চরম দুর্ভোগ পাক-নাগরিকদের কপালে! খাবার জিনিসের দাম শুনলে মাথা ঘুরে যাবে আপনারও

বাংলাহান্ট ডেস্ক: তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে পাকিস্তানের (Pakistan) খাদ্যসঙ্কট। খাবারের জন্য সেখানে চলছে মারপিট, লুঠপাট। পেটের দায়ে আটা চুরির পথ বেছে নিয়েছেন সাধারণ মানুষ। তাঁদের থামাতে সামরিক বাহিনী বন্দুকের আশ্রয় নিয়েছে। সম্প্রতি করাচিতে সস্তার আটা নিতে গিয়ে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩ শিশু ও ৮ মহিলা সহ ১১ জন। বিগত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয়ে গিয়েছে মুদ্রাস্ফীতি। 

একইসঙ্গে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস জোগার করতে অসৎ উপায় বেছে নিতে হচ্ছে মানুষকে। বিগত কয়েক মাসে অপরাধের হার ব্যাপক হারে বেড়ে গিয়েছে পাকিস্তানে। এই অবস্থায় তাদের উপর চেপে রয়েছে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণের বোঝা। যা তাদের শোধ করতে হবে আগামী জুনের মধ্যে। তা না হলে প্রতিবেশী দেশটির সমস্যা আরও বাড়বে।

এসবের মাঝে সে দেশে খাবার জিনিসের দাম হয়েছে আকাশছোঁয়া। জানা গিয়েছে, ২২ মার্চ ২০২৩ অবধি পাকিস্তানে মুদ্রাস্ফীতির হার ৪৭ শতাংশে চলে গিয়েছে। এই মুহূর্তে পাকিস্তানে এক কেজি পেঁয়াজের দাম ১৩১ টাকা। ২০ কেজি গমের দাম ২৫০০ টাকারও বেশি। ১ কেজি চালের দাম ১৮৮ টাকা। ১ ডজন ডিমের দাম ২৩৯ টাকা। ১ কেজি মুগ ডাল বিক্রি হচ্ছে ২৮১ টাকায়। ১ কেজি আলুর দাম ৫৮ টাকা। একইসঙ্গে বেড়েছে জ্বালানির দামও। ১ লিটার পেট্রোলের দাম ২৭৩ টাকা এবং ১ লিটার ডিজেলের দাম ২৯৪ টাকা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিগত পাঁচ দশকে এত খারাপ মুদ্রাস্ফীতি দেখেনি পাকিস্তান। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের থেকে ১.১ বিলিয়ন ডলারের বেল আউট প্যাকেজ পাওয়ার স্বার্থে বেশ কিছু নীতির পরিবর্তন করেছে পাকিস্তান। এর ফলে দেশে সুদের হারও বেড়ে গিয়েছে। যার প্রভাব পাকিস্তানের একাধিক জিনিসের উপর পড়েছে। এদিকে ক্রমশ ফুরিয়ে যেতে থাকা বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডারের কারণে বিদেশ থেকে আমদানিও বন্ধ পাকিস্তানের। এই কারণেই দেশে দেখা গিয়েছে খাদ্যসঙ্কট। যার জন্য  সাধারণ মানুষকে অনেক বেশি টাকা দিয়ে জিনিস কিনতে হচ্ছে।

আটার দাম এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে মানুষের থালা থেকে রুটি প্রায় উধাও হয়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, একাধিক কারখানাতেও এখন তালা ঝুলছে। বন্ধ হয়েছে একাধিক অফিস। এর ফলে রাতারাতি কাজ হারিয়েছেন প্রায় ২০ হাজার পাকিস্তানি। এত সঙ্কটের ফলে সে দেশে অপরাধের হারও বেড়ে গিয়েছে। কেবল উচ্চবিত্ত পরিবাররাই এই মুদ্রাস্ফীতি থেকে নিজেদের সামলে রাখতে পেরেছেন। কিন্তু মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষ সবচেয়ে ভুগছেন। নিজেদের জীবনের সমস্ত রোজগার দু’বেলা দু’মুঠো খেয়ে বাঁচার চেষ্টা করছেন তাঁরা।


Subhraroop

সম্পর্কিত খবর