বাংলা হান্ট ডেস্কঃ উন্নাও ধর্ষণকাণ্ড এরপর এনকাউন্টার এখনো দগদগে ঘায়ের মতো জ্বলছে ভারতের ধর্ষণকাণ্ডের এক লজ্জাজনক ইতিহাসে। তার মাঝে ভারতের এমন এক রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ। তারই একটা প্রান্তিক জেলা উত্তর দিনাজপুর। সেখানকার এক শহর কালিয়াগঞ্জ। আর এখানেই ঘটে গেল এমন এক গণধর্ষণ কাণ্ড যা শুনলে শিহরণ জাগায় চেতনাসম্পন্ন মানুষের মনে। কিন্তু এই অভিযোগ হয়তো বাস্তবে এমন কিছু পাশবিক রূপ দেখে দিয়ে গেল যা বর্ষবরণের রাতে মানুষ ভুলতে পারবেনা। কিন্তু এর প্রকৃত শাস্তি কি খুঁজতে খুঁজতে অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছে। আজও হয়তো খোঁজা হয়নি।
আজও হয়তো সেই পাশবিক নির্মম অত্যাচারের শাস্তির আইন এর দরজাতে কড়া নাড়তে হয়। কালিয়াগঞ্জ বর্ষবরণের রাতে দেখল এমনই এক নারকীয় ঘটনা।পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কালিয়াগঞ্জের একটি প্রান্তিক গ্রামের এক হোটেলে রান্নার কাজ করেন ওই তরুণী। পাশেই তাঁর মা ফুটপাথে লটারির টিকিট বিক্রি করেন। নির্যাতিতা তরুণীর স্বামী ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। তাই দুই ভাইবোনকে নিয়ে ওই অভিযোগকারিণী তাঁর মায়ের কাছে থাকেন।
গত ৩১ ডিসেম্বর রাতে হোটেল থেকে কাজ সেরে একা বাড়ি ফিরছিলেন বছর সাতাশের ওই তরুণী। কিন্তু কে যানে মাঝপথে কার ভাগ্যে লেখা আছে এমন এক কাহিনী যা তার জীবনের সব কিছুকে ঝড়ের বেগে এলোমেলো করে দিয়ে চলে যাবে। মাঝপথে তাঁর পরিচিত দুই যুবক জানায়, তাঁর স্বামী এসেছে। পাশেই একটি জায়গায় পিকনিক করছে। তরুণীকে স্বামীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার নাম করে ওই দুই যুবক মোটরবাইকে উঠিয়ে একটি নির্জন স্থানে ফাঁকা জমিতে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁকে জোর করে মদ্যপান করিয়ে তাঁর উপর একাধিকবার পাশবিক অত্যাচার চালায় বলে অভিযোগ। কিন্তু এই ঘটনার শেষ হতে না হতেই পুনরাবৃত্তি ঘটে আবার সেই ঘটনার। দুই যুবক যখন অত্যাচার চালাচ্ছে, নিজের বাড়ির জানলা দিয়ে সেটা দেখতে পায় এক যুবক। অভিযুক্ত ওই দুই যুবক পালিয়ে যেতেই ধর্ষিতা চিৎকার করেন। তা শুনতে পেয়ে উদ্ধার করার নাম করে ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধারকর্তা সেই যুবকও তাঁকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ।
এদিকে গভীর রাতে এমন ঘটনার কথা হয়তো স্বপ্নেও কারমা কল্পণা করতে পারেনি হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকে তার মেয়েকে।রাত হয়ে গেলেও বড় মেয়ে নির্দিষ্ট সময়ে বাড়ি না-ফেরায় তাঁর মা খুঁজতে বের হন। প্রথমে তিনি কালিয়াগঞ্জ শহরে হোটেল মালিকের বাড়িতে গিয়ে মেয়ের নিখোঁজের কথা জানান। এরপর হোটেল মালিককে সঙ্গে নিয়ে মেয়ের খোঁজ শুরু করেন। অবশেষে তার মেয়েকে যখন তিনি খুঁজে পান তখন হয়তো তার শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আর নিজের বলতে কিছু নেই তা রূপ নিয়েছে এক নির্যাতিতার শরীর রূপে।
এই ঘটনার যুক্ত থাকার অভিযোগে বুধবার রাতেই শিবু বর্মণ ও নকুল মোহন্তকে গ্রেপ্তার করেছে কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ। অন্য আরও এক অভিযুক্ত সুজন বর্মণ এখনও পলাতক।