বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বর্তমানে দেশে মন্দির এবং মসজিদকে কেন্দ্র করে বিতর্ক থামার যেন কোনো লক্ষণই নেই। একের পর এক মসজিদকে মন্দির দাবি করার মাধ্যমে শোরগোল ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দেশে। জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে যখন বর্তমানে উত্তাল রয়েছে রাজনীতি, সেই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে এবার কর্ণাটকের জামিয়া মসজিদকে কেন্দ্র করে বাঁধলো নতুন উত্তেজনা।
সম্প্রতি, জামিয়া মসজিদে প্রবেশ করে সেখানে পুজো দেওয়ার ঘোষণা করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। সেই উদ্দেশ্যেই তারা ডাক দেয়, ‘শ্রীরঙ্গপাটনা চলো’ আর এহেন দাবি সামনে আসতেই গোটা শহর জুড়ে 144 ধারা জারি করল প্রশাসন। এদিন সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত কার্যকর থাকবে 144 ধারা।
প্রসঙ্গত, জ্ঞানবাপী মসজিদ বিতর্ক এবং সেখানে শিবলিঙ্গ উদ্ধার হওয়ার দাবির পর থেকেই গোটা দেশজুড়ে একের পর এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে উঠে এসেছে। দেশের নানা প্রান্তে একাধিক মসজিদ, এমনকি তাজমহল এবং কুতুব মিনারকে নিয়েও শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনীতি। এগুলি অতীতে মন্দির ছিল বলে দাবি করার পাশাপাশি কর্নাটকে শ্রীরঙ্গপাটনায় জামিয়া মসজিদকে নিয়ে বাঁধে উত্তেজনা। প্রথমে হিন্দু দেব-দেবীদের মন্দির থাকার দাবি তোলা হয় এবং বর্তমানে মসজিদের ভিতরে ঢুকে পুজো করার ঘোষণা করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ।
সূত্রের খবর, তাদের ‘শ্রীরঙ্গপাটনা চলো’ ডাকের পরেই উঠে পড়তে বসেছে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই 144 ধারা জারি করার পাশাপাশি বিশাল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে গোটা শহরে। এই প্রসঙ্গে পুলিশ প্রধান বলেন, “আজ 500 জনের বেশি পুলিশ মোতায়েন করার পাশাপাশি চারটি চেকপোস্ট তৈরি করা হয়েছে। গোটা এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সবরকম প্রচেষ্টা করা হচ্ছে, যাতে কোনোরকম বাজে ঘটনা না ঘটে। সেইজন্য চারিদিকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটোসাঁটো রাখা হয়েছে।”
এছাড়াও জেলা প্রশাসক জানান, “আজ জামিয়া মসজিদের ভেতর কোন লোকজনকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি বাজার পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে। এলাকার বিভিন্ন প্রান্তে সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়ে সকলের উপর নজর রাখা হচ্ছে। আশা রাখছি কোন অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটবে না।”
সম্প্রতি, জামিয়া মসজিদের ভিতর হিন্দুদের পুজো দেওয়ার দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে একটি স্মারকলিপি জমা করে নরেন্দ্র মোদি চিন্তা মঞ্চের কর্মীরা। সংগঠনের প্রধান মঞ্জুনাথ বলেন, “আমাদের কাছে একাধিক তথ্য রয়েছে, যা প্রমাণ করে যে অতীতে এখানে হনুমান মন্দির ছিল। এটির প্রমাণ হিসেবে পার্সিয়ার রাজাকে লেখা টিপু সুলতানের চিঠিও রয়েছে আমাদের কাছে। এছাড়াও এর দেওয়াল গুলিতে হিন্দু শিলালিপির চিহ্ন থাকা আমাদের দাবিকেই সত্য প্রমাণ করে। আমরা চাইছি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ দ্বারা মসজিদের ভিতর পর্যবেক্ষণ করার মাধ্যমে আসল সত্য সবার সামনে উঠে আসুক।”