বাংলা হান্ট ডেস্ক: ঋণের ভারে জর্জরিত ভারতের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ। দিনে সেই মাত্রা ছাপিয়ে যাচ্ছে বিপদ সীমা। বছরভর বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশ যে পরিমাণ রাজস্ব আয় করে তার অধিকাংশ পরিমাণই এখন চলে যাচ্ছে সুদ দিতে। দিনে দিনে বিদেশী ঋণের হার একপ্রকার বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের শেখ হাসিনার সরকারের ওপর।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের অর্থাৎ আইএমএফ-র হিসাব অনুযায়ী ২০২০-২১ পর্যন্ত পর্যন্ত বিভিন্ন দেশ এবং সংস্থার কাছ থেকে বাংলাদেশের ঋণের পরিমাণ ছিল ৭২২৯ কোটি ডলার। যা বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ৭ লাখ ৫৯ হাজার কোটি টাকা।
বাংলাদেশের বিদেশী ঋণ দাতাদের তালিকায় মূলত আইএমএফ, কিংবা বিশ্ব ব্যাংক ছাড়াও রয়েছে আরও অন্যান্য দেশ। যার মধ্যে অন্যতম ভারত। আইএমএফ-র তথ্য বলছে বাংলাদেশের ঋণের পরিমাণ বর্তমানে ঝুঁকি সীমার মধ্যেই রয়েছে।
যা রীতিমতো চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে শেখ হাসিনার সরকারের কপালে। কিছুদিন আগেই বাংলাদেশের জন্য নতুন করে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করেছে আইএমএফ। হিসাব অনুযায়ী বিশ্ব ব্যাংক এবং আইএমএফ -র মত আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে বর্তমানে বাংলাদেশের ঋণের পরিমাণ গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪৯০ কোটি ডলার।
আরও পড়ুন: সন্দেশখালি আন্দোলনে নয়া মোড়! রাতের অন্ধকারে যা কাণ্ড ঘটালেন মহিলারা … তোলপাড় রাজ্য!
যা নাকি ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের জিডিপির ৮ শতাংশের বেশি ছাড়িয়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয় বিভিন্ন দেশের থেকে বাংলাদেশের ঋণের পরিমাণ বর্তমানে ২১৬৭কোটি ডলার। যা বাংলাদেশের জিডিপির ৫ শতাংশের বেশি।
কার কাছে কত ঋণ?
বাংলাদেশ সবথেকে বেশি পরিমাণে ঋণ নিয়েছে বিশ্বব্যাঙ্কের কাছ থেকে। বর্তমানে এই ঋণের পরিমাণ ১৮১৬ কোটি ডলার। আর তারপরেই এরপরেই এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)-র থেকে ১৩২৮ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়াও তালিকায় রয়েছে জাপান, রাশিয়া এবং চিনের মতো প্রভাবশালী দেশগুলিও।
জানা যাচ্ছে জাপানের কাছ থেকে ৯২৩ কোটি টাকা আর রাশিয়া এবং চিনের কাছে যথাক্রমে ৫০৯ কোটি ডলার এবং ৪৭৬কোটি ডলার ঋণ নিয়েছে শেখ হাসিনার দেশ। এছাড়াও আইএমএফের থেকে আরও ৪৭০কোটি ঋণ নিয়েছে বলে জানা যাচ্ছ। তার আগেও নাকি তাদের কাছে থেকে ৯৮কোটি ডলার নিয়েছিল বাংলাদেশ।
ভারতের কাছে কত বাকি?
আইএমএফ-র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জানা যাচ্ছে জাপান, রাশিয়াসহ প্যারিস ক্লাবের সদস্যভুক্ত দেশগুলির থেকেও মোট ১৫৫১কোটি ডলার ঋণ নিয়েছে বাংলাদেশ। প্যারিস ক্লাবের সদস্য নয়, এমন দেশের থেকেও বাংলাদেশের ঋণের পরিমাণ ৬১৬কোটি ডলার। আর এই তালিকাতেই নাম রয়েছে ভারতের। জানা যাচ্ছে ভারতের কাছে বাংলাদেশের ঋণের পরিমাণ ১০২কোটি ডলার।
তবে ঋণ শোধ করার বিষয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছমাসে ১০৫কোটি ডলার ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে। হিসাব অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে হাসিনা সরকারকে মোট ২৭৮কোটি ডলার অর্থ পরিশোধ করতে হবে। যা ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে বেড়ে দাঁড়াবে ৪০২ কোটি ডলারে।