বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দুর্নীতির জোয়ারে ভাসছে রাজ্য। একের পর এক নয়া পাতা জুড়ছে নিয়োগ দুর্নীতির (Recruitment Scam) কাহিনীতে। পাহাড়প্রমান দুর্নীতির মামলা চলছে কলকাতা হাইকোর্টে। গত বৃহস্পতিবার দুর্নীতি সংক্রান্ত এক মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Abhijit Gangopadhyay) প্রশ্নে ইংরেজীতে বয়ান দিতে পারেননি হুগলির এক ইংরেজী শিক্ষক (English Teacher)। তিনি আবার ২০১৬ সালের প্রাথমিকে নিয়োগের পরীক্ষকদের মধ্যে একজন ছিলেন। এই ঘটনা সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গোটা রাজ্যে।
সে দিনের ঘটনার পরদিন বিচারপতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে আসেন সেই ইংরেজি শিক্ষক। তবে, এদিন ফের বিচারপতিত ভর্ৎসনার শিকার হন হুগলির ওই শিক্ষক। শিক্ষকের কথা শুনে বেজায় রেগে গিয়ে বিচারপতির হুঁশিয়ারি, “এক্ষুনি বেরিয়ে না গেলে আর্দালি দিয়ে গ্রেফতার করাব।” বিচারপতির হুঙ্কার শুনেই তড়িঘড়ি আদালত ত্যাগ করেন ইংরেজি শিক্ষক।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের প্রাথমিকের নিয়োগ নিয়ে বহুবার অনিয়মের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট সঠিক ভাবে হয়নি, এই অভিযোগ তুলে আদালতে মামলা দায়ের করেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। এরপর এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে রাজ্যের ৩ জেলার ৩০ জন ইন্টারভিউয়ারদের তলব করেছিল কলকাতা হাই কোর্ট। গত ২১ ফেব্রুয়ারী রুদ্ধদ্বার শুনানিতে তাদের প্রত্যেককে পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এই পক্রিয়াতেই জিজ্ঞাসাবাদের ডাক পড়ে হুগলির একটি সেই ইংরেজির শিক্ষকের। আদালতে সাধারণও ইংরেজিতেই কথোপকথন হয়। জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ইংরেজিতেই প্রশ্ন করেন ওই শিক্ষককে। কিন্তু তাতে কিছুই বুঝতে না পেরে কিছুক্ষন শূন্যদৃষ্টিতে তাকিয়ে উল্টে বিচারপতির কাছে আবেদন করে শিক্ষক বলেন, ‘‘বাংলায় প্রশ্ন করুন।’’
এই নিয়েই বেজায় ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। কিভাবে এতদিন শিক্ষকতা করছেন তা নিয়েও চিন্তিত বিচারপতি। ইংরেজির শিক্ষকের এমন কথা শুনে মাথায় হাত বিচারপতির। রেগে গিয়ে ওই শিক্ষককে বিচারপতি বলেন ‘‘ইংরেজির শিক্ষক হয়ে ইংরেজি না জানলে ছাত্রদের কী ভাবে পড়াবেন? এটা তো আশা করা যায় না!’’ তবে পরবর্তী প্রশ্ন বাংলাতেই করেন বিচারপতি। এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই পরদিন বিচারপতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে যান হুগলির ওই শিক্ষক। তবে এদিনও বিচারপতির ভর্ৎসনার শিকার হন ইংলিশ না জানা ‘ইংরেজি’ শিক্ষক।