বাংলাহান্ট ডেস্ক : ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী কলকাতা যুগযুগ ধরে বহন করে আসছে নানা ভাষা নানা মতের ইতিহাস। ফ্রেঞ্চ, পর্তুগিজ থেকে শুরু করে ইসলামিক স্থাপত্যের দেখা মেলে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে। তবে কলকাতা (Kolkata) শহরের বুকেই রয়েছে একটুকরো লখনউ। সেই মলিন হয়ে যাওয়া ইতিহাসের কথা আজ আর কেউই মনে রাখেনি।
কলকাতাতেও (Kolkata) মেলে লখনৌয়ের ছোঁয়া
ওধের শেষ রাজা নবাব ওয়াজিদ আলী শাহ’কে নির্বাসনের জন্য ইংরেজরা প্রেরণ করে কলকাতার (Kolkata) মেটিয়াব্রুজে। শতাধিক বেগম ও কিছু বাবুর্চি-বেয়ারা নিয়ে ওয়াজিদ আলী আসেন মেটিয়াব্রুজে। ইতিহাসবিদরা বলেন, যুদ্ধে পারদর্শিতা খুব একটা ছিল না ওয়াজিদ আলীর। সারাদিন তিনি ব্যস্ত থাকতেন গান, সায়েরি, নাটকের মতো শিল্পকলা নিয়ে।
শোনা যায় কলকাতায় (Kolkata) আলু বিরিয়ানির প্রচলন হয় ওয়াজিদ আলীর হাত (Wajid Ali Shah) ধরেই। নবাব ওয়াজিদ আলী চেয়েছিলেন মেটিয়াব্রুজকে লখনউয়ের আদলে গড়ে তুলতে। লখনউয়ের ধাঁচে মেটিয়াব্রুজে ওয়াজিদ আলী তৈরি করেন ইমামবাড়া। নামাজ পড়ার জন্য নির্মাণ করেছিলেন শাহি মসজিদ।
আরোও পড়ুন : ‘বাংলার মুখ্যমন্ত্রী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়’, তোলপাড় রাজ্য
ওয়াজিদ আলী গান গাইতেন পাখির মতো। গান রচনাও করতেন। ইমন, ভৈরবী, বেহাগ রাগের উপর সৃষ্ট গানগুলি আজও জনপ্রিয় সঙ্গীত প্রেমীদের কাছে। অনেক ইতিহাসবিদ বলেন, সেই সময়ের বিখ্যাত ধনী রাজেন মল্লিকের সাথে মিলে চিড়িয়াখানা তৈরির ভাবনা চিন্তাও করেছিলেন ওয়াজিদ আলী শাহ।
এখনো মেটিয়াব্রুজ গেলে দেখা মিলবে নবাবের তৈরি ভগ্নপ্রায় ইমামবাড়া, শাহি মসজিদের। রয়েছে নবাবের কবর শাহি ইমামবাড়া। পুরনো ইতিহাসের ধুলো ঝেড়ে অনেকটাই বদলেছে মেটিয়াব্রুজের চেহারা। তবে আজও মেটিয়াব্রুজের পথে হাঁটা লাগালে এক মুহূর্তের জন্যও মনে হতে পারে এসে পড়েছেন সুদূর লখনউতে।