বাংলা হান্ট ডেস্ক : জোব চার্নকের আগমনের সময় থেকে এতগুলি বছর পেরিয়ে নানান ওঠাপড়ার সাক্ষী থেকেছে কলকাতা।যার এক নাম তিলোত্তমা।কলকাতার রসগোল্লা,প্রেমে পড়া সন্ধ্যের ঘাট,উত্তর কলকাতার অলিগলি, নস্টালজিক হলুদ আলো এমনকি দক্ষিণ কলকাতার ঝাঁ-চকচকে ইমারত সব মিলিয়ে শহর জুড়ে যেন প্রেমের মরসুম।
প্রসঙ্গত ১৬৯০ সালের ২৪ অগস্ট এক মেঘলা দিনে কলকাতার মাটিতে পা রেখেছিলেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলা জোব চার্নক। সেই দিনটি পালিত হয়ে আসছে কলকাতার জন্মদিন হিসাবে। যদিও কিছু বিমত আছে যে চার্নক সাহেব আসার আগেও কলকাতায় মনুষ্যবসতি ছিল। ফলে তিনি কলকাতা শহরের জনক, এটা হয়ত ঠিক নয়।তবে আধুনিক কলকাতা বলতে যা বোঝায়, তার পত্তন করেছিলেন জোব চার্নক-ই। ক্রমশ কলকাতাকে ঘিরে গোটা এশিয়ায় ব্রিটিশ শাসন আবর্তিত হয়েছিল।
১৬৯০ সালে আধুনিক কলকাতার পত্তনের পর থেকে ক্রমশ মিটিং মিছিলের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে কলকাতা শহরের অলিগলি।১৭৭২ সালে তৎকালীন বড়লাট লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস সুবে বাংলার রাজধানী মুর্শিদাবাদ থেকে সরিয়ে আনেন কলকাতায়। এতদিন শুধু বাণিজ্যিক গুরুত্ব ছিল কলকাতার। হেস্টিংসের এই সিদ্ধান্তে রাতারাতি কলকাতার রাজনীতিক, প্রশাসনিক এবং সাংস্কৃতিক গুরুত্বও বেড়ে যায়। পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রভাবে বাংলা তথা ভারতে যে নবজাগরণ শুরু হয়েছিল, তার কেন্দ্রবিন্দু ছিল কলকাতাই। ব্রিটিশ শাসনে কলকাতা কিছু গৌরবজনক ঘটনার সাক্ষী হয়।
শিক্ষা সংস্কৃতিতেও পিছিয়ে নেই আমাদের শহর যাকে অনায়াসে বসবাসকারী প্রতিটা মানুষ বলতে পারে ‘আমার শহর’।সেই আমার শহরে ১৮৩৫ সালে এশিয়ার প্রথম মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হয় কলকাতাতেই। কলকাতা মেডিকেল কলেজে তখন এশিয়ার অন্যান্য দেশ থেকেও ছেলেরা পড়তে আসত। ১৮৫৭ সালে তৈরি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল গোটা পূর্ব ভারতে (এখনকার বাংলাদেশ ধরে) প্রথম এমন কুলীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ১৯১১ সাল পর্যন্ত অবিভক্ত ভারতবর্ষের রাজধানী ছিল কলকাতা।
১৯৪৭ সালে দেশভাগ হওয়ার পর থেকেই কলকাতার অবস্থার কিছুটা অবনতি শুরু হয়।এর পর খাদ্য সঙ্কট, নকশাল আন্দোলন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের জেরে চরম আর্থিক দূর্বলতায় জর্জরিত সময় কাটায় এই কল্লোলিনী।স্রোতের অন্যায় অনুপ্রবেশকারীদের আগমন কলকাতাকে অভূতপূর্ব সঙ্কটে ফেলে দেয়। সেই থেকে সঙ্কটের বৃত্ত কেটে
আজও কলকাতা বেরোতে পারেনি তার অধোগতি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্প ও কর্মসংস্থান, পরিকাঠামো সব দিক থেকেই কলকাতা এখন হেরো মুম্বই, ব্যাঙ্গালোর, চেন্নাই, হায়দরাবাদের কাছে। আপাতত ভালো থেকো কলকাতা।