বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বলা হয় ঈশ্বরের পরেই ডাক্তারদের (Doctor) স্থান। কেউ কেউ আবার ডাক্তারদের ভগবানের আসনেও বসিয়ে থাকেন। তাই অসুখ-বিসুখ হলে সকলেই চোখ বুজে ভরসা করেন ডাক্তার (Doctor) বাবুদের উপরেই।সেই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে এবার রক্ষকই হয়ে উঠলেন ভক্ষক! সম্প্রতি এক চিকিৎসক (Doctor) এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উঠেছে এক ভয়ংকর অভিযোগ। শুধুমাত্র সরকারি প্রকল্পের টাকা হাতানোর জন্য গ্রামের মানুষদের ভুল বুঝিয়ে জোর করে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করিয়েছিলেন এক গুণধর চিকিৎসক (Doctor)।
টাকার জন্য জোর করে ৭ জনের অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করলেন ডাক্তার (Doctor)
আস্ত্রোপচারের পরেই মৃত্যু হয়েছে দুই রোগীর, আর আশঙ্কা জনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৫ জন। অভিযোগ সামনে আসতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গুজরাটের আমেদাবাদের একটি হাসপাতালে। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরাও ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছেন হাসপাতালে। অন্যদিকে চিকিৎসকের এই কুকীর্তির কথা ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর থেকেই খাঁ খাঁ করছে হাসপাতাল। বেপাত্তা অভিযুক্ত চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত এই প্রথম নয়, বছর দুয়েক আগেও গুজরাটের এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে একই কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছিল। শুধুমাত্র সরকারি প্রকল্পের টাকা পাওয়ার জন্য একজন চিকিৎসককে এতটা নিচে নামতে দেখে হতবাক সকলেই।
ঠিক কি ঘটেছিল?
মহসেনা জেলার কাদির বোরিসানা গ্রামে স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখান থেকে ১৯ জনকে আরও কিছু পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল যে বিনামূল্যেই যাবতীয় চিকিৎসা করানো হবে। হাসপাতালে এনে ১৯ জনের অ্যাঞ্জিওগ্রাফি করা হয়। এরপর অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করানো হয় ৭ জনের।
ঘটনার সূত্রপাত হয় ১০ই নভেম্বর। ওই দিন হাসপাতালের তরফের মহসেনা জেলার কাদির বোরিসানা গ্রামে একটি স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা করানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। ওই স্বাস্থ্য শিবির থেকেই আরও কিছু পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য বেছে বেছে ১৯ জনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: বিমল গুরুং অতীত! পাহাড়ে তৃণমূলের ভরসা অনীত থাপা! মমতা সাফ বললেন…
কোনো সমস্যা না থাকা সত্ত্বেও ১৯ জনের অ্যাঞ্জিওগ্রাফি করা হয়। আর তাদের মধ্যে ৭ জনের অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করা হয়। অপারেশনের পরেই এদিন ঘটে যায় অঘটন। মৃত্যু হয় দুই রোগীর। অন্যদিকে আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন পাঁচজন। জানা যাচ্ছে, যে গুণধর চিকিৎসক তাদের অপারেশন করেছিলেন তার নাম ডঃ প্রশান্ত ভাজিরানি। মৃতদের পরিবারের অভিযোগ স্টেন্ট বসানোর পরেই মৃত্যু হয়েছে তাদের। কোনরকম সমস্যা ছাড়াই অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করানোর জন্যই তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে রোগীদের পরিবারের। শুধু তাই নয়, অভিযোগ রোগীদের মৃত্যুর পরেও হাসপাতালের তরফ থেকে প্রথমে তাদের খবর দেওয়া হয়নি।
বিষয়টি জানাজানি হতেই গ্রামের লোকজন এসে হাসপাতালে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। অন্যদিকে এই ঘটনার পর থেকেই চিকিৎসক এবং হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্তারা পলাতক। অন্যদিকে এমন ভয়ংকর অভিযোগ মিলতেই নড়েচড়ে বসে আমেদাবাদ জেলা প্রশাসন। স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান ডাঃ ভাবিন সোলাঙ্কি, স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান দেবাং দানি এবং প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী নিতিন প্যাটেল ওই হাসপাতালে পৌঁছন। যদিও এদিন হাসপাতালে কোন চিকিৎসকই উপস্থিত ছিলেন না। চেয়ারম্যান-ডিরেক্টর থেকে শুরু করে সমস্ত চিকিৎসকরা গায়েব ছিলেন। শুধুমাত্র আইসিউতেই একজন চিকিৎসক ছিলেন।