‘আমরা গাধা নই, এরা কেউ রামকৃষ্ণ বা বিবেকানন্দ নন’! ভরা এজলাসে বিস্ফোরক কল্যাণ

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বুধবার, অক্ষয় তৃতীয়ার দিন দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের (Jagannath Temple) উদ্বোধন হবে। সোমবারই সৈকত শহরে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মন্দির চত্বর ঘুরে দেখেন তিনি। ইতিমধ্যেই সেখানে শুরু হয়েছে নানান যজ্ঞ। আগামীকাল মন্দিরের উদ্বোধন। সেদিনই আবার কাঁথিতে সনাতনী ধর্ম সম্মলনের আয়োজন করতে চায় একটি সংগঠন। এই নিয়ে পুলিশি অনুমতি না মেলায় কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হয়েছে তারা। এবার সেই মামলাতেই জোরালো সওয়াল করলেন রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।

‘আমরা গাধা নই’! বিস্ফোরক কল্যাণ- (Calcutta High Court)

এদিন মামলাকারীর আইনজীবী উচ্চ আদালতে জানান, ওই সম্মেলনের জন্য স্থানীয় ক্লাবের তরফ থেকে বায়ো টয়লেট প্রদান করা হচ্ছে। এক লক্ষ জলের প্যাকেটের বন্দোবস্তও করা হয়েছে। একইসঙ্গে তিনি জানান, এই সম্মেলনে ৫০,০০০ লোক আসবেন না। পাল্টা একগুচ্ছ সওয়াল করেন অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত। অক্ষয় তৃতীয়ার দিনটিকেই কেন বেছে নেওয়া হল? এই দিনটি কয়েক শতাব্দী পর আসেনি অথবা ফের কয়েক শতাব্দী পরেও আসবে না। তাহলে এই দিনটিই কেন?

এজির (Advocate General) আরও প্রশ্ন, চার, পাঁচজন লোক মিলে এত বড় কর্মসূচি করতে পারেন? এটা কি বিশ্বাসযোগ্য? ৫০টি বায়ো টয়লেট বসানোর টাকা, মেডিক্যাল ক্যাম্পের টাকা কে দেবে? কোনও হিসেব দেওয়া রয়েছে? প্রশ্ন তোলেন তিনি। সেই সঙ্গেই দাবি করেন, কেউ আড়াল থেকে এই কর্মসূচি করতে চাইছে।

আরও পড়ুনঃ এত ছুটি! মে মাসে কোন কোন দিন বন্ধ থাকবে স্কুল, অফিস-কাছারি? রইল সরকারি হলিডে লিস্ট

রাজ্যের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও (Kalyan Banerjee) এদিন হাইকোর্টে জোরালো সওয়াল করেন। তিনি বলেন, ’৫০,০০০ লোক আসতে হলে ১০০০ বাস দরকার হবে। ১০,০০০-১৫,০০০ টোটো লাগবে। ৫০,০০০ লোক কীভাবে যাবেন? স্পেশ্যাল ট্রেনও বাতিল হয়েছে। আমরা গাধা নই যে এটা মেনে নেব কলকাতা থেকে পায়ে হেঁটে লোক কাঁথি যাবে’।

রাজ্যের (Government of West Bengal) আইনজীবী এদিন বলেন, অক্ষয় তৃতীয়ার দিন শুধুমাত্র জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনই নয়, নাচিন্দা মন্দিরেও শীতলা পুজো রয়েছে। সেখানেও প্রায় ১ লক্ষ লোক হওয়ার কথা। তাই পুলিশ মোতায়েনের ক্ষেত্রে অসুবিধা হবে বলে জানান তিনি। সনাতনীদের সভার বিষয়ে কেন পুলিশি অনুমতি দেওয়া হয়নি সেটাও জানিয়েছেন আইনজীবী।

Calcutta High Court

কল্যাণ বলেন, ‘এই মামলাকারীরা কারা? এরা কেউ রামকৃষ্ণ অথবা স্বামী বিবেকানন্দ অথবা শঙ্করাচার্য নন যে ডাকলেই লোক আসবে। টাকা কে জোগাচ্ছে? কত খরচ?’ তিনি বলেন, জলের পাউচ নয়, এর জন্য জলের ট্যাঙ্ক লাগে। তবে সব জলের ট্যাঙ্ক তো জগন্নাথ মন্দির ও নাচিন্দা মন্দিরে সেদিন থাকবে।

কল্যাণ প্রশ্ন করেন, এই কর্মসূচি এক সপ্তাহ পর অথবা রবীন্দ্রজয়ন্তীতে করলে কী সমস্যা? অন্যদিন এই কর্মসূচি হলে অনুমতি দিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। আইনজীবীর কথায়, ‘বদলা নেওয়ার মানসিকতা ছেড়ে অন্যদিন অনুষ্ঠান করুন’।

সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) এই মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। উভয় পক্ষই এজলাসে দাঁড়িয়ে জোরালো সওয়াল করেছে। তবে এখনও রায়দান হয়নি। সনাতনীদের সভা সংক্রান্ত এই মামলায় রায়দান স্থগিত রেখেছে আদালত।

Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পড়াকালীন সাংবাদিকতা শুরু। বিগত ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত। রাজনীতি থেকে বিনোদন, ভাইরাল থেকে ভ্রমণ, সব ধরণের লেখাতেই সমান সাবলীল।

X