‘দুর্নীতির মহাসমুদ্রে আমি হাবুডুবু খাচ্ছি’, কাতর স্বীকারোক্তি বিচার গঙ্গোপাধ্যায়ের

বাংলা হান্ট ডেস্ক : নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তদন্ত করছে সিবিআই (CBI), ইডি’র (ED) মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। প্রকাশ্যে আসছে একের পর চাঞ্চল্যকর তথ্য। দুর্নীতির জাল দেখে অবাক কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Ganguly)। বিচারপতির দাবি, দুর্নীতির মহাসমুদ্রে তিনি রীতিমতো হাবুডুবু খাচ্ছেন। আর সেখান থেকেই মানিক বেছে আনতে হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে প্রাথমিকে নিয়োগের প্যানেল বাতিলের দাবি ওঠে। তবে পুরো প্যানেল বাতিলের আগে যোগ্য প্রার্থীদের কথা ভাবতে হবে বলেও জানান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এরপর মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বিচারপতিকে প্রশ্ন করেন, ‘ন্যায্যদের চিহ্নিত করা যাবে কী করে? উত্তরপত্র তো নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। যদি প্যানেল বাতিল করা হয়, তবে ন্যায্যদের বক্তব্য আলাদাভাবে শুনতে পারে আদালত।’

বিচারপতি এদিন আরও দাবি করেন, ‘এত বেশি অনিয়মের অভিযোগ আসছে। আদালতের কাছে এত তথ্য প্রমাণ আছে যার ভিত্তিতে ২০১৪ সালের টেটের ভিত্তিতে সংগঠিত হওয়া ২০১৬’র নিয়োগ প্রক্রিয়া খারিজ করে দেওয়া যায়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যে এটা করলে কিছু বৈধভাবে চাকরি পাওয়া ব্যক্তিরাও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। একজনও বৈধপ্রার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হলে আমার ভাল লাগবে না। অথচ এখনও এই দুর্নীতিকে ঢাকতে কিছু দালাল বাজার ঘুরে বেড়াচ্ছে।’

Untitled design 83

আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের উদ্দেশে বিচারপতির মন্তব্য, ‘দুর্নীতির সব নদী একই সমুদ্রে গিয়ে মিশেছে। সমুদ্র থেকে মানিক বেছে তুলতে হবে। দুর্নীতির সমুদ্রে আপনারা সাহায্য করার পরেও আমি হাবুডুবু খাচ্ছি। এ তো মহাসমুদ্র। দুর্নীতির মহাসমুদ্র। এই অবস্থায় ঠগ বাছতে তো গাঁ উজাড় হয়ে যাবে। সিবিআই তো কিছুই করছে না। তারা তো জানেও না পিছনের দরজা দিয়ে কোন কাজ হয়েছে।’

শিক্ষা দফতরের ভূমিকা দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি, ‘এই সরকারের শিক্ষাদপ্তর কী করে এই দুর্নীতি দেখেও তাদের চোখ বন্ধ করে রাখল সেটা ভেবে আমি বিস্মিত। শিক্ষাদপ্তরের কেউ কেউ হয়তো হাতে হাত রেখে এই দুর্নীতি করেছিলেন।’ প্যানেল বাতিল প্রসঙ্গে বিচারপতি বলেন, ‘অন্তত ৪২ হাজার ৫০০ জনের এই প্যানেল থাকবে না বাতিল হবে সেবিষয়ে সব পক্ষের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে আদালত।’


Sudipto

সম্পর্কিত খবর