বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বর্তমান দিনে বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Gangopadhyay) নামটা কারও অজানা নয়। রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতি ইস্যু ( Recruitment Scam) নিয়ে বারংবার মুখ খুলেছেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি। বিগত কিছুমাস থেকে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত নানা মামলায় সমস্যায় রীতিমতো জর্জরিত শাসক শিবির। শ্রীঘরেই রয়েছেন হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রী, থেকে শুরু করে শাসক দলের বিধায়ক। এসবের মধ্যেই নিয়োগ সংক্রান্ত ইস্যু নিয়ে আদালতে এক মামলা দায়ের হয় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে।
কি নিয়ে করা হয়েছিল অভিযোগ? আজ থেকে ১৩ বছর আগে ২০০৯ সালে অর্থাৎ তৎকালীন বামফ্রন্টের আমলে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের যে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল, তার পরীক্ষা হয় দীর্ঘ ৩ বছর পর। সেই সময় ক্ষমতায় আসীন ছিল তৃণমূল। তৎকালীন সময়ে নিয়োগ বোর্ডের দায়িত্বে ছিলেন বর্তমান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, সম্প্রতি এই দাবি তুলেছেন কেশপুরের তৃণমূল বিধায়ক শিউলি সাহা। তার দাবি, সেই সময় কীভাবে চাকরি হয়েছে, তা শুভেন্দু খুব ভাল মতোই জানেন। বিধায়িকার এই মন্তব্য ওপর ভড় করেই একটি মামলা হয় হাইকোর্টে। শুক্রবার ছিল সেই মামলার শুনানি দিল হাইকোর্ট।
এদিন মামলকারী পক্ষের আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় আদালতে জানান, সম্প্রতি শিউলি সাহার নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত এক বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে। যেখানে তিনি বলছেন, সেই সময় নিয়োগ বোর্ডে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী, তিনি বেআইনি নিয়োগে মদত দিয়েছেন। তবে শুভেন্দু অধিকারীর ক্ষমতার ভয়ে তারা এতদিন মুখ খুলতে পারেনি।
এই শুনে বিচারপতি মামলাকারীর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন , “১৩ বছর পরে হঠাৎ থার্ড পার্টির একটা ভিডিয়ো এনে মামলা দায়ের করা হল কিসের ভিত্তিতে? যদি বঞ্চিতদের সত্যি কোনও অভিযোগ থাকত তাহলে সেইগুলো নিয়েই তারা আসতে পারতেন হাইকোর্টে। ‘হঠাৎ ভিডিয়ো দেখার পরে তাদের মনে হল যে তাদের বিচার চাই! কোন মতলবে এখন কোর্টে এসেছেন?‘ প্রার্থীরা ২০০৯ সাল থেকে বঞ্চিত। তাহলে এতদিনে শিউলি সাহার ভিডিয়ো পাওয়া গেল বলে অভিযোগ করতে এলেন কেন?’
এরপরই বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সেই মামলা কার্যত খারিজ করে দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি। অন্যদিকে শুভেন্দুর পক্ষে শুনানি যাওয়ার পর রীতিমতো হাত পা ঝেড়ে স্বস্তি পেলেন শিশির পূত্র।