বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: শেষ কয়েকদিনে ধরে কলকাতা হাইকোর্টে এসএসসি সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলাকে কেন্দ্র করে এক বিশ্ৰী ও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তারই মাঝে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে কেন বারবার স্থগিতাদেশ দেওয়া হচ্ছে সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ বহু পুরোনো। বেশ কয়েক বছর ধরে বহু চাকরি প্রার্থী দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে আসছেন। যোগ্য প্রার্থীরা কবে চাকরি পাবে সেই আশায় দিনের পর দিন রাস্তায় বসে থেকেছেন তাঁরা। এরপর সিবিআই তদন্তের নির্দেশ তাঁদের কিছুটা আশা জুগিয়েছিল বলেই দাবি চাকরি প্রার্থীদের। আর তাঁরা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই সিদ্ধান্তকে এবং সম্প্রতি তোলা এই প্রশ্নকে স্বাগত জানিয়েছেন।
অভিজিৎবাবু সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ সংক্রান্ত জটিলতার দেশের প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করার ব্যাপারটিও উল্লেখ করেছিলেন তিনি। প্রসঙ্গত, এসএসসি-র বেশ কয়েকটি মামলায় ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে সিবিআই তদন্ত। তৎকালীন নিয়োগ কমিটির সদস্যদের ডেকে জেরাও করা হচ্ছে। কিন্তু বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় একাধিক মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আইনজীবীদেরই একাংশ। অনেকেই তাদেরকে তৃণমূলপন্থী আইনজীবী বলে চিহ্নিত করেছেন এবং তার যথেষ্ট কারণও আছে। এখন সেই বিতর্কের রেশ ধরে কার্যত রাজনৈতিক ছায়াযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে আদালতে।
সম্প্রতি বিচারপতির এজলাসের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন সেই তৃণমূলপন্থী আইনজীবীরা। সেই নজিরবিহীন বিক্ষোভের পরই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাদের প্রশ্ন করেন এবং জানতে চান, তাঁর ভুলটা কোথায়? তাঁর এজলাসে কী সমস্যা হচ্ছে? তিনি আরও বলেন যে তিনি শুধুমাত্র একটি দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চেয়েছেন, তাতে সমস্যাটা কি! পাশাপাশি অভিজিৎবাবু আরও বলেছেন যে, মাথায় বন্দুক ঠেকালে আমি থামব না। এই প্রশ্নের উত্তরে চন্ডিচরণ দাস আজব দাবি করে বলেন যে ডিভিশন বেঞ্চ নিয়ে কেন প্রশ্ন তোলা হয়েছে, সেটিই তাদের আপত্তির মূল কারণ। তখন অভিজিৎবাবু তাদের বিক্ষোভ না দেখিয়ে সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ করতে বলেন।
এই সমস্ত ঝামেলার মধ্যে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন যে অতিরিক্ত মানুষ যারা মামলার সঙ্গে যুক্ত নন তারা যেন সেই জায়গায় অশান্তি না করে সেখান থেকে বেরিয়ে যান। তবে তাতে সমস্যা কমেনি। তবে অভিজিৎবাবুর ভূমিকায় ভরসা পাচ্ছেন চাকরি প্রার্থীরা। তাদের মধ্যে একজন বলেছেন, “আমরা প্রায়ই বিচার ব্যবস্থার ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলি। তবুও অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো বিচারপতিরা এখনও আছেন বলে আমরা এখনও ভরসা রাখছি। উনাকে সঠিক কাজ করার জন্য কুর্নিশ জানাই।”