বাংলাহান্ট ডেস্ক : বিরোধীরা ব্যঙ্গ করে বলে ‘চপ শিল্প’ ছাড়া নাকি আর কোনও শিল্পই নেই রাজ্যে (West Bengal)। তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নাকি দোকানে চপ ভেজেই কেটে যাবে। কিন্তু শুধুমাত্র চপ ভেজেও যে ভবিষ্যৎ গড়া যায় এবার একথা প্রমাণ করলেন মুর্শিদাবাদের কান্দির কার্তিক চুনারি। ৫০ রকমের চপ ভেজে বাংলার ‘চপ শিল্পের’ রীতিমতো ‘শিল্পপতি’ তিনি।
দীর্ঘ ২৫ বছর ধরেই চপ বিক্রি করেন কার্তিকবাবু। কান্দি এলাকার তিনিসাঁকো মোড়ের কাছে একটি ছোটো দোকান তাঁর। আর সেখানেই একটা দুটো নয়, রোজ তিনি তৈরি করেন ৫০ রকমের চপ। আলুর চপ,সিঙারা, মোচার চপ, মাংসের চপ থেকে শুরু করে পনিরের চপ, কী নেই সেখানে! গোটা মুর্শিদাবাদ জেলা থেকেই চপ খেতে তাঁর দোকানে আসেন মানুষ।
চপ বিক্রেতা বলেন, ‘আজ থেকে প্রায় ২৫ বছর আগে শুরু করেছিলাম ব্যবসা। সংসারটা ভালো করে চালানোর জন্যই দোকান শুরু করা। স্ত্রী এসে দাঁড়িয়েছিলেন পাশে। সকাল থেকে উঠে বিকেল পর্যন্ত বিভিন্ন কাঁচামাল তৈরি করে সন্ধ্যার পর তেলে ভেজে ক্রেতাদের মনের মক্ত জিনিয়া বিক্রি করি। এই ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর ‘চপ শিল্পের’ কথাই অনেকখানি অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল আমাকে।’
চপ শিল্পের রীতিমতো হোতা হয়ে উঠেছেন কার্তিক চুনরি। তাঁর দোকান থেকে চপ কিনতে আসেন আম আদমি থেকে সেলেব্রিটি সকলেই। এদিন চপ কিনতে এসেছিলেন কান্দি পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি পার্থপ্রতিম সরকার। তিনি বলেন, ‘এখানে দারুণ মুখরোচক চপ পাওয়া যায়। আমি প্রায় দিনই এই চপ কিনতে আসি। তবে এভাবেও যে মানুষ স্বনির্ভর হচ্ছে এটাই আশার বিষয়’। অপর আর এক স্থানীয় ক্রেতা জানিয়েছেন, এলাকায় চপ বলতে কার্তিকদার চপ ছাড়া আর কিছুই বোঝেন না তাঁরা।
লকডাউনে বন্ধ হয়েছিল দোকান। বিপুল ক্ষতিও হয় ব্যবসার। তবে সেই ধাক্কা সামলে আবার লাভের মুখ দেখছেন এই চপ বিক্রেতা। আপাতত প্রতিদিনই উপচে পড়া ভীড় তাঁর দোকানে। মাসে রোজগার পেরোয় হাজার হাজার টাকা। বর্তমানে নিজেকে ‘বাংলার চপশ্রী’ বলেও দাবি করেন তিনি।কার্তিকদার চপের নেশায় মজে মুর্শিদাবাদ বাসী। এবার আপনিও ওই চত্ত্বরে গেলে চেখে দেখবেন নাকি এই ৫০ ধরনের চপ?