বাংলাহান্ট ডেস্ক : বৃহস্পতিবার ভোরে আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু (Death) হয়েছে বাবার। সেই শোকের ব্যথা সঙ্গী করেই উচ্চমাধ্যমিকের (Higher Secondary Examination) ইংরেজি পরীক্ষা দিতে গিয়েছিল মেয়ে। পরীক্ষা দিয়ে ফিরে যোগ দিল বাবার শেষকৃত্যে। করল বাবার মুখাগ্নি। বোলপুর (Bolpur) পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ড বৃহস্পতিবার সাক্ষী থাকল এমনই একটি ঘটনার। সদ্য যৌবনে পা দেওয়া এই ছাত্রী নজির সৃষ্টি করলেন।
বোলপুরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মকরামপুরের বাসিন্দা অষ্টম দলুই বৃহস্পতিবার ভোরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনি বোলপুরের গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহ লাগোয়া নেতাজি মার্কেটে একটি চায়ের দোকান চালাতেন। অষ্টমের দুটি কন্যা সন্তান। এই বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে বড় মেয়ে মৌসুমি দলুই। ছোট মেয়ে শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। পারুলডাঙা শিক্ষানিকেতন আশ্রম বিদ্যালয়ের ছাত্রী মৌসুমি।
তার উচ্চ মাধ্যমিকের সিট পড়েছে শৈলবালা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। বাবার মৃত্যুর পর বুকে পাথর নিয়ে মৌসুমি পৌঁছান পরীক্ষা কেন্দ্রে। এরপর পরীক্ষা দিয়ে ফিরে সম্পন্ন করেন বাবার শেষকৃত্য। মৌসুমির এক মাসতুতো ভাই বলেছেন, “ওকে আমরা বুঝিয়েছিলাম যে ওর বাবা যেখানে গিয়েছে সেখান থেকে আর ফিরে আসবে না। এরপরে ও পরীক্ষা দিতে রাজি হয়।”
মৌসুমি বলেছেন, “বাড়িতে আমি ছাড়া আমার বোন ও মা আছে। আমাকেই এখন সব দেখতে হবে। ভবিষ্যতের কথা ভেবেই পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলাম। তবে মন পড়েছিল বাড়িতে। বাবা চাইতো আমি পড়াশোনা করে বড় হই।” বীরভূমের মৌসুমি আগামী দিনে সাহস যোগাবে আরো অসংখ্য মৌসুমিকে। তার মনোবল অনুপ্রাণিত করবে এলাকার অসংখ্য নাবালিকাকে। মৌসুমিকে নিয়ে গর্বিত তার এলাকাবাসীও।