বাংলাহান্ট ডেস্কঃ বিশ্ব ব্রাহ্মান্ডের তিন প্রধান দেবতা ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর। দেবতার মধ্যে শিব (shiva) অর্থাৎ মহাদেবের অন্যতম এক প্রসিদ্ধ ধাম হল কেদারনাথ ধাম (Kedarnath Temple)। ধর্ম সংস্কারের দেশ ভারতেও বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে রয়েছে বাবা মহাদেবের বিভিন্ন ধর্মস্থান। বছরের বিভিন্ন সময় সেখানে চলে নানান উৎসব অনুষ্ঠান।
বাবা মহাদেব। সর্বত্রই ছড়িয়ে রয়েছে তারই মহিমা। উত্তরাখণ্ডের পাহাড়ের মাঝখানে মন্দাকিনী নদীর ধারে তৈরি বাব মহাদেবের পবিত্র ধাম কেদারনাথ ধাম। এটি হিমালয়ের গাড়োয়াল পর্বতশ্রেনীতে অবস্থিত একটি বিখ্যাত হিন্দু তীর্থক্ষেত্র। প্রকৃতির খুব কাছে থাকায় বছরের বেশির ভাগ সময় সেখানে প্রবল ঠাণ্ডা বিরাজ করে।
বিশেষত এপ্রিল মাসের শেষ থেকে নভেম্বররের শুরু অর্থাৎ কার্তিক পূর্ণিমা অবধি এই মন্দির খোলা থাকে। পরবর্তী সময় প্রচন্ড ঠাণ্ডার কারণে বরফাবৃত হওয়ায় মন্দির থেকে ভগবানের মূর্তি উখি মঠে নিয়ে যাওয়া হয়। দীর্ঘ ৬ মাস সেখানেই ভগবানের আরাধনা করা হয়।
মন্দির যত প্রাচীন হয়, ততই সেই মন্দির নিয়ে রহস্য দানা বাঁধতে থাকে। এই মন্দিরের উৎপত্তি সম্পর্কেও নানা অজানা তথ্য রয়েছে। রাহুল সংস্কৃত্যায়নের হিমালয় পরিচয় থেকে এই মন্দির চারটি পর্যায়ে গড়ে ওঠার কাহিনী আমরা জানতে পারি। প্রথমে গুপ্ত যুগের শিলালিপিতে এই মন্দিরের উল্লেখ পাওয়া যায়। তারপর এগারো শতকে গর্ভগৃহ সমেত গোটা মন্দিরের নির্মান হয়। পরবর্তীতে বারো শতকে মন্দির সংস্কার করা হয়। এবং ধীরে ধীরে আঠেরো শতকে মন্দিরের সামনের অংশ তৈরির মধ্য দিয়ে মন্দির নির্মান কার্য সম্পন্ন হয়
কেদারনাথ শৃঙ্গের ইতিহাস
পুরাণ মতে জানা যায়, কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর মহাভারতে জ্ঞাতি হত্যার পাপ থেকে মুক্তি পেতে পান্ডবগন তীর্থ দর্শন করতে বেরিয়ে পৌঁছেছিলেন। সেই সময় তারা কাশীতে এসে জানতে পারেন ভগবান শিব তাঁদের দর্শন না দেবার জন্য পাহাড়ের কোলে আত্মগোপন করেছেন। সেখানে নাকি তিনি এক ষাঁড়ের ছদ্মবেশে লুকিয়ে রয়েছেন।
এইভাবে খুঁজতে খুঁজতে তারা গৌরিকুণ্ডের কাছে সেই ষাঁড়কে মাটিতে মিশে যেতে দেখে ভীম জাপটে ধরেন। ভগবান তাঁদের হাত থেকে নিস্তার পেতে দৌর শুরু করলেন। এইভাবে দীর্ঘক্ষণ সময় পেরিয়ে মাটি ভেদ করে উপরে উঠে আসলেন বৃষরূপী মহাদেব। তাই কেদারনাথে বৃষের পিঠের কুজ জ্যোতিরলিং হিসাবেই পূজা করা হয়।