‘চুড়ি পরে বসে থাক…’ চরম কটাক্ষ বৃদ্ধের! নবান্ন অভিযানে ভাইরাল ওই ব্যক্তি আসলে কে জানেন?

বাংলা হান্ট ডেস্ক : আরজি করের তরুণী চিকিৎসকের নির্মম হত্যার প্রতিবাদে মঙ্গলবার ২৭ আগস্ট, নবান্ন অভিযানের (Nabanna Abhijan) ডাক দিয়েছিলেন কলকাতার ছাত্র সমাজ। তাই নবান্ন ঘেরাওয়ের (Nabanna Abhijan) আশঙ্কায় মঙ্গলবার সকাল থেকেই নবান্ন সংলগ্ন সমস্ত রাস্তা গার্ডরেল দিয়ে ব্লক করতে নেমে পড়েন  কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police)। আর পুলিশের এই ভূমিকা দেখে প্রশ্ন তুলতে  শুরু করেন সাধারণ মানুষ।

নবান্ন অভিযানে (Nabanna Abhijan) ভাইরাল গেরুয়া বসনধারী এক বৃদ্ধ আসলে কে?

কিন্তু এরই মাঝে এদিনের নবান্ন অভিযানে (Nabanna Abhijan) সকলকে ছাপিয়ে গিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সকলের নজর কেড়েছেন গেরুয়া বসনধারী এক বৃদ্ধ (Old Man)। নিউজফিডে বারবার আসতে থাকা  একাধিক ভিডিওতে তাঁকে দেখা গিয়েছে জাতীয় পতাকা নিয়ে পুলিশের জল কামান উপেক্ষা করে নিজের অবস্থানে অনড় থাকতে। এইভাবে একনাগাড়ে তিনি পুলিশের ‘অত্যাচার’ সহ্য করে গেলেও বিতর্ক তৈরি হয়, কিছুক্ষণ পরেই পুলিশের দিকে তাকিয়ে তার করা কিছু অঙ্গভঙ্গি এবং ‘চুড়ি পরা’র মন্তব্য শুনে।

   

অন ক্যামেরা  এমন মন্তব্য করায় ওই বৃদ্ধের  সমালোচনায় মুখর গোটা  সমাজ মাধ্যম। এপ্রসঙ্গে গায়ক রুপম ইসলামের স্ত্রী রুপসা দাশগুপ্ত একটি ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘চুড়ি পরে বসে থাক… ওয়াহ! ওয়াহ! এই সব কথাই যদি না থামে, তবে কীসের এত আন্দোলন।’

এদিন গায়কের স্ত্রীকে সমর্থন করে একই সুরে এক নেটিজেন লিখেছেন, ‘ছাড়ো তো! নারীবিদ্বেষীদের আবার নারী আন্দোলন! ওই যে… জাঙিয়ার বেল্ট।’ অপর একজন সরাসরি বিজেপিকে নিশানা করে লিখেছেন ‘এটা হল বিজেপির ফেমিনিজম’। তৃতীয়জনের মন্তব্য, ‘এই সব সার্কাসের কারণে আসল জিনিসের থেকে ফোকাসটা সরে যাচ্ছে।’

আরও পড়ুন : BJP-র বাংলা বনধে তুলকালাম! গ্রেফতার লকেট, বাড়ি থেকে সজল ঘোষকে আটক করল পুলিশ

অন্যদিকে ছাত্র আন্দোলে অংশ নেওয়া ওই বৃদ্ধের প্রশংসা করে বিজেপি নেতা অমিত মালব্য নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একটি ভিডিও পোস্ট করে লিখেছেন, ‘জলকামানের মাঝে আইকনিক হাওড়া সেতুতে জাতীয় পতাকা ওড়ানো লোকটি নিপীড়ক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের চূড়ান্ত প্রতীক’।

কিন্তু এখন প্রশ্ন হল এই আন্দোলনকারী বৃদ্ধ আসলে কে ? তাঁর কি বিশেষ কোন রাজনৈতিক পরিচয় আছে? রিপাবলিক বাংলার সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে ওই গেরুয়া বসনধারী বৃদ্ধের নাম বলরাম বসু। নিজেকে শিক্ষক পরিচয় দিয়ে এদিনের আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন ‘আমরা জানি বাংলার অর্ধেকটা নারী। এই নারীদের সুরক্ষা দেওয়া দায়িত্ব আমাদের পুরুষদের, নারীদেরও।’ তাই তাঁর প্রশ্ন, ‘যেখানে মহিলারা অসুরক্ষিত হয়ে রয়েছেন সেখানে প্রতিবাদ করব না?’

আরও পড়ুন : কীসের বনধ বিরোধী মামলা? চরম ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি, উল্টে করা হল ৫০ হাজার টাকার জরিমানা

তারপরেই তিনি জানিয়েছেন ছাত্ররা নিজেরা আন্দোলন করার পাশাপাশি প্রত্যেক পরিবার থেকে অন্তত একজন করে এই আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। তাই তিনি বলেছেন, ‘ আমি সেই সমাজের অংশ। আমি সেই কারণে গেছি। আমার কোন রাজনৈতিক পরিচয় নেই-ডান-বাম কিছুই না। সুস্থ সমাজের অংশ হিসেবে সকলকে প্রতিবাদ করতে হবে।’

সেইসাথে আন্দোলকারী বৃদ্ধ এদিন বলেছেন, ‘আমি শিক্ষকের পরিচয় নিয়ে গিয়েছি। আমার ছাত্রীরা যাতে সুরক্ষিত থাকে, বাংলার সমাজে সব মহিলারা যাতে সুরক্ষিত থাকে, সেই দাবি নিয়ে গেছি। আমার চারপাশে অনেক মহিলা আছে, স্ত্রী-বোন-মেয়ে-কত পরিচয়ে। তাদের সুরক্ষার দায়িত্ব আমরা যদি না নেই, তবে কে নেবে।’

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর