কথা নয় এবার অ্যাকশন! নিয়োগ দুর্নীতি মামলা থেকে ED-র সহকারী ডিরেক্টরকে সরিয়ে দিলেন বিচারপতি

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তোলপাড় রাজ্যে। মঙ্গলবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ফের তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) তলব করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। অভিষেকের পাশাপাশি নেতার বাবা অমিত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং লতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও তলব করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সেই নিয়ে শোরগোলের মধ্যেই এবার হাইকোর্টের বড় নির্দেশ।

আগামী ৩ অক্টোবর অভিষেককে সমস্ত নথি নিয়ে সিজিওতে হাজির হতে বলেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। ঘটনাচক্রে ওই দিন কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার বিরুদ্ধে দিল্লিতে তৃণমূলের ধর্ণা কর্মসূচীর দ্বিতীয় দিন। আর সেই গুরুত্বপূর্ণ দিনেই অভিষেককে ডেকে পাঠিয়েছে ইডি। দিল্লি না ইডি, কোথায় যাবেনা অভিষেক! এই নিয়েই কাল থেকে জল্পনা চলছিল।

এরই মধ্যে শুক্রবার সকালে অভিষেক বিবৃতি দিয়ে সাফ জানিয়েছেন, হাজিরায় তিনি যাচ্ছেন না। উপস্থিত থাকবেন দিল্লিতে। আর এইদিনই হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা (Justice Amrita Sinha) জানিয়েছেন, আগামী ৩ অক্টোবরের নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত বা অনুসন্ধান কোনও ভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। শুধু তাই নয়, বিচারপতির নির্দেশ, তদন্তের স্বার্থে যে কোনও পদক্ষেপ নিতে পারবে ইডি।

অন্যদিকে আজ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ইডির (ED) সহকারী ডিরেক্টর মিথিলেশকুমার মিশ্রকে (IO of ED Mithilesh Mishra) সরিয়ে দিলেন বিচারপতি সিনহা। রাজ্যের কোনও মামলায় মিথিলেশকুমার মিশ্রকে নিযুক্ত করা যাবে না। এদিন তাকে সরিয়ে দিয়ে নির্দেশ বিচারপতির।

আরও পড়ুন: ‘STOP ME IF YOU CAN’, এজেন্সিকে চ্যালেঞ্জ AB-র

high court

পাশাপাশি যত দ্রুত সম্ভব নতুন অফিসার নিয়োগ করার জন্য ইডির ডিরেক্টরকে নির্দেশ বিচারপতি সিনহার। আগামী ৩ অক্টোবরের তদন্ত নিয়ে উপযুক্ত অফিসারকে পদক্ষেপ করার নির্দেশ। প্রসঙ্গত, গত সোমবারই লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস (Leaps and Bounds) কাণ্ডে হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার ক্ষোভের মুখে পড়েছিল ইডি।

গত সোমবার বিচারপতি সিনহার প্রশ্নবাণে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এজলাস। তৃণমূল সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার সংস্থার সমস্ত ডিরেক্টরের সম্পত্তির বিবরণ নিয়ে আদালতে জমা দেওয়া কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার রিপোর্ট নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি সিনহা। লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের সম্পত্তির বিবরণ নিয়ে জমা দেওয়া রিপোর্ট দেখে বেশ কিছু সন্দেহ জাগে বিচারপতির।

ভর্ৎসনা করে বিচারপতি বলেন, ‘রিপোর্টে বলছেন অভিষেকের মাত্র ৩টি বিমা, আর কোনও সম্পত্তি বা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই? সাংসদ হিসেবে অভিষেকের বেতন জমা পড়ে কোন অ্যাকাউন্টে?’ ‘এখানে অ্যাকাউন্টের উল্লেখ নেই কেন? আপনারা কি পোস্ট অফিস?’ ইডির ভূমিকায় প্রশ্ন তুলে বিচারপতি বলেন, ‘সন্দেহ হচ্ছে আপনারাই তথ্যগোপন করছেন’।

বিচারপতির প্রশ্ন তোলেন, ‘১৮৮এ, হরিশ মুখার্জি রোড কার নামে, জানেন? এটা সম্পত্তির খতিয়ানে নেই কেন? মেমোরেন্ডাম অফ অ্যাসোসিয়েশন থেকে ৩০বি, হরিশ চ্য়াটার্জি স্ট্রিটের উল্লেখ। কেন সেসব তথ্যের উল্লেখ নেই এখানে?’ হাইকোর্টে বিচারপতি ভর্ৎসনার চার দিনের মধ্যেই, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেকে পাঠিয়েছে ইডি। তবে এরই মধ্যে ইডির সহকারী ডিরেক্টরকে সরিয়ে দিলেন বিচারপতি।


Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর