বাংলা হান্ট ডেস্ক: ভারতবর্ষ মানেই মন্দিরের দেশ। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী দেশের প্রতিটি প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে অগণিত মন্দির। বহু দশকের পুরোনো এই মন্দির গুলি ঘিরে রয়েছে বেশ কিছু পৌরাণিক কাহিনী। তাই প্রতি মন্দিরের মাহাত্ম-ও আলাদা। ঈশ্বর দর্শনের জন্য এই মন্দির গুলিতে বছর বছর বিপুল ভক্ত সমাগম হয়। আর ভক্তদের দানে ফুলেফেঁপে ওঠে মন্দিরের কোষাগার। আসুন দেখে নেওয়া যাক ভারতের এমনই ১০-টি ধনী মন্দিরের (Richest Temple) তালিকা।
ভারতের ১০-টি ধনী মন্দিরের (Richest Temple) তালিকা:
পদ্মনাভম স্বামী মন্দির
আমাদের দেশের সবচেয়ে ধনী মন্দিরের (Richest Temple) তালিকায় প্রথম স্থানেই রয়েছে কেরালার রাজধানী তিরুবনন্তপুরমের পদ্মনাভম স্বামী মন্দির। ভগবান বিষ্ণুর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা এই মন্দিরটি খুবই জাগ্রত। ২০১১ সালে এই মন্দির থেকে অসংখ্য সোনা, হীরা এবং মূল্যবান রত্ন পাওয়া গিয়েছিল, যার মূল্য আনুমানিক ২০ বিলিয়ন ডলার । সূত্রের খবর ২০২৩ সালে,এই মন্দিরের মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ১,২০,০০০ কোটি টাকা।
তিরুপতি বালাজি মন্দির
এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি বালাজি মন্দির। এখানকার আরাধ্য দেবতা ভগবান বিষ্ণু। এই মন্দিরটি তার অলৌকিক কর্মকান্ডের জন্য বিশ্ব বিখ্যাত। প্রতিদিন ভক্তদের থেকে এই মন্দিরে কোটি টাকার উপহার আসে। জানলে অবাক হবেন এই মন্দিরে সব মিলিয়ে বছরে প্রায় ৬৫০ কোটি টাকার অনুদান পাওয়া যায়। এই মন্দিরে প্রায় ৯ টন সোনা এবং ১৪ হাজার কোটি টাকার স্থায়ী আমানত রয়েছে।
শিরডি সাই বাবা
ভারতের তৃতীয় ধনী মন্দির (Richest Temple) হল শিরডির সাই বাবার মন্দির। সূত্রের খবর এই মন্দিরের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রায় ৩৮০ কেজি সোনা, ৪ হাজার কেজি রুপোসহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা, ডলার ও পাউন্ড জমা রয়েছে। এর সাথে প্রায় ১,৮০০ কোটি টাকার নগদও জমা রয়েছে।
সিদ্ধি বিনায়ক
ধনী মন্দিরের (Richest Temple) তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে মহারাষ্ট্রের রাজধানী মুম্বাইতে অবস্থিত শ্রী সিদ্ধি বিনায়ক মন্দির। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সিদ্ধি বিনায়কের আশীর্বাদ নেওয়ার জন্য প্রতি বছর ভীড় জমান বহু সেলিব্রিটিরাও। ভক্তদের থেকে প্রতি বছর এই মন্দিরে প্রায় ১২৫ কোটি টাকার অনুদান আসে।
বৈষ্ণ দেবীর মন্দির
ভূস্বর্গ জম্মু ও কাশ্মীরের কাটরাতে অবস্থিত মাতা বৈষ্ণব দেবী মন্দিরের জনপ্রিয়তার কথা নতুন করে কিছুই বলার নেই। সারা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই মন্দিরে বিরাট ভক্ত সমাগম হয়। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, খবর এই মন্দির থেকে প্রতি বছর প্রায় ৫০০ কোটি টাকার আয় হয়।
পুরীর জগন্নাথ মন্দির
হিন্দুদের চার ধামের মধ্যে অন্যতম ওড়িশার পুরীর জগন্নাথ মন্দির। পবিত্র শ্রী ক্ষেত্রের এই মন্দিরটি ভগবান বিষ্ণুর অষ্টম অবতার শ্রী কৃষ্ণকে উৎসর্গ করে তৈরী। সারা বছর তো বটেই বিশেষ করে রথযাত্রার সময় এখানে কোটি কোটি ভক্ত সমাগম হয়। জানা যায়, এই মন্দিরে প্রায় ১০০ কেজি সোনা ও রুপোর মূল্যবান সম্পদ রয়েছে।
বিশ্বনাথ মন্দির
বারাণসীর ভগবান কাশী বিশ্বনাথের মন্দিরটিও এই তালিকায় রয়েছে। দেবাধিদেব মহাদেবকে উত্সর্গ করে তৈরী এই মন্দির খুবই জাগ্রত। সম্প্রতি এই মন্দিরে গিয়েই ছোট ছেলের বিয়ের প্রথম নিমন্ত্রণ পত্র দিয়ে এসেছিলেন নীতা আম্বানি। প্রতি বছর এই মন্দিরে প্রায় ৫কোটি টাকার আনুদান আসে।
সোমনাথ মন্দির
গুজরাটের সোমনাথ মন্দিরটিও আমাদের দেশের অন্যতম ধনী মন্দির। কথিত আছে মহাদেবের এই মন্দিরটি ১১টি জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে একটি। জানান যায় বিদেশী হানাদার গজনভির আক্রমণের সময় নাকি এই মন্দিরের সিঁড়িও ছিল সোনায় মোড়া। বছর বছর কোটি টাকার অনুদান আসে এই মন্দিরে।
মীনাক্ষী মন্দির মাদুরাই
আমাদের দেশের আরও একটি জনপ্রিয় মন্দির হল মীনাক্ষী মন্দির। এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয়। সূত্রের খবর এখানে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ হাজার মানুষের ভক্ত সমাগম হয়। জানা যাচ্ছে, ভক্তদের দান থেকে এই মন্দিরে প্রতি বছর প্রায় ৬-৭ কোটি টাকার আয় হয়।
সবরিমালা আয়াপ্পা
দক্ষিণ ভারতী কেরালার শবরীমালা আয়াপ্পা মন্দিরে প্রতি বছর প্রায় ১০ কোটি ভক্ত সমাগম হয়। জঙ্গলে ঘেরা উঁচু পাহাড়ে অবস্থিত এই মন্ডির। এই মন্দির থেকে প্রায় ২৫০ কোটি টাকার অনুদান পাওয়া যায়। একটা সময় মেয়েদের প্রবেশ নিষেধ থাকার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিরোনামে ছিল এই মন্দির।