হিজাব না পরায় কাশ্মীরের টপারকে নিশানা মৌলবাদীদের, যোগ্য জবাব দিলেন ছাত্রীও

বাংলাহান্ট ডেস্ক : হিজাব না পরায় অনলাইন ট্রোলের শিকার জম্মু ও কাশ্মীরের মেধাবী ছাত্রী। তবে নিন্দুকদের মুখের উপর যোগ্য জবাবও দিয়েছেন তিনি। শ্রীনগরের এই ছাত্রী স্পষ্টতই জানিয়েছেন, ভালো মুসলিম হওয়ার জন্য তাঁর হিজাবের প্রয়োজন নেই।

শ্রীনগরের এলাহিবাগ এলাকার বাসিন্দা আরুসা পারভেজ একটি স্কুলের দ্বাদশ শ্রেনীর ছাত্রী। পড়াশোনাতে বরাবরই অত্যন্ত মেধাবী তিনি৷ সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মীর বোর্ডের দ্বাদশ শ্রেনীর পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। সেই ফলাফলে দেখা যায় বিজ্ঞান বিভাগে ৫০০ এর মধ্য ৪৯৯ অর্থাৎ ৯৯.৮০% নম্বর পেয়ে রাজ্যের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন আরুসা।

তাঁর এই অসামান্য সাফল্যে অনেকেই অভিনন্দন জানাতে থাকেন তাঁকে। শ্রীনগরের ডেপুটি কমিশনার মহম্মদ আইজাজ আসাদের কার্যালয়ে আরুসার জন্য একটি সংবর্ধনা সভাও আয়োজন করা হয়। সেখানে বিশেষ শংসাপত্র এবং ১০ হাজার টাকার একটি চেক তুলে দেওয়া হয় এই মেধাবী কাশ্মীরি কন্যার হাতে।

কিন্তু এরপরই স্যোশাল মিডিয়ায় চুড়ান্ত সমালোচনা এবং ট্রোলের শিকার হতে হয় তাঁকে। হিজাব না পরায় ঘোরতর সমালোচনা শুরু হয় তাঁর, এমনকি কর্ণাটনের মুসকানের সঙ্গেও হতে থাকে আরুসার তুলনা। মুসকান বোরখা এবং হিজাব পরিহিত অবস্থায় জয় শ্রীরাম স্লোগানের বিরুদ্ধে আল্লাহু আকবর বলে চিৎকার করেছিলেন। তাই পড়াশোনার কারণে ধর্মকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না আরুসা উঠতে থাকে এই অভিযোগ। মুসকানের থেকে শিক্ষা নিয়ে আরুসাকে কাশ্মীরের মেয়েদের জন্য একটি ‘রোল মডেল’ হয়ে ওঠার পরামর্শও দেওয়া হয়।

কিন্তু সেসমস্ত ট্রোলিংএ কান দিতে নারাজ আরুসা। ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি স্পষ্টতই জানান, ‘নিজেকে একজন ভালো মুসলিম প্রমাণ করার জন্য আমার হিজাব পরার দরকার নেই। আমি আল্লার প্রতি বিশ্বাস রাখি এবং ইসলামিল নীতি অনুসরণ করি’।

নিজের সাফল্যে যে ভীষণই খুশি তিনি তাও সাক্ষাৎকারে জানান কৃতি এই ছাত্রী। জানান সাফল্যের ফল কঠিন পরিশ্রম ছাড়া আর কোনো দ্বিতীয় পন্থা নেই। তবে এই অনলাইন ট্রোলে বিরক্ত হয়ে তিনি পাত্তা না দিলেও ব্যাপারটিতে বেশ চিন্তাতেই পড়েছেন আরুসার বাবা মা। যদিও দেশের এহেন কৃতি কন্যাকে পোষাক নিয়ে এভাবে সমালোচনার মুখে পড়তে হওয়ায় নিন্দুকদের বিরুদ্ধেই নিন্দার ঝড় উঠেছে দেশে।

Avatar
Katha Bhattacharyya

সম্পর্কিত খবর