বাংলাহান্ট ডেস্ক : সময়ের বহু আগেই পৃথিবীর আলো দেখেছিল সে। চিকিৎসকদের দিকে ছুঁড়ে দিয়েছিল এক কঠিন চ্যালেঞ্জ। কিন্তু ওই যে কথায় বলে রাখে হরি মারে কে! কিন্তু নাহ, হরি নয়, তাকে ‘রাখলেন’ চিকিৎসক এবং নার্সরাই। সঙ্গ দিল আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান। শেষ মেষ জন্মের প্রায় ৪ মাস পর হাসপাতাল থেকে প্রথম বারের জন্য বাড়ি গেল একরত্তি।
গর্ভাবস্থার মাত্র ২৬ সপ্তাহের মাথাতেই জন্ম হয় কালনার এই একরত্তি শিশু কন্যাটির। আজকাল চিকিৎসা শাস্ত্র অত্যন্ত উন্নত হলেও ২৬ সপ্তাহের খুদেকে কীভাবে বাঁচাবেন তা নিয়ে রীতিমতো মাথায় হাত পড়েছিল চিকিৎসকদের। সমস্যার সেই তো হবে শুরু। মাত্র ৭১৫ গ্রাম ওজন নিয়েই জন্মেছিল শিশুটি। কিন্তু জন্মের পরই তা কমতে কমতে হয়ে দাঁড়ায় ৫৫০ গ্রাম। ৫৫০ গ্রামের শিশুকে আক্ষরিক অর্থেই ‘পৃথিবীর আলো দেখানো’ বলতে অসম্ভব একটি কাজ। কিন্তু সেই অসাধ্যই করে দেখালেন কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
গত বছর ১৮ নভেম্বর, ২৬ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি হন কালনারই নান্দাই দুপসা গ্রামের বাসিন্দা রিনা মণ্ডল। শারীরিক ভাবে তিনি অত্যন্ত অসুস্থ থাকায় প্রাণ বাঁচাতে তৎক্ষনাৎ প্রসবের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। বহু জটিলতা সত্ত্বেও এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন রিনাদেবী। জন্মের সময় বেঁচে গেলেও সদ্যজাতর বাঁচার সম্ভাবনা একপ্রকার ছিলই না। কিন্তু হাল ছাড়তে রাজি ছিলেন না চিকিৎসক এবং নার্সরা।
দীর্ঘ তিন মাস ২৬ দিন যাবৎ শিশুকন্যাটিকে রাখা হয় এসএনসিইউতে। সেখানেই চিকিৎসা চলে তার। প্রায় ৪ মাস ধরে অক্লান্ত চেষ্টায় ৫৫০ গ্রাম থেকে শিশুটির ওজন বেড়ে হয় ১ কেজি ৬৪০ গ্রাম। অবশেষে সোমবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে প্রথমবারের জন্য বাড়ি গেল খুদে। বাড়ি ফেরার সময় হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে একটি নতুন জামা এবং একটি মেহগনি গাছ উপহার দেওয়া হয়েছে। বাড়ি ফেরার পথে হাসপাতালের সুপারকে বারবার আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন শিশুটির পরিবারের সদস্যরা।
‘ভারত আজ পর্যন্ত অলিম্পিকে সোনা পায়নি …’ ভরা মঞ্চে বেফাঁস মমতা