বাংলা হান্ট ডেস্ক: আরও একবার সংবাদের শিরোনামে কেরল স্বর্ণ পাচার মামলা। ২০২১ সালের অক্টোবরে সোনা পাচার মামলার অন্যতম অভিযুক্ত স্বপ্না সুরেশকে গ্রেফতার করেছিল এনআইএ। আর এই কাণ্ডে স্বপ্না সুরেশের মুখে শোনা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের নাম। তাঁর দাবি আরব আমিরশাহী থেকে কেরলে সোনা পাচার সম্পর্কে জানতেন মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন এবং তাঁর তিন মন্ত্রী। গোটা বিষয়টি নিয়ে অবগত ছিলেন কেরল বিধানসভার তৎকালীন স্পিকারও। ২০২১ সালে কেরল হাইকোর্টে শুল্ক দফতর একথা জানায় স্বপ্না। হলফনামায় শুল্ক দফতরের দাবি ছিল প্রধান অভিযুক্ত স্বপ্না সুরেশই এই বিষয়ে বিজয়নের নাম নিয়েছেন। গোটা বিষয়টি একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই।
এক মহিলা পুলিশ আধিকারিকও এই বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। স্বপ্না সুরেশের নিরাপত্তার জন্য নিযুক্ত ছিলেন ওই মহিলা পুলিশ আধিকারিক। কর্মকর্তাদের একটি লিখিত বক্তব্যে জানিয়েছেন, জিজ্ঞাসাবাদের সময় স্বপ্নাকে ইডি পিনারাই বিজয়ন নাম নিতে বাধ্য করেছিল।
গতকাল আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় স্বপ্না সুরেশকে। তিনি দাবি করেন এই মামালায় মুখ্যমন্ত্রী পিনরাই বিজয়ন সহ তাঁর স্ত্রী কন্যারও এই সরাসরি যোগ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি এখনও পর্যন্ত আদালতে ১৬৪টি বক্তব্য পেশ করেছি। আমি আদালতকে এটাও জানিয়েছি কারা কারা এই মামলায় জড়িত। আদালতে আমি আমার জীবনের সুরক্ষাও চেয়েছিলাম। আদালত আমাকে তার অনুমতি দিয়েছে। আমি আদালতকে জানিয়েছি এই মামলায় মুখ্যমন্ত্রী পিনরাই বিজয়ন, মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী কমলা, মুখ্যমন্ত্রীর কন্যা বীণা, তৎকালীন সিএমও-র মুখ্যসচিব এম সিভাশংকর, মুখ্যমন্ত্রীর সেক্রেটারি রভীন্দ্রন, মুখ্যসচিব নলীনি নেত্তো এবং মন্ত্রি কেটি জটিল।
স্বপ্না দাবি করেন, ২০১৬ সালে দুবাইতে বিজয়নের কাছে একটা টাকা ভর্তি ব্যাগ পাঠানো হয়। তিনি বলেন, ‘২০১৬ সালে আমি কনস্যুলেটের সেক্রেটারি ছিলাম। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী দুবাইতে ছিলেন। এম সিভাশংকর আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি বলেন মুখ্যমন্ত্রী একটা ব্যাগ নিয়ে যেতে ভুলে গেছেন। আমি যেন সেটা তাঁর কাছে পাঠিয়ে দিই। ব্যাগটি যখন কনস্যুলেটে আসে তখন আমাদের সন্দেহ হয়। আমরা ব্যাগটি পরীক্ষা করে বুঝতে পারি তার মধ্যে ভর্তি আছে টাকা। এই সব টাকাই যুক্ত ছিল সোনা পাচার চক্রের সঙ্গে।’ স্বপ্না সুরেশের বক্তব্যের পর রীতিমতো শোরগোল পড়ে গেছে গোটা দেশ জুড়ে। কেরালা স্বর্ণ পাচার মামলা যে এক বিপজ্জনক দিকে মোড় নিচ্ছে তা বলাই বাহুল্য।