কল রেকর্ডের অনুমতি নেননি সাংবাদিক! ধর্মের ভেদাভেদ উস্কে আবারও বিস্ফোরক কবীর সুমন

বাংলাহান্ট ডেস্ক : সাংবাদিককে গালাগালি ইস্যুতে গায়ক কবীর সুমনের বিরুদ্ধে তোলপাড় রাজ্য জুড়ে। ইতিমধ্যেই এই বিতর্কের জল গড়িয়েছে থানা পুলিশ অবধিও। কিন্তু একবার ক্ষমা চেয়ে ‘চুপ থাকার চেষ্টা করব’ বলার পরও কিছুতেই যেন চুপ করার নাম নিচ্ছেন না কবীর সুমন। এবার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অনুমতি ছাড়াই ফোন কলটি রেকর্ড করার অভিযোগ আনলেন তিনি।

দিন কয়েক আগে ভাইরাল হয় কবীর সুমনের গলায় একটি কল রেকর্ডিং এর অডিও ক্লিপ। তাতে অকথ্য এবং অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে শোনা যায় শিল্পীকে। তারপরই তোলপাড় পড়ে যায় রাজ্য জুড়ে। এই ইস্যুতে তাঁর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ অবধি দায়ের করে বিজেপি। অবশেষে চাপে পড়ে একবার ক্ষমা চাইতে বাধ্য হলেও রণভূমি ছাড়তে কিছুতেই রাজি নন কবীর সুমন। এবার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ফেসবুক পোস্ট করে আবারও তিনি প্রমাণ করলেন এই কথাই।

এদিন ফেসবুকে তিনি লেখেন, ‘একটি বিশেষ চ্যানেলের এক প্রতিনিধি যখন আমায় ফোন করেন তখন তিনি কিন্তু আমাদের দুজনের কথাবার্তা রেকর্ড করার কথা বলেননি। আমার অনুমতি নেননি।….. লুকিয়ে রেকর্ড করা একটি অডিও ক্লিপ অনেকে শুনেছেন। শুনে যাঁরা দুঃখ পেয়েছেন, আঘাত পেয়েছেন তাঁদের কাছে এই অধম ক্ষমাপ্রার্থী’।

এখানেই অবশ্য শেষ নয়। তিনি আরও লেখেন, ‘যে চ্যানেল ও দল দীর্ঘকাল ধরে আমাদের দেশের মুসলমানদের আক্রমণ ও অপমান করে চলেছে, যে দলের কোনো কোনো নেতাকে বলতে শোনা গিয়েছে অমুক সম্প্রদায়ের মৃত মহিলাদের কবর থেকে তুলে…ইত্যাদি ইত্যাদি, তাদের গালাগাল দেওয়ার অধিকার আমার নেই। যে দলের একজন নেতা, বর্তমানে বিধায়ক, মুখ্যমন্ত্রীকে, যিনি একজন মহিলা, সমানে ‘বেগম’ বলে যান, নন্দীগ্রামকে যিনি ‘মিনি পাকিস্তান’ বলেন তাঁর দলকে মুখের কথায় আক্রমণ করতে পারব না আমি? তখন বিরোধীকে বলে দিতে হবে। আমাদের সংখ্যালঘুদের যারা যুগ যুগ ধরে কাটুয়া, নেড়ে বলে চলেছে তাদের আছে তা বলার অধিকার। কারণ? বিরোধী? মানে মুসলমানদের বিরোধী? এদিকে আমিও তো বিজেপি আরএসএসের বিরোধী, আমার বেলা কী হবে? বিজেপি আরএসএসের করা কটুক্তি তাহলে অনুমোদন যোগ্য। আর আমি কটুক্তি করলে গোঁসা, মুন্ডপাত। এই তো?’ একই সঙ্গে তিনি প্রশ্ন তোলেন, তাঁর বক্তব্যের জন্য তো তিনি ক্ষমা চেয়েছেন, কিন্তু যাঁরা অন্য সম্প্রদায়ের মহিলাদের কবর থেকে তুলে ইত্যাদি ইত্যাদি করতে বলেন তাঁরা ক্ষমা চাইবেন কী না!

নিজের গালিগালাজের সাফাইও দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘যদি কেউ আমায় শুয়োরের বাচ্চা বলে, সেটা স্রেফ রাগের কথা। সেও জানে আমার বাবা মা শুয়োর নয়। তেমনই মা তুলে গালাগাল খুবই গর্হিত। কিন্তু তার মধ্যে কারও মায়ের সঙ্গে বাস্তবিক শয়ন করার অভিলাষ থাকে না। থাকে স্রেফ গাল পাড়ার অভিপ্রায়। কিন্তু সেটা গর্হিত। তবে, অমুক সম্প্রদায়ের পুরুষদের কথা বলতে গেলেই তাঁদের সুন্নতের বিষয়টি ঘোষণা করা বা তাঁদের মহিলাদের ইত্যাদি ইত্যাদি করার ডাক দেওয়ার মধ্যেই শিষ্টাচারের মঙ্গলশঙখ বেজে উঠছে কি? যাই হোক। উত্তেজনা বাড়ানো নয়, প্রশমন। তাই দোষ কবুল।’

তাঁর এই বক্তব্য আরও একবার সমালোচনার ঝড় তুলেছে স্যোশাল মিডিয়ায়। অনেকেরই দাবি বুড়ো বয়সে ভীমরতি হয়েছে শিল্পীর। তবে ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে করা অভিযোগকে খুব একটা আমল দিতে চাইছেন না ওয়াকিবহাল মহল। তাঁদের দাবি, সাংবাদিককে কোনো কিছু বলতেই দেননি কবীর সুমন। তাই তাঁর বিরুদ্ধে অনুমতি না নেওয়ার অভিযোগ আনা অযৌক্তিক ছাড়া আর কিছুই নয়।

Avatar
Katha Bhattacharyya

সম্পর্কিত খবর