বাংলা হান্ট ডেস্কঃ স্কুল আছে শিক্ষক রয়েছে তবে পড়ুয়া সংখ্যা কম বা নেই বললেই চলে, এবার রাজ্যের এমন স্কুল গুলির জন্য কড়া বার্তা দিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু (Justice Biswajeet Basu)। প্রসঙ্গত, বর্তমানে শিক্ষক সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি মামলা চলছে হাইকোর্টে (High Court)। শুক্রবার শিক্ষক বদলি সংক্রান্ত এক মামলার শুনানি চলছিল। এদিনই রাজ্যের শিক্ষা দফতরকে প্রয়োজনের তুলনায় অধিক শিক্ষক রয়েছে এমন স্কুল গুলির অনুমোদন প্রত্যাহারের পরামর্শ দিলেন বিচারপতি।
এদিন শিক্ষক বদলি সংক্রান্ত এক মামলার শুনানিতে প্রথমে হাওড়ার রাসপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রসঙ্গ উঠে আসে। সেই স্কুলে পড়ুয়া সংখ্যা যেখানে ৫৫০, সেখানে তাদের বিদ্যাদানের জন্য শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ৮ জন। এই ঘটনা শুনেই হাওড়ার অন্য এক স্কুলের প্রসঙ্গ তুলে আনেন বিচারপতি। বলেন, ‘ওই জেলার অন্য একটি স্কুলে পড়ুয়া রয়েছে মাত্র ১৩ জন, আর তাদের পড়ানোর জন্য শিক্ষক রয়েছেন ৫ জন! এমন কেন হবে?’
এরপরেই বিচারপতি, যেসকল স্কুলে পড়ুয়া নেই বললেই চলে, সেখানের অনুমোদন বাতিল করে যেই স্কুল গুলিতে শিক্ষকের প্রয়োজন রয়েছে সেগুলিতে শিক্ষক প্রেরণের পরামর্শ দেন রাজ্যের শিক্ষা দফতরকে। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, পড়ুয়া কম থাকা সত্ত্বেও সেসব স্কুলে শিক্ষক পুষে রেখে কোনো লাভ নেই। তবে বিচারপতির এই মন্তব্য শুনে শিক্ষা দফতরের আইনজীবী আদালতে বলেন, হঠাৎ এমন পদক্ষেপ করলে সমস্যা হতে পারে। পাশাপাশি রাজনৈতিক চাপেরও একটা সমস্যা রয়েই যাচ্ছে।
এই শুনে ফের বিচারপতি বলেন, ‘এভাবে চলতে পারে না। স্কুলের হাল ফেরাতে হবে। আমরা কেন মডেল স্কুলের আশা করতে পারি না?’ শুধু তাই নয়, এরপর ভরা এজলাসে কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে বিচারপতি বলেন, ‘বদলি নিয়ম ঠিকভাবে পালন না হলে পরের মাস থেকে বেতন বন্ধ করে দেব। শিক্ষক নয়, পড়ুয়াদের কথা চিন্তা করা উচিত।’
অন্যদিকে, হাওড়ার রাসপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকের অভাবের পাশাপাশি নিরাপত্তারক্ষীর প্রয়োজনীয়তার প্রসঙ্গও উঠে আসে। এই নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে বিচারপতি বলেন, ‘মেয়েদের একটি স্কুলে শিক্ষক, ওয়াশরুম, নিরাপত্তাকর্মী নেই। এরপরও চুপ করে থাকতে হবে।’ তার নির্দেশ,আইনে না থাকলেও হাওড়ার রসপুর স্কুলে নিরাপত্তা কর্মী দিতে প্রদান করতে হবে। এই নিয়ে হাওড়ার কমিশনারকে ওই স্কুলে সিভিক ভলান্টিয়ার প্রেরণ করার নির্দেশও দেন বিচারপতি।