বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার একটি বড় খবর সামনে এসেছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, ভারতীয় রেল (Indian Railways) এবার কাশ্মীর উপত্যকাকে (Kashmir Valley) দেশের বাকি অংশের সাথে সংযুক্ত করার মাধ্যমে নজির গড়তে প্রস্তুত। মূলত, বহু প্রতীক্ষিত উধমপুর-বারামুল্লা রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজ প্রায় সমাপ্তির পথে। পাশাপাশি, সেখানে প্রথমবারের মতো ট্রেন চালানোর পথও প্রশস্ত করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
আধিকারিকদের সূত্রে খবর মিলেছে, ২৭২ কিলোমিটারের উধমপুর-শ্রীনগর-বারামুল্লা রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজ জোরকদমে চলছে এবং এখনও পর্যন্ত ৯৫ শতাংশেরও বেশি কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এই কাজ শেষ হলে সেখানে ট্রেন পরিষেবা বাসিন্দা এবং পর্যটকদের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এর ফলে শ্রীনগর ও জম্মুর মধ্যে ভ্রমণের সময় ৬ ঘণ্টা থেকে কমে ৩.৫ ঘণ্টা হয়ে যাবে।
এছাড়াও, ট্রেনের মাধ্যমে পণ্য সরবরাহের বিষয়টি গতি পাবে। যা সরাসরি অর্থনীতিকেও চাঙ্গা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। জম্মু ও কাশ্মীর থেকে অন্যান্য কৃষিজাত পণ্যের পাশাপাশি আপেলের মতো উদ্যানজাত সামগ্রীও এর ফলে পরিবহণ করা সহজ হবে। তবে, এই প্রকল্পের কাজটি কিন্তু যথেষ্ট কঠিন ছিল। কারণ, সমগ্ৰ জায়গাটি ছিল প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধকতায় পরিপূর্ণ।
আরও পড়ুন: মাধ্যমিক পরীক্ষার আগেই আসছে নতুন বই! সিলেবাসে হচ্ছে বদল? কি জানাল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ?
কবে থেকে শুরু পরিষেবা:
এমতাবস্থায়, এই প্রকল্পের জন্য ওই পাহাড়ি ভূখণ্ড জুড়ে অসংখ্য টানেল এবং সেতু নির্মাণের প্রয়োজন ছিল। এদিকে, উত্তর রেলের জনসংযোগ আধিকারিক বিনোদ কুমার কাশ্মীর জানিয়েছেন যে, প্রকল্পটি নির্ধারিত ডিসেম্বর মাসে কিংবা ২০২৪-এর জানুয়ারির মধ্যে সম্পন্ন হয়ে যাবে। তিনি জানান, “সময়সীমা অনুযায়ী কাজ চলছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আমরা নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী প্রকল্পটি উদ্বোধন করব।”
উল্লেখ্য যে, সরকার জম্মু এবং শ্রীনগরের মধ্যে বন্দে ভারত মেট্রো ট্রেন পরিষেবা চালু করতে চায়। এর আগে, রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেছিলেন যে এই রেল নেটওয়ার্ক সম্পূর্ণ হয়ে গেলে প্রথমবার জম্মু ও শ্রীনগরের মধ্যে বন্দে ভারত মেট্রো চালানো হবে। পাশাপাশি, সেন্ট্রাল কাশ্মীরের বুডগাম জেলায় বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনের রক্ষণাবেক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, একজন আধিকারিক জানিয়েছেন এই প্রকল্পে মোট ৩৮ টি টানেল রয়েছে। যেগুলির সম্মিলিত দৈর্ঘ্য হল ১১৯ কিমি। যার মধ্যে T-49 হল দীর্ঘতম। এটির দৈর্ঘ্য ১২.৭৫ কিলোমিটার, এবং এটি দেশের দীর্ঘতম পরিবহণ টানেলও। এর পাশাপাশি রয়েছে ৯২৭ টি সেতু। যেগুলির সম্মিলিত দৈর্ঘ্য হল ১৩ কিলোমিটার এই সেতুগুলির মধ্যে দৃষ্টিনন্দনকারী চেনাব সেতুও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যা চেনাব নদীর তলদেশ থেকে ৩৫৯ মিটার উপরে রয়েছে এবং এটি বিশ্বের সর্বোচ্চ স্টিল আর্চ রেল সেতু হিসেবে বিবেচিত হয়।