সুমিত পাসি, অঙ্কিত মুখার্জিদের জঘন্য ফুটবলের প্রদর্শন! কেরালার মাঠে বড় ব্যবধানে হারলো ইস্টবেঙ্গল

বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: সমর্থকদের প্রত্যাশাই সার, ইস্টবেঙ্গল রয়েছে সেই পুরনো ইস্টবেঙ্গলেই। আজ কোচির জওহরলাল নেহেরু স্টেডিয়ামে চলতি মরশুমের প্রথম আইএসএল ম্যাচ খেলতে মাঠে নেমেছিল লাল-হলুদ ব্রিগেড। প্রতিপক্ষ ছিল কেরালা ব্লাস্টার্স। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আশা করেছিল ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা। মিথ্যে বলে লাভ নেই, ম্যাচের প্রথম ৩০ মিনিট কেরালার সাথে পাল্লা দিয়ে লড়াই চালিয়ে ছিল ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু ম্যাচ যত গড়াতে থাকে ততই ইস্টবেঙ্গলের দুর্বলতাগুলো আরো প্রকট হতে থাকে।

প্রথমার্ধে গোলশূন্যভাবে শেষ করার পর দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম তিন মিনিট তেড়ে-ফুঁড়ে কয়েকটা আক্রমণ তুলে এনেছিল ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু তার পর থেকেই ম্যাচের গতি পুরোপুরি একমুখী হয়ে দাঁড়ায়। একের পর এক আক্রমণ তুলে আনতে থাকে কেরালা ব্লাস্টার্স এবং কোনক্রমেই ইস্টবেঙ্গলকে রক্ষা করতে থাকেন ইস্টবেঙ্গল গোলরক্ষক কমলজিৎ।

খুব বেশিক্ষণ কেরালা আক্রমণের চাপ আর সামলাতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্স। হরমোন জাতীয় খাবার নিজেদের হাত থেকে বাড়ানোর লংবল ধরে একটি দুর্দান্ত ভলি নেন আদ্রিয়ান লুনা। ম্যাচে প্রথমবার একটি ভুল করেছিলেন কমলজিৎ এবং তার খেসারত তাকে দিতে হয়। ম্যাচের ৭২ মিনিটে ১-০ ফলে এগিয়ে যায় কেরালা।

গোল খাওয়ার পরও ইস্টবেঙ্গলের খেলায় বিশেষ কিছু পরিবর্তন দেখতে পাওয়া যায়নি। বেশ কয়েকটি পরিবর্তন করে দলের খেলায় একটা ছন্দ আনার চেষ্টা করেন স্টিফেন কনস্ট্যানটাইন। কিন্তু ম্যাচের ৮২ মিনিটে পিকক দক্ষতায় প্রায় গোটা ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্স কে ফাঁকি দিয়ে গোল করে জানি পরিবর্ত হিসেবে নাওয়া দীর্ঘদেহী ইউক্রেনিয়ান ফুটবলার ইভান কালিঝুনি। ম্যাচ এখানেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। তাও ৮৭ মিনিটে কর্নার থেকে ভেসে আসা বলে একটি দুরন্ত ফলে মেরে ব্যবধান কমিয়ে ছিলেন অ্যালেক্স লিমা। অঘটনের আশা করছিলেন ইস্টবেঙ্গল ভক্তরা। কিন্তু তার ঠিক পরের মুহূর্তেই বেঙ্গল বক্সের বাইরে কর্নার ক্লিয়ার করতে গিয়ে ভেসে আসা একটি লুজ বল ধরে দূরপাল্লার দুরন্ত শটে স্কোরলাইন ৩-১ করে দেন সেই কালিঝুনি।

ম্যাচ হারের পরেই ইস্টবেঙ্গল কোচ স্টিফেন কনস্ট‍্যানটাইনের কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে। নাওরেম মহেশ, অনিকেত যাদবের মত ফুটবলাররা বেঞ্চে থাকতেও কেন সুমিত পাসির মত বোঝাকে ৯০ মিনিটে বয়ে গেল ইস্টবেঙ্গল, সেই নিয়ে সমর্থকরা প্রশ্ন তুলছেন। ফরোয়ার্ডদের মধ্যে সুহের একেবারেই ছন্দে ছিলেন না, তাহলে ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার এলিয়ান্দ্রোকে মাঠে আনতে এত দেরি কেন করা হলো তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। রাইট ব্যাক হিসেবে অঙ্কিত মুখার্জি কত জঘন্য ফুটবল খেলার পরও তাকে কেন রেখে দেওয়া হল ৯০ মিনিট, সেই নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলছেন। আজকে ইস্টবেঙ্গল এর খেলা দেখে অতি বড় ইস্টবেঙ্গল ভক্ত এই দলকে নিয়ে আশাবাদী হতে চাইবেন না। তুহিন দাস, অ্যালেক্স লিমা এবং লালচুংগুঙ্গাই কিছুটা ইতিবাচক ফুটবল খেলতে পেরেছেন কিন্তু মাত্র তিনজনের ওপর নির্ভর করে একটা দল ম্যাচ জিততে পারে না সেটা আবারো একবার পরিষ্কার হয়ে গেল।

Reetabrata Deb

সম্পর্কিত খবর