বাংলাহান্ট ডেস্ক: ফুসফুসে সংক্রমণ নিয়ে বিগত কিছুদিন ধরে শহরের এক বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (Buddhadeb Bhattacharya)। বর্তমানে অনেকটাই সুস্থ তিনি। বুদ্ধবাবু অসুস্থ হওয়ার পর থেকেই রাজনীতির রঙ ভুলে তার আরোগ্য কামনায় বিভিন্ন নেতা-নেত্রী থেকে শুরু করে গোটা বাংলা। তবে ব্যতিক্রমী কেবল কবির সুমন। সম্প্রতি সঙ্গীতশিল্পী কবীর সুমনের (Kabir Suman) লেখা এক কবিতা সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলে ঝড়।
‘ধনঞ্জয়ের গান’ শিরোনামে ফেসবুকে তিনটি পদ্য পোস্ট করেছেন কবির সুমন। দুদিন আগে ২ অগাস্ট পোস্ট হওয়া ধনঞ্জয়ের গান ১ শীর্ষক কবিতায় তিনি লিখেছেন,
নার্সিংহোমে রাত
ধনঞ্জয়ের হাতেই
তোমার হাত
ভোর হবে রাত
প্রৌঢ় ফাঁসুড়ে জানে
গান স্যালুটের
সরকারি সম্মানে
কবিতার ছত্রে ছত্রে একের পর এক বিষ্ফোরণ ঘটিয়েছেন কবীর সুমন। কারোর নাম উল্লেখ না করলেও সুমনের ইঙ্গিত অসুস্থ বুদ্ধদেবের দিকে বলেই মত অধিকাংশর। নেটিজেনদের মত কবিতায় ‘প্রৌঢ় ফাঁসুড়ে’ বলতে কবীর সুমন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকেই নিশানা করেছেন।
সুমনের ‘ধনঞ্জয়ের গান’ নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় নেট দুনিয়ায়। তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। সত্যিই এই কবিতা বুদ্ধদেবকে নিয়েই লেখা? এই নিয়ে এক বেসরকারি সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খোলেন কবির সুমন। তিনি জানান,’আমার কাজ আমি করছি। আমি তো পদ্যও লিখি, সেটাই লিখেছি। যা বলতে চাই, ওখানেই বলে দিয়েছি। ভালো করে পদ্যটা পড়লেই সব বোঝা যাবে।’ তার সোজা কথা, ‘প্রৌঢ় ফাঁসুড়ে’ বলতে তিনি যাকে বোঝাতে চেয়েছেন তা পদ্যেই স্পষ্ট।
কবিতার ধনঞ্জয় নাম শুনতেই সকলের মনে পড়ে সেই আদালত স্বীকৃত ‘অপরাধী’ ছেলের কথা যে এক নাবালিকা খুন ও ধর্ষণে অভিযুক্ত ছিল। বুদ্ধদেবের শাসনকালে ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের ফাঁসি কলঙ্কের দাগ হয়ে রয়ে গিয়েছে। সেই ধনঞ্জয়ই এখনও পর্যন্ত বাংলার শেষ ব্যক্তি যাঁকে ফাঁসিকাঠে ঝোলানো হয়েছে।
কবিতায় সেই ২০০৪ সালে ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের ফাঁসির আগের রাতের কথা স্মরণ করিয়ে একটি জায়গায় সুমন লিখেছেন, ‘নার্সিং হোম ফাঁসির মঞ্চ নয়, গান স্যালুটের বুঝি বা সময় হয়’। এর থেকেই আরও স্পষ্টমত তিনি বুঝিয়ে দেন যে নামজাদা ব্যক্তিত্বদের গান স্যালুট কখন দেওয়া হয়। কবির সুমনের গোটা এই কবিতার প্ৰতিটি অক্ষরে যে অসুস্থ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে টার্গেট করা হয়েছে তেমনটাই মনে করছেন নেটিজেনরা।