বাংলাহান্ট ডেস্ক : বাক স্বাধীনতা নিয়ে দেশের বর্তমান সরকারের উপরে অভিযোগ উঠেছে অনেকবারই। এবারে স্বয়ং তার আরেকটি প্রতিরূপ দেখা গেল উত্তরপ্রদেশে। প্রথমবারের জন্য কেবল হুমকি, কিন্তু দ্বিতীয়বার সেই একই ভুলের ফল ভোগ করতে হবে বুলডোজারের মুখোমুখি হয়ে। এমনটাই স্পষ্ট করে দিলেন আদিত্যনাথ যোগী প্রশাসন।
উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন স্থানে, বিক্ষোভের পারদ চড়ছে একটু একটু করে। বিক্ষোভকারীরা বেছে নিয়েছে সরাসরি হিংসার পথ, কানপুরে ও গোষ্ঠী সংঘর্ষ দানা বেঁধেছিল কিছুদিন আগেই। তাই আর চুপ করে বসে থাকতে পারলো না যোগী সরকার। কানপুরের হিংসা ছড়ানোর মূল অভিযুক্তদের সম্পত্তি ধুলিস্যাৎ করার জন্য মাঠে নামল বুলডোজার।
সমাজে অশান্তি সৃষ্টির অভিযোগে ধৃত দুই জনকেই চোখের সামনে দেখতে হবে নিজের সম্পত্তি ধূলিসাৎ হতে। যোগী গণমাধ্যম উপদেষ্টা মৃত্যুঞ্জয় কুমার স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়ে বুঝিয়ে দেন যে বিক্ষোভকারীদের শায়েস্তা করার জন্য এবার মাঠে নামবে বুলডোজার। মৃত্যুঞ্জয় সেই বিষয়ে টুইট করে লিখেছেন গোলমাল করেছে যারা তাদের মনে রাখতে হবে প্রতি শুক্রবার এর পরেই শনিবার ঠিক আসবে। এই বক্তব্যের সঙ্গে এই বুলডোজারের একটা প্রতিকৃতি পোস্ট করেন তিনি।
অন্যদিকে সেই একই ছবি দিয়ে বিজেপি বিধায়ক পোস্ট করেন, “বিদ্রোহীদের রিটার্ন গিফট”। যোগী সরকারের মন্ত্রী ও প্রদেশ বিজেপি সভাপতি স্বতন্ত্র দেব সিংহ সম্পূর্ণ যুক্তি দেন যে, কেন অভিযুক্তদের বাড়ি বুলডোজারের মাধ্যমে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেওয়া হয়। কেবল নেতা-মন্ত্রীরা কেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ যোগী স্পষ্ট জানিয়েছেন যে সমাজবিরোধী গত কয়েক দিনে যে রাজ্যে অশান্তি চলছে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অশান্তির ঘটনার পর থেকেই, সমাজে সম্প্রীতি ভঙ্গ এবং শান্তি ভঙ্গের অভিযোগে সাহারানপুরের ৬৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এবং এই শহরে অশান্তি ছড়ানোর দুই অভিযুক্ত মূলত মোজাম্মেল ও আবদুল ওয়াহিদের বাড়ির কিছু অংশ বুলডোজার দিয়ে সত্যিই ভেঙে দিয়েছে পুর কর্মীরা।
তাদের অবশ্য দাবি যে নির্মাণটি সম্পূর্ণভাবে অবৈধ ছিল। তবে এমতাবস্থায় প্রশ্ন উঠছে যে বিদ্রোহী বলতে এখানে ঠিক কাদের কথা বলা হচ্ছে? সরকারের বিপক্ষে গিয়ে তাদের দাবি পেশ করাও কি বিদ্রোহের অন্যতম অংশ? সহজ ভাষায় বলতে গেলে সরকারের বিরুদ্ধে কোন কথা বললে কি এই ভাবেই নিজের চোখের সামনে দেখতে হবে নিজের স্বপ্নের বাড়ির করুণ পরিণতি।