বাংলা হান্ট ডেস্ক: ভারতের পঞ্চদশ রাষ্ট্রপতি হিসেবে গত ২৫ জুলাই অর্থাৎ সোমবার শপথগ্রহণ করেছেন দ্রৌপদী মুর্মু (Droupadi Murmu)। শুধু তাই নয়, দেশের প্রথম আদিবাসী রাষ্ট্রপতি হিসেবে এক অনন্য নজির তৈরি করেছেন তিনি। এদিকে, বর্তমানে নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সকলেরই একটা আগ্রহ পরিলক্ষিত হচ্ছে। এমতাবস্থায়, সামনে এল এক চমকপ্রদ তথ্য।
মূলত, বর্তমানে রাষ্ট্রপতির নাম দ্রৌপদী মুর্মু হলেও প্রথমে তিনি এই নামে পরিচিত ছিলেন না। পাশাপাশি, এই ঘটনা তিনি নিজেই জানিয়েছেন। তাঁর “দ্রৌপদী” নামটি থাকার পেছনে এক স্কুল শিক্ষিকার ভূমিকা রয়েছে। মহাভারতের অন্যতম কেন্দ্রীয় চরিত্রের সাথে সাযুজ্য রেখেই ওই স্কুল শিক্ষিকা তাঁর নামটি দেন। আর তারপর থেকেই দ্রৌপদী মুর্মু সেই নামটি বহন করে চলেছেন।
তাঁর পূর্বের নাম কি ছিল? এই প্রসঙ্গে সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, সম্প্রতি এক ওড়িয়া ভিডিও ম্যাগাজিনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু জানিয়েছিলেন, “দ্রৌপদী আমার আসল নাম ছিল না। বরং, আমার সাঁওতালি নাম হল পুতি। দ্রৌপদী নামটা আমায় আমার এক শিক্ষিকা দিয়েছিলেন। তিনি আমার ময়ূরভঞ্জ জেলার বাসিন্দা ছিলেন না। আসলে ১৯৬০-এর দশকে আদিবাসী অধ্যুষিত ময়ূরভঞ্জ জেলায় তেমন কোনো শিক্ষক ছিলেন না। যার ফলে বালাসোর বা কটক থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ওই জেলায় পড়াতে আসতে হত। এমতাবস্থায়, আমার “পুতি” নামটি ওই শিক্ষিকার পছন্দ হয়নি। বরং, ভালোর জন্যই তিনি সেটা বদলে দ্রৌপদী রেখেছিলেন।”
উচ্চারণে হয়েছে পরিবর্তন: পাশাপাশি, ওই সাক্ষাৎকারে তিনি আরও জানান যে, তাঁর ওই নাম বদলের পরেও বেশ কয়েকবার উচ্চারণের ভুলের কারণে নাম পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছে। মূলত, দ্রৌপদী উচ্চারণের সময় অনেকেই তাঁকে “দুরপাদি” বলে ডাকতেন। শুধু তাই নয়, কেউ কেউ আবার তাঁকে ডাকতেন “দর্পদি” বলেও। পাশাপাশি, জানা গিয়েছে দ্রৌপদীর পৈতৃক পদবি ছিল “টুডু”। এমতাবস্থায়, স্কুল-কলেজ সহ সর্বত্রই তিনি ওই পদবি ব্যবহার করতেন। যদিও, পরবর্তীকালে ব্যাঙ্ক অফিসার শ্যাম চরণ টুডুর সঙ্গে বিবাহের পর, তিনি “মুর্মু” পদবির ব্যবহার শুরু করেছিলেন।
সাঁওতালি সংস্কৃতিতে কি রয়েছে: যদিও, এই নাম পরিবর্তনের পালা অব্যাহত থাকলেও তিনি তাঁর আদি নাম “পুতি”-কে কখনোই হারিয়ে যেতে দেবেন না বলে জানান। এই প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি বলেন, সাঁওতালি সংস্কৃতিতে কোনো নামই হারিয়ে যায় না। বরং প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে একই নাম বহন করা যায়। এছাড়াও তিনি জানান যে, “আদিবাসী পরিবারে যখন কোনো কন্যা সন্তান জন্মায়, তখন সে তার ঠাকুমার নাম গ্রহণ করে। অন্যদিকে পুত্র সন্তান জন্মালে তার নাম রাখা হয় তার দাদুর নামে।” আর এভাবেই বংশানুক্রমিক ভাবে নামগুলি টিকে থাকে।