বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) শিক্ষক দুর্নীতি মামলায় বহুদিন ধরে শিরোনামে রয়েছেন কালীঘাটের কাকু (Kalighater Kaku) ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। ডিসেম্বরের শুরুর দিকে এই মামলায় ইডির তরফে শর্তসাপেক্ষ জামিন মিললেও বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় আরও এক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। নিয়োগ দুর্নীতি কান্ডে ইডির মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট কাকুকে জামিন দিলেও ওই দিনই তাকে হেফাজতে চেয়ে নিম্ন আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল সিবিআই।
‘কালীঘাটের কাকু’কে (Kalighater Kaku) ছাড়াই ফাইনালে কেকেআর!
বারবার নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও মোট পাঁচবার আদালতে হাজিরা এড়িয়েছিলেন কাকু (Kalighater Kaku)। এক্ষেত্রে প্রত্যেকবারই তুলে ধরা হয়েছিল তার অসুস্থতার কারণ। তবে শেষরক্ষা হল না। অবশেষে চলতি সপ্তাহে হাসপাতাল থেকেই ভার্চুয়ালি হাজিরা দিয়েছিলেন কাকু। ওইদিন বিচার ভবনে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসারেরা তাকে হেফাজতে নেওয়ার নথি পেশ করেন। অবশেষে অনেক ধরপাকড়ের পর মঙ্গলবারই কাকুকে হেফাজতে নিয়েছে সিবিআই।
মঙ্গলবার বিচার ভবনের বিচারক কাকুর চার দিনের সিবিআই হেফাজত মঞ্জুর করেছেন। তারপরে তাকে রাতেই জেল থেকে বার করে নিয়ে যাওয়া হয় কেন্দ্রীয় সরকারি হাসপাতালে। সেখানে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর রাত-আড়াইটা নাগাদ তাকে নিয়ে আসা হয় নিজাম প্যালেসে। তবে প্রেসিডেন্সি জেলের মধ্যেই এহেন কাকুর (Kalighater Kaku) রয়েছে এক আলাদাই জগৎ।
সেখানে তিনি ধরা দেন একেবারে অন্য অবতারে। তাও আবার যে সে ভূমিকা নয়, একেবারে ক্রিকেট ক্যাপ্টেন। যদিও বিগত কয়েকদিন ধরেই শারীরিক অসুস্থতার কারণে ময়দানে নামতে পারেননি তিনি। কাকতালীয়ভাবে মঙ্গলবার কাকুর (Kalighater Kaku) সিবিআই হেফাজতের দিনেই বিপক্ষকে চার উইকেটে হারিয়ে লীগের ফাইনালে উঠেছে তার দল।
আরও পড়ুন: RG Kar কান্ডের পর একাই একশো শান্তনু! সবাইকে গোহারা হারিয়ে বিরাট কামব্যাক
নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় ২০২৩ সালের মে মাসে কালীঘাটের কাকুকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। সেই থেকে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে তিনি প্রেসিডেন্সি জেলে রয়েছেন। ওই জেলের সংশোধনাগার আবাসিকদের নিয়ে প্রত্যেক বছর শীতকালে একটি ক্রিকেট লিগের আয়োজন করে জেল কর্তৃপক্ষ। আইপিএল-এর অনুকরণেই এর নামকরণ করা হয়েছে পি পি এল অর্থাৎ প্রেসিডেন্সি প্রিমিয়ার লিগ। শুধু তাই নয় আইপিএলের অনুকরণে অংশগ্রহণকারীদের দলেরও নাম রাখা হয়েছে।
তাই কালীঘাটের কাকুর দল অর্থাৎ কলকাতার ক্রিকেট টিমের নাম কেকেআর। তবে শুধু জেলেই নয়, সূত্রের খবর ইডির মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার আগেও বরাবরই খেলাধুলার প্রতি ঝোঁক ছিল সুজয়কৃষ্ণের। ২২ গজের প্রতি তার আগ্রহ এবং দক্ষতার কথা বিবেচনা করেই প্রেসিডেন্সি জেলে ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নির্বাচন করা হয় কাকুকে। সূত্রের খবর, গ্রেপ্তার হওয়ার আগে বেহালার বাড়িতে থাকাকালীন তাকে কখনও ক্রিকেট খেলতে দেখা গিয়েছে, আবার কখনও পাড়ার ক্লাবে তাস কিংবা ক্যারাম খেলতে দেখা গিয়েছে কাকুকে। তবে কালীঘাটের কাকু অসুস্থ হওয়ার পর বর্তমানে জেলে তার ক্রিকেট দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন কাদের খান। যিনি পার্ক স্ট্রিটের ধর্ষণকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত।