বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত বছর থেকে একের পর এক দুর্নীতির মামলায় কড়া রায় দিয়ে গিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly)। রাজ্যের কিছু মানুষের কাছে তিনি হয়ে উঠেছেন ভগবান, আবার একাংশের কাছে তিনি ক্ষোভের পাত্র। বিচারপতির একাধিক মন্তব্যকে নিয়ে রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়াও কম হয়নি। মঙ্গলবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলার এক শুনানিতে সেই বিচারপতিই বললেন, ‘আমি কিছু বলছি না। আমি মুখ খুললেই রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া হয়ে যাবে।’
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার একজোটে ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের (Primary Teachers) চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। ২০১৬ সালের প্যানেল থেকে ৪২ হাজার ৫০০ জন প্রাথমিক শিক্ষকের মধ্যে ৩৬ হাজার স্কুল শিক্ষকের চাকরি বাতিল করে আদালত। পরে অবশ্য সেই সংখ্যায় কিছু ত্রুটি ধরা পড়ে।
এদিন বিচারপতির এজলাসে সেই মামলার শুনানি ছিল। সেখানে নিজের রায় সংশোধন করে বিচারপতি জানিয়েছেন, ৩৬ হাজারের বদলে চাকরি বাতিলের সংখ্যাটা হবে ৩২ হাজার। বিচারপতির এই নির্দেশের বিরোধীতা করে ইতিমধ্যেই ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি চাকরিহারাদের পাশে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
এদিন সেই মামলার শুনানিতে প্যারা টিচারদের উদ্দেশ্য করে বিচারপতি বলেন, ‘যে দালালরা গ্রেফতার হয়েছেন এবং যারা গ্রেফতার হবেন এত কোটি কোটি টাকা কোথায় পেয়েছেন? যারা টাকা নিয়েছেন সেই সব অপরাধীদের বিরুদ্ধে কথা বলুন।’
বিচারপতির সংযোজন, ‘ঝাঁকে ঝাঁকে চাকরি বিক্রি হয়েছে। শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছেন কেউ কেউ। কোর্ট দোষী নয়। আপনারা (প্যারা টিচার) বলুন সেগুলো।’ এদিন প্রশিক্ষিত প্রায় ৪ হাজার শিক্ষক চাকরি নিজেদের চাকরি ফিরে পেলেও প্যারা টিচারদের আবেদনের কোনো সুরাহা হয়নি।
উল্লেখ্য, ২ হাজার ৭৭০ জন প্যারা টিচার আদালতে দাবি করেছিলেন, যেহেতু তাদের পড়ানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে, তাই অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট না দিলেও তাদের চাকরি থাকা উচিৎ। তখনই বিচারপতি বলেন, এ নিয়ে কিছু বলা তার এক্তিয়ারে নেই। বিষয়টি পর্ষদের দেখার। পাশাপাশি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমি কিছু বলছি না। আমি মুখ খুললেই রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া হয়ে যাবে।’
প্রসঙ্গত, এর আগে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সম্পর্কে সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, “উনি বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেসের ভাষায় কথা বলছেন। ওর উচিত আদালত ছেড়ে রাজনীতিতে যোগ দেওয়া।” এরপর বিচারপতির আজকের এই মন্তব্য যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।