বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সম্প্রতি, রাজস্থানের উদয়পুরে পয়গম্বর ইস্যুতে নূপুর শর্মার বক্তব্যকে সমর্থন করার অপরাধে কানহাইয়া লাল নামে বছর চল্লিশের এক ব্যক্তিকে খুন করে দুই দুষ্কৃতী। অবশেষে তাদেরকে পাকড়াও করা হয় এবং দুই অপরাধী মহম্মদ ঘোউস এবং মহম্মদ রিয়াজকে গতকালই 14 দিনের জেল হেফাজতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় আদালত। বর্তমানে নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে গোটা রাজ্যের পরিস্থিতি।
আদালত সূত্রের খবর, বিচারকের সামনে অপরাধীদের পেশ করার সময় বেশ কয়েকজন আইনজীবী তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখাতে থাকে এবং পরবর্তীকালে তাদেরকে ধাওয়া পর্যন্ত করা হয়। প্রত্যেকেই তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবী জানান। এক্ষেত্রে অপরাধী দুই যুবকের হয়ে কোন আইনজীবীরাই মামলা লড়তে চাননি। প্রত্যেকের মতেই অপরাধীদের যথাযথ শাস্তি হওয়া উচিত।
এই প্রসঙ্গে উদয়পুর পার অ্যাসোসিয়ানের সভাপতি বলেন, “বর্তমানে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কোনো আইনজীবী মামলা লড়বেন না। উদয়পুরে যে কাণ্ডটি ঘটানো হয়েছে, সেটা সন্ত্রাসমূলক এবং নিন্দনীয় ঘটনা। এক্ষেত্রে কারোর মামলা লড়া উচিত নয়।” বর্তমানে কানহাইয়া লাল হত্যাকাণ্ডে রাজস্থান কংগ্রেস নেতৃত্বের নিন্দায় সরব হয়েছে সকলে। প্রত্যেকেই রাজস্থান সরকারকে দোষারোপ করেছে। এমনকি মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকেও অভিযোগ করা হয়েছে যে, রাজস্থান সরকার কেবলমাত্র মুসলমানদের জন্য রয়েছে, হিন্দুদের জন্য নয়। সেই কারণেই তাদের কথা কেউ কর্ণপাত করেনি।
যদিও বর্তমানে এই ঘটনার উপর তীক্ষ্ণ নজর রেখেছেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী গেহলট। মুখ্যমন্ত্রীর তরফ থেকে মৃতের পরিবারকে চাকরি দেওয়ার পাশাপাশি আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করা হয়। এছাড়াও তিনি বলেন, “এই ঘটনার তীব্র ভাষায় নিন্দা জানাচ্ছি। অপরাধীদের কড়া শাস্তি হবে।”
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি প্রকাশ্য দিবালোকে কানহাইয়া লাল নামে বছর চল্লিশের এক ব্যক্তিকে গলার নলি কেটে কুপিয়ে খুন করে হত্যাকারীরা। শুধু তাই নয়, হত্যাকারীরা হাড়হিম করা ওই দৃশ্যের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টও করা হয়। দুই হত্যাকারীর তরফে আলাদা আলাদা ভাবে দুটো ভিডিও পোস্ট করা হয়। জানা যায় যে, পেশায় দর্জি রাজস্থানের ওই ব্যক্তি দিন দশেক আগে নূপুর শর্মার সমর্থনে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেছিলেন। ফলে ওই পোস্ট ঘিরে আপত্তির কারণে ধর্মান্ধ ব্যক্তিরা এই খুন করে বলে জানা যায়। বর্তমানে এই ঘটনা ঘিরে সরগরম হয়ে পড়েছে গোটা রাজস্থান। তবে এই বিতর্ক শেষপর্যন্ত কোথায় গিয়ে থামে, সেটাই দেখার।