বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিরক্ষর। জীবনের স্বপ্ন ছিল ভালো বিড়ি বাঁধিয়ে হবেন। ভাগ্য করে দিল কমলা ফিরিওয়ালা। পথে পথে ঘুরে ঘুরে কমলা ফিরির জীবন। একদিন কিছু বিদেশি পর্যটক এলো কমলা কিনতে। দাম জানতে চাইলো। হাজাব্বা কিছুই বুঝলেন না। দাম বোঝাতে পারলেন না। ওরা বিরক্ত হয়ে চলে গেল।
অশিক্ষিত হাজাব্বা (Harekala Hajabba) খুব অপমানিত বোধ করলেন। চারদিকে চেয়ে দেখলেন তার মতই অনেক অশিক্ষিত শ্রমজীবী। তিনি ভাবতে লাগলেন, তার সঙ্গে যা হয়েছে হয়েছে, ভবিষ্যত প্রজন্মের সঙ্গে যেন তা না হয়। ঠিক করলেন স্কুল খুলবেন। স্থানীয় মাদ্রাসা সংলগ্ন একটি ঘরে শুরু করে দিলেন স্কুল। শুরুতে ২৮ ছাত্র হল। নিজে সারাদিন কমলা ফেরী করে যা রোজগার করেন তার বেশীর ভাগ ব্যয় করেন স্কুলে। নিজের তিন সন্তান। স্ত্রী মাইমুনা নিজের সন্তানদের কথা ভেবে হাজাব্বার এই অর্থ ব্যয়ের বিরোধিতা করেন। অনেক কষ্টে তাকে বুঝিয়ে সুজিয়ে নিজের উদ্দেশ্যের সঙ্গে যুক্ত করে নেন হাজাব্বা।
কিছুদিন পর ৫০ শতক জায়গা কিনে বড় আকারে স্কুল গড়ার উদ্যোগ নেন। তার জন্যে তাঁকে দুয়ারে দুয়ারে ভিক্ষে করতে হয়। এক বিশাল বড় মানুষের কাছে অর্থ চাইতে গেলে তিনি তার বিলিতি কুকুর লেলিয়ে দেন হাজাব্বার উপর।
শত প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে হাজাব্বার স্কুল মাথা তুলে দাঁড়ায়। এই সময় মিডিয়া এবং প্রশাসনের নজর তাঁর উপর পড়ে। অনেকে যেচে অর্থ সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন। অনেক পুরস্কার তিনি পান। যার বেশীর ভাগ স্কুলের স্বার্থেই ব্যয় করেন। হাজাব্বার মাথায় সর্বশেষ পালক তাঁকে পদ্ম সম্মানে সম্মানিত করা। তাঁর হাতে পদ্ম তুলে দিয়ে ভালো কাজের স্বীকৃতি দানের মাধ্যমে সরকার পদ্ম সম্মানের গরিমা বৃদ্ধি করলেন।