বাংলাহান্ট ডেস্কঃ শ্রীকৃষ্ণের (Lord Krishna) ব্রজলীলার অনুকরণে বৈষ্ণবীয় ভাব ধারায় পালিত হয় রাসযাত্রা (Rasa lila), যা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অত্যন্ত প্রিয় উৎসব। প্রকৃতপক্ষে রাসযাত্রা একটি বৃত্তাকার নাচ, যেটি ৮/১৬/৩২ জন মিলে করে থাকেন। এরই মধ্যে দিয়ে শ্রীকৃষ্ণের রসপূর্ণ জীবনকথা বর্ননা করা হয়।
ভারতের মথুরা, বৃন্দাবন, ওড়িশা, আসাম, মণিপুর এবং পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া সহ বিভিন্ন স্থানে রাসযাত্রার জৌলুস বর্তমান।পদ্মপুরাণ অনুযায়ী শারদরাস ও বাসন্তীরাস এবং ব্রহ্ম বৈবর্তপুরাণ অনুযায়ী বাসন্তীরাসের কথা জানা যায়। হরিবংশ ও ভাসের বালচরি অনুযায়ী শ্রীকৃষ্ণ গোপীদের সঙ্গে হল্লীশ নৃত্য করেন। এই নৃত্যই যদি সুন্দর ভাবে পরিবেশিত হয়, তখন তাকে ‘রাস’ বলা হয়।
শ্রীধর স্বামীর মতে রাসের অপর নাম ‘রাসো নাম বহু নর্ত্তকীযুক্তে নৃত্যবিশেষঃ।’ শ্রীমদ্ভাগবত অনুযায়ী, শ্রীকৃষ্ণ যেদিন গোপিনীদের বস্ত্রহরণ করেছিলেন, সেদিনই তিনি প্রতি পূর্ণিমা তিথিতে রাসলীলা করার কথা দিয়েছিলেন।
‘যখন করেন হরি বস্ত্রহরণ।
গোপীদের কাছে তিনি করিলেন পণ।।
আগামী পূর্ণিমাকালে তাঁহাদের সনে।
করবেন রাসলীলা পুণ্য বৃন্দাবনে।।’
শ্রীকৃষ্ণের মধুর বাঁশির সুরে সকল গোপিনীরা নিজেদের কর্তব্য ও কাজে মন দিতে পারতেন না। ফলে তারা ছুটে চলে আসতেন তাঁর কাছে। শ্রীকৃষ্ণ তাদের ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করলেও তারা ফিরে যেতে রাজী হতেন না। ফলে ভক্তের অনুরোধে শ্রীকৃষ্ণ পুনরায় রাসলীলা শুরু করেন। শ্রীকৃষ্ণের রাসলীলায় বিভোর হয়ে গোপিনীরা শ্রীকৃষ্ণকে তাদের অধীনে করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তখন তাদের অহংকার চূর্ণ করার জন্য শ্রীকৃষ্ণ রাধাকে নিয়ে অন্তর্ধানে চলে যান।
ফলে তারা সারাজীবনের জন্য শ্রীকৃষ্ণকে হারিয়ে ফেলেন এবং বুঝতে পারে ভগবান ভগবান কখনই ভক্তের অধীনস্ত হতে পারে না। এরপর গোপিনীরা মনের ভক্তির সঙ্গে ভগবানের আরাধনা করে। শেষপর্যন্ত তাদের ডাকে সারা দিয়ে শ্রীকৃষ্ণ তাদের মনস্কামনা পূর্ণ করেন।