বাংলা হান্ট ডেস্ক: নিত্য নৈমিত্তিক রাজনৈতিক তরজা থেকে শুরু করে শাসক-বিরোধী আক্রমণ, এই সবকিছুকেই এখন ছাপিয়ে গিয়ে একাধিক মামলায় বর্তমানে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম বারবার খবরের শিরোনামে উঠে আসছে। প্রায় প্রতিদিনই একের পর এক মন্ত্রীকে কার্যত নাকানিচোবানি খাইয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
এছাড়াও, একাধিক মামলায় দিনের দিন শুনানির পাশাপাশি সিঙ্গেল বেঞ্চ রায় দেওয়ার পরমুহূর্তেই ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি ছাড়াও রাতের বেলাতে এজলাস বসতে শেষ কবে দেখেছেন সেটাই মনে করতে পারছেন না অনেকে। আর এই সবকিছুই সম্ভব হয়েছে এই বিচারপতির সৌজন্যে। এমনকি, আইনজীবীদের একাংশও বর্তমান পরিস্থিতি বর্ণনা করার মত ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না।
ইতিমধ্যেই একাধিক সম্বোধনও পেতে শুরু করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কেউ কেউ তাঁকে “দাবাং” বলে অভিহিত করেছেন, আবার অনেকের কাছেই তিনি হয়ে উঠেছেন “হিরো”। যদিও, কিছু কিছু রাজনীতিবিদের কাছে তিনি নেহাতই সুবিধাবাদী এবং প্রচারলোভী হয়ে উঠলেও বিচারপতি জানিয়ে দিয়েছেন যে, মাথায় বন্দুক ঠেকানো থাকলেও দুর্নীতিকে সমূলে উৎপাটিত করবেন তিনি।
চাকরির আশায় দিনের-পর-দিন আন্দোলনরত যোগ্য প্রার্থীদের কাছে এখন আশার আলো জুগিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এমনকি ইতিমধ্যেই রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সিবিআই জেরার মুখেও ফেলেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতার চাকরিও গেছে ইতিমধ্যে। এমতাবস্থায়, একের পর এক নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নিয়ে কার্যত ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছে বিচারপতির নাম।
মূলত, সরকারি আধিকারিক হিসেবেই কর্মজীবনের শুরু করেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। যদিও, পরবর্তীকালে আইন নিয়ে পড়াশোনা করে আইনজীবী হিসেবে পেশা শুরু করার পর এসএসসি-র হয়েই মামলা লড়তেন তিনি। আর সেই কারণেই এসএসসি-র কার্যপ্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি ভালো ভাবেই অবগত। কলকাতা হাইকোর্টে দীর্ঘদিন আইনজীবী হিসেবে প্র্যাকটিসের পর ২০১৮ সালে বিচারপতি হন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তারপর ২০২০ সালে স্থায়ী বিচারপতি নিযুক্ত হন তিনি। এমতাবস্থায়, এসএসসি-র ওপর তাঁর বিন্দুমাত্র আস্থা নেই বলে জানিয়েছেন বিচারপতি।
যেখানে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও চাকরি থেকে বঞ্চিত হাজার হাজার যোগ্য প্রার্থী সেখানে প্রভাবশালীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য ইতিমধ্যে চাকরি পেয়েছেন অনেকে। এবার তাঁদের কাছেই রীতিমতো কড়া বার্তা পাঠাচ্ছেন বিচারপতি। কখনও সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধাকে এরিয়ার সমেত চাকরিজীবনের বেতন পাইয়ে দিয়ে আবার কখনও ক্যান্সার আক্রান্ত শিক্ষিকার সহায় হয়ে মানবিক দৃষ্টান্তও স্থাপন করেছেন তিনি। এক কথায়, বর্তমানে আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীদের কাছে কার্যত “মসিহা” হয়ে উঠেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।