বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বছর ঘুরলে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে চরমে তৃণমূল (Trinamool Congress) সংসদীয় দলের অন্দরের কোন্দল। শিরোনামে বর্ষীয়ান সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের বেশ কিছু নেতা ও এক নেত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন কল্যাণবাবু (Kalyan Banerjee)। প্রথম দুজনের নাম নিজ মুখেই বলেছেন তিনি। তবে তৃতীয় জনের নাম উচ্চারণ পর্যন্ত করেননি। তবে প্রবীণ সাংসদের কথায়, ইঙ্গিতে আর কিছুই বুঝতে বাকি নেই কারও।
কল্যাণের অভিযোগের তীরে সাংসদ | Kalyan Banerjee
ইস্যু ভূতুড়ে ভোটার। সেই নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত। এই ভূতুড়ে ভোটার ইস্যুতে অ্যাক্টিভ হয়েছেন খোদ দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের শীর্ষস্তরের নির্দেশ মিলতেই ময়দানে নেমেছেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণও। নেত্রীর নির্দেশ বলে কথা। তাছাড়া সর্বদাই যে কোনো ইস্যুতে দলের হয়ে বিরোধীদের চাচাছোলা ভাষায় বিধঁতে বিন্দুমাত্র সময় ব্যয় করেন না কল্যাণ।
সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনে ভূতুড়ে ভোটার ইস্যুতে স্মারকলিপি জমা দিয়েছিল তৃণমূল। তবে তাতে মহুয়া মৈত্রর নাম ছিল না। সূত্রের খবর, এই নিয়েই কল্যাণ এবং মহুয়ার মধ্যে তুমুল বচসা শুরু হয়। তাও আবার কমিশনের অফিসের সামনেই। দুই সাংসদে মধ্যে কথা কাটাকাটি হতে নিরাপত্তা কর্মীদের উদ্দেশে নাকি মহুয়া বলতে শুরু করেন, আমাকে হেনস্থা করা হচ্ছে, ওঁকে গ্রেফতার করুন। শুধুমাত্র এই কারণে কাউকে গ্রেফতার? এই নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
এই নিয়ে মঙ্গলবার রীতিমতো বিস্ফোরণ ঘটান কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ”সংসদে শুধু নরেন্দ্র মোদী এবং আদানির বিরুদ্ধে কথা বলেন ওই মহিলা সাংসদ। আর কারও বিরুদ্ধে কিছু নেই। আর আমি দলের হয়ে সব ক্ষেত্রে লড়াই করি। সাধারণ মানুষের স্বার্থে কথা বলি।” সাংসদের হুঁশিয়ারি এমন অসভ্যতা সহ্য করব না।” যদিও একটি বারের জন্যও কারও নাম মুখে আনেন নি কল্যাণ। তবে গোটা ঘটনায় যে তিনি ডিসটার্ব, তা বোঝা গিয়েছে।
সংসদের অভিযোগ, তাঁর মেয়েকে নিয়েও নাকি মন্তব্য করেছেন ‘মহিলা সাংসদ’। কটূক্তি করা হয়েছে তাকেও। এতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি। বলেন, মহিলা সাংসদ বলে পুরুষদের অপমান করে যাবেন, এমন অধিকার তাঁকে কেউ দেয়নি। শুধু সুন্দরী হলে আর ইংরেজিতে ফটর ফটর করে গেলেই কাউকে অপমানের অধিকার জন্মায় না। এদিন সৌগত রায়কেও চরম আক্রমণ করেন কল্যাণ।
আরও পড়ুন: রাজ্যের মহিলাদের সোনায়-সোহাগা! অ্যাকাউন্টে ঢুকবে কড়কড়ে ২১০০ টাকা, কারা পাবেন সুবিধা?
তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘দিদি বললে ইস্তফা দেব, কিন্তু কোনও অসভ্যতা সহ্য করব না।’ ৪০ বছর ধরে রাজনীতি করছেন। প্রবীণ এই সাংসদ আজ যা যা অভিযোগ তুলেছেন কি একেবারেই ভুল? এই প্রশ্নই এখন রাজনৈতিক মহল, এমনকি তৃণমূলের অন্দরেও ঘোরাঘুরি করছে। সংসদে কল্যাণ বলতেই বিজেপির বিরুদ্ধে জোড়ালো আওয়াজ। যে কোনো ইস্যুতে দলের প্রথম সারিতে থেকে যিনি বিরোধীদের থেকে দলকে ‘প্রটেক্ট’ করেন তার এই গুরুতর অভিযোগের পর কি এবার খোদ তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব কোনো অ্যাকশন নেবে ওই ‘মহিলা সাংসদের ‘ বিরুদ্ধে? এই নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। বাকিটা কি হয় তা বলবে সময়।