সংসার খরচ মাসিক ১২০০ টাকা, মদের দোকানের সামনে ঠান্ডা পানীয়ও বিক্রি করেছেন আজকের বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক

বাংলাহান্ট ডেস্ক: কাঞ্চন মল্লিককে (Kanchan Mullick) নিয়ে এখন যতই বিতর্ক হোক না কেন, তাঁর অভিনয় দক্ষতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করার সাহস কারোরই নেই। বাংলা বিনোদন ইন্ডাস্ট্রির পুরনো সদস‍্যদের মধ‍্যে অন‍্যতম তিনি। এক সময়ে বিভিন্ন শোয়ের সঞ্চালনাও করেছেন‌। ‘জনতা এক্সপ্রেস’ এর ‘কাঞ্চা’ থেকে আজকের বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক পর্যন্ত সফরটা সহজ ছিল না তাঁর কাছে।

কাঞ্চন মল্লিক নামটাই যথেষ্ট। রাজনৈতিক জগতে পা রাখার আগে থেকেই তাঁর জনপ্রিয়তা ছিল তুঙ্গে। সঞ্চালনা দিয়ে কেরিয়ার শুরু করার পর থিয়েটার, ছোটপর্দা, বড়পর্দা সবেতেই কাজ করেছেন কাঞ্চন। কিন্তু জীবনে স্বাছন্দ‍্যের মুখ অনেক পরে দেখেছেন তিনি।

kanchan mallick s
সম্প্রতি এক ডিজিটাল প্ল‍্যাটফর্মে নিজের স্ট্রাগলের কথা তুলে ধরেন কাঞ্চন। তিনি জানান, ছোট থেকেই পরিবারে অভাব দেখে আসছেন। কারখানায় কাজ করতেন তাঁর বাবা। কষ্টেসৃষ্টে চলত সংসার। আচমকা যেন একটা বাজ পড়েছিল তাঁদের পরিবারে। কাঞ্চন যখন ক্লাস থ্রিতে পড়েন তখন হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যায় কারখানাটা।

কিন্তু তাঁদের মাথায় কার্যত আকাশ ভেঙে পড়ে যখন হঠাৎ সেরিব্রাল অ্যাটাক হয়ে শয‍্যাশায়ী হয়ে পড়েন কাঞ্চনের বাবা। অভিনেতা বিধায়ক বলেন, ওই একটা ঘটনা এক ধাক্কায় তাঁকে পাঁচ বছর বড় করে দিয়েছিল। সংসারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে নিয়েছিলেন ক্লাস টেনের কাঞ্চন।

অভিনয় তখন দূর অস্ত। রোজগারের আশায় সেলসম‍্যানের চাকরি, পার্লারের ম‍্যানেজারি করেছেন। এমনকি মদের দোকানের সামনে ঠান্ডা পানীয় নিয়েও দাঁড়াতেন তিনি। কাঞ্চন বলেন, পরিবারে তখন সদস‍্য সংখ‍্যা সাড়ে পাঁচ জন। সংসার চালাতে দরকার মাসিক ১২০০ টাকা। শুরু করলেন মদের দোকানের সামনে কোলা বিক্রির কাজ।

Kanchan Mullicks wife Pinky lodges a police complaint against her husband Bengalplanet.com
কাঞ্চন জানান, একদিন একজন তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, এত ছোট বয়সে মদের দোকানের সামনে কোলা বিক্রি করতে লজ্জা করে না? কাঞ্চন উত্তর দিয়েছিলেন, মাসে সংসার খরচ ১২০০ টাকা। ১০০০ টাকা দিলেও চালিয়ে নেবেন। ওই ভদ্রলোক যদি দেন তাহলে এখুনি ছেড়ে দেবেন কাজ।

অভিনয় জগতে প্রতিষ্ঠা পেতেও লড়াই করেছেন। ধীরে ধীরে পরিচিত হয়েছেন ইন্ডাস্ট্রিতে। নিজের চেহারা নিয়ে নিজেই মজা করেছেন। আজ তিনি সফল অভিনেতা, বিধায়ক। ব‍্যাঙ্ক ব‍্যালেন্স ঈর্ষনীয়। তবুও এখনো পুরনো দিনগুলো ভুলতে পারেননি কাঞ্চন।


Niranjana Nag

সম্পর্কিত খবর