বাংলাহান্ট– মাতাবে আলোর চন্দ্র অভিযান, এমাজন অভিযান, চাঁদের পাহাড়। এই বছর পুজোয় “অভিযান” থিমের ওপর বিশেষ জোর দিয়েছেন চন্দননগরের আলোক শিল্পী বাবু পাল। আলোর মাধ্যমে প্রত্যেকটি বিষয় নিখুঁত ভাবে ফুটিয়ে তোলার প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। এছাড়াও কাজ চলছে ৬৫ ফুটের বুর্জ খলিফা, স্কাই ডাইভিং, ৩০ ফুটের ভারতীয় পতাকা তৈরির। আলোর তৈরী ভারতীয় সেনার গৌরবের কাহিনী। বায়ু সেনা, নৌ সেনা এবং স্থল সেনার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে, থিমের নাম দেওয়া হয়েছে স্যালুট তো ইন্ডিয়ান আর্মি। আলোক শিল্পী বাবু পাল জানিয়েছেন চন্দ্র অভিযান থিমে আলো দিয়ে তৈরী করা হয়েছে চাঁদের কক্ষ পথে পৌঁছেছে চন্দ্র যান। চাঁদের চারপাশে ঘুরতে দেখা যাবে আলোর তৈরী বিশালাকার চন্দ্র যানকে। সেখানে চন্দ্র যানের আশেপাশে নজরে পড়বে সৌর জগতের অন্যান্য গ্রহ নক্ষত্র। একইসঙ্গে তার ঠিক পাশেই থাকছে নীল আর্মস্ট্রং এর চাঁদে যাওয়ার কাহিনীও। এমাজনের অভিযান থিমটা নেওয়া হয়েছে বাংলা ছবি থেকে। এই ক্ষেত্রেও দেখা গেছে চারপাশে সবুজ জঙ্গল, মাঝ খান দিয়ে এঁকেবেঁকে চলেছে নদী। সেই নদী ধরে এগিয়ে যাবে ১৬ ফুট উচ্চতার বজ্রা। তার ওপরে উড়বে ড্রাগন, নিচে নদীর জলে বিশাল এনাকোন্ডা। আর সেই বজ্রার ওপরে দাঁড়িয়ে বন্দুক হাতে শংকর লড়াই করে চলেছে। থাকছে ৬৫ ফুটের বুর্জ খলিফা। আলোর তৈরী ৩০ ফুটের ভারতীয় পতাকা উড়তে দেখা যাবে।
বাবু পাল জানিয়েছেন অভিযান থিমের আলো দিয়েই এই বছর সাজিয়ে তোলা হবে এই বছর কলকাতার শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের পুজোকে। এছাড়াও চন্দননগরের আলো যাবে ডি এন ঘোষ রোড বজবজ, বেলডাঙা মুখার্জি বাড়ির পুজো এবং গৌহাটির নওগাঁয়। এই বছরই প্রথম তাঁর হাত ধরেই তাঁর তৈরী আলো কিনছে কেনিয়ার একটি সংস্থা। সম্প্রতি চন্দননগরের বিখ্যাত আলোর খোঁজ পেয়ে কেনিয়া থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কেনিয়ার নাইরোবিতে একটি বিনোদন পার্কে স্থায়ী ভাবে বসানো হবে চন্দননগরের আলো দিয়ে তৈরী বিশাল আয়তন হাতি এবং ডাইনোসর।
নাইরোবির সেই বিনোদন পার্কে শোভা পাবে এই রাজ্য তথা চন্দননগরের তৈরী আলো। বাবু পাল জানিয়েছেন রাজ্য সরকারের তরফে আয়োজিত নদী উৎসবেও থাকবে তাঁর আলো। দূর্গা পুজোর পরেই আয়োজিত নদী উৎসবকে কেন্দ্র করে কলকাতা সংলগ্ন গঙ্গার পার এবং বেশ কয়েকটি ঘাট আলো দিয়ে সাজিয়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্য পর্যটন দপ্তরের। এই প্রসঙ্গে ইতিমধ্যেই বাবু পাল কথা বলেছেন রাজ্যের পর্যটন সচিব অত্রি ভট্টাচার্য্যের সঙ্গে। বাবু পাল জানিয়েছেন আলোক শিল্পে নতুন প্রযুক্তি তুলে ধরতে সম্প্রতি তিনি চায়না ঘুরে এসেছেন।
সেখানে তিনি কাপড়ের মাধ্যমে আলোক সজ্যা দেখেছেন। এই বছর সেই প্রযুক্তির ব্যবহার করবেন ঠিক করে ফেলেছেন। নিশ্চিত করেছেন পরীক্ষামূলকভাবে কলকাতার বেশ কয়েকটি মণ্ডপে কাপড়ের তৈরী আলোর বেলুন দিয়ে সাজাবেন। জানিয়েছেন গণেশ পুজোর নিরঞ্জন শোভাযাত্রায় তাঁর আলো এই বছর যাচ্ছে মধ্য প্রদেশের ইন্দোর।