত্র ৩৬৭ মিলিয়ন মাইল দূরে থাকবে। পাশাপাশি, জানা গিয়েছে, সূর্য পশ্চিমে অস্ত যাওয়ার কারণে ওই সময়ে বৃহস্পতিকে পৃথিবীর পূর্ব দিকে উদিত হতে দেখা যাবে। এদিকে, এই বিরল ঘটনার সময়ে সূর্য ও বৃহস্পতির মাঝখানে থাকবে পৃথিবী । এই ঘটনাটিকে “Jupiter at Opposition” নামে অভিহিত করা হয়েছে।
এমতাবস্থায়, এই ঘটনার ফলে বছরের অন্যান্য সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে ওইদিন বৃহস্পতিকে আরও উজ্জ্বল ভাবে দেখা যাবে। এমনকি, এই Opposition-এর ঘটনা বৃহস্পতি ছাড়াও অন্যান্য মহাজাগতিক বস্তুর সাথেও ঘটতে পারে বলে জানা গিয়েছে। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি, প্রতি ১৩ মাস অন্তর বৃহস্পতির সাথে Opposition-এর ঘটনা ঘটে। যদিও, এবারে Opposition-এর পাশাপাশি বৃহস্পতি পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে এসেও উপস্থিত হবে। অতএব, জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আগামী সপ্তাহে এই দৈত্যাকার গ্রহটিকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেতে পারেন।
কিভাবে দেখা যাবে: মূলত, একটি ভালো টেলিস্কোপ যেগুলির সাহায্যে তিন-চারটি গ্যালিলিয়ান উপগ্রহ (যেমন চাঁদ) দেখা যায়, সেটির সাহায্যেই এই মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী থাকা যাবে বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, গ্যালিলিও সপ্তদশ শতকে আলোকবিদ্যার সাহায্যে এই মহাজাগতিক উপগ্রহগুলিকে পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। এই প্রসঙ্গে আলাবামার হান্টসভিলে নাসার মার্শাল স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের গবেষক তথা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অ্যাডাম কোবেলস্কি বলেন, “আপনার ব্যবহার করা যেকোনো সিস্টেমের জন্য একটি মূল প্রয়োজনীয়তা হবে ‘স্থিতিশীল মাউন্ট’।”
পাশাপাশি, বৃহস্পতির গ্রেট রেড স্পট (Great Red Spot) এবং ব্যান্ডগুলিকে ভালোভাবে দেখার জন্য কোবেলস্কি একটি ৪-ইঞ্চি বা তার চেয়েও বড় টেলিস্কোপ ব্যবহার করার পরামর্শ দেন। এছাড়াও, সবুজ থেকে নীল রেঞ্জের মধ্যে কয়েকটি ফিল্টার ব্যবহার এর বৈশিষ্ট্যগুলিকে আরও ভালো করতে সাহায্য করবে বলেও জানান তিনি। এদিকে, এই প্রসঙ্গে Astrophysicist-রা জানিয়েছেন, এই বিরল ঘটনাটি অন্ধকার এবং শুষ্ক থাকবে এমন উচ্চ অঞ্চল থেকে দেখা যেতে পারে। পাশাপাশি, এই মহাজাগতিক ঘটনাটি ২৬ সেপ্টেম্বরের আগে এবং পরেও দেখা যাবে বলে জানা গিয়েছে।