বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বাংলায় কয়েক দশক থেকে জমে থাকা পাহাড় প্রমাণ মামলার একে একে রায় দিচ্ছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Abhijit Ganguly)। এবার তিন বছর আগে জমে থাকা মামলার সুরাহা করলেন বিচারপতি।
ঘটনাটি কলকাতার (Kolkata) মারোয়াড়ি বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা আশা শ্রীবাস্তবের। শিক্ষকতা থেকে তিনি অবসর গ্রহণ করেন ২০২০ সালের ১ অক্টোবর। তারও এক বছর আগে, অর্থাৎ ২০১৯ সালে প্রাপ্য এরিয়ার পাওয়ার জন্য আবেদন করেন তিনি।
শিক্ষিকার সেই প্রাপ্য টাকা আটকে ছিল প্রায় তিন বছর। বারংবার আবেদন করেও মেলেনি কোনো ফল। তিন বছর পর সেই কাজের এক নিমিষে সুরাহা করলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আদালতে কলকাতার ডিস্ট্রিক্ট ইনস্পেক্টর (ডিআই)-কে উদ্দেশ্য করে কার্যত ধমকের সুরে নির্দেশ দিয়ে বললেন, ‘শ্মশান বাদ দিয়ে আর যেখানেই থাকুক সংশ্লিষ্ট ওই সরকারি কর্মচারী, তাকে আদালতে হাজির করুন আজ দুপুর দু’টোর মধ্যে।’
শিক্ষিকার অভিযোগ, তিনি জানান,তার প্রাপ্য টাকার অঙ্ক প্রায় দেড় লক্ষ। যে বছর আবেদন করেন তার পরের বছর অবসর নেন তিনি, তার পরে কেটে যায় আরও দু’বছর। দফতরে দফতরে ঘুরে তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়লেও হয়নি কোনো সুরাহা, পাননি প্রাপ্য টাকা। তিনি আরও জানান, রুরাল ডিপার্টমেন্টের কর্মচারী মহাদেব সোরেন তার টাকা আটকে রেখেছেন। সেই নিয়ে অবশেষে সুবিচারের জন্য কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন শিক্ষিকা।
এদিন সেই মামলায় সরকারি কর্মচারীকে নির্দেশ দিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এই প্রসঙ্গে কলকাতার ডিআই-কেও তিনি ডেকে পাঠান আদালতে। ডিআই এসে এদিন জানান, টাকা পেয়েছেন শিক্ষিকা। অর্থাৎ নির্দেশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কাজ হয়েছে। তারপর ফের বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, “আদালতের নজরে আনার ৬ ঘণ্টার মধ্যেই শিক্ষিকার অবসরকালীন সব টাকা চলে এল কী করে?” এরপরই কার্যত ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিচারপতি। নির্দেশ দেন, অভিযুক্ত যে সরকারি কর্মচারীর কাছে এতদিন ধরে আটকে ছিল টাকা, তাকে আজই আদালতে হাজিরা দিতে হবে। একমাত্র শ্মশান ছাড়া তিনি যেখানেই থাকুন না কেন, হাজিরা আবশ্যিক।
যেমন কথা তেমন কাজ, দু’টোর সময়ে মহাদেব হাজিরা দেন আদালতে। এদিন আদালতে বিচারপতি ওই সরকারি কর্মচারীকে ধমক দিয়ে বলেন, “এই টাকা আগেই দিয়ে দিতে পারতেন ওই সরকারি কর্মচারী। কিন্তু তিনি টেবিলের তলা থেকে টাকা নেওয়ার জন্যই এতদিন ধরে ঘুরিয়েছেন শিক্ষিকাকে। সরকারি সমস্ত সুযোগ-সুবিধা নিয়েও তারা ঘুষ নেওয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন।” এরপর এই বিষয়ে রীতিমতো তদন্ত করে দেখার আশ্বাস দেন বিচারপতি।