বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কলকাতা মেট্রো (Kolkata Metro) মানেই শহরবাসীর লাইফ লাইন। প্রত্যেকদিন এই মেট্রো পরিষেবায় উপকৃত হচ্ছেন শহর থেকে শহরতলীর কয়েক হাজার মানুষ। এখন কলকাতার সাথেই আশেপাশের জেলাগুলির সাথেও যোগাযোগ মসৃণ করতে চালু করা হচ্ছে আরও একাধিক মেট্রো রেল প্রকল্প। এই মুহূর্তে গোটা শহর জুড়ে জালের মতো ছড়িয়ে রয়েছে মেট্রো রেল লাইন। এবার এই মেট্রোরেলের (Kolkata Metro) বিরুদ্ধেই গুরুতর অভিযোগ তুললো কেন্দ্রীয় সরকার।
কলকাতা মেট্রোর (Kolkata Metro) প্রায় ৫০০ কোটির লোকসান
দাবি করা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) মানুষকে পরিবহনের সুযোগ-সুবিধা করে দেওয়ার জন্য কলকাতা মেট্রোর প্রত্যেক বছর ৪৫০ কোটি টাকার বেশি লোকসান হচ্ছে। জানা যাচ্ছে, বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের একটি প্রশ্নের উত্তরে এই তথ্য দিয়েছে ভারতীয় রেল। যা সামনে আসতে না আসতেই রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বিজেপির তরফে দাবি করা হয়েছে রাজ্য সরকারের উদাসীনতার কারণেই নাকি কলকাতা মেট্রোর (Kolkata Metro) এই ভোগান্তি হচ্ছে। যার ফলে কার্যত বেহাল অবস্থা একাধিক সরকারি প্রকল্পের। আর এতেই বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের। ২০২১ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এই ক্ষতির হিসাব দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।
সেখানে দেখা যাচ্ছে, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে কলকাতা মেট্রোর লোকসান হয়েছে মোট ৪৮৭.৩৭ কোটি টাকা। যা ২০২২-২৩ অর্থ বর্ষে এসে দাঁড়িয়েছে ৪২৪.২৪ কোটিতে, আর ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে ক্ষতি হয়েছে মোট ৪৬৫.১১ কোটি টাকা। আর ক্ষতির কারণ হিসাবে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক প্রকল্পের কথা তুলে ধরেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
ঠিক কীভাবে, কেন রাজ্যের কারণেই এই বিপুল আর্থিক ক্ষতি হয়েছে? সেকথাও স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, এখানে শুরুতেই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো করিডোরে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে তেঘরিয়া পর্যন্ত কাজের কথা বলা হয়েছে। কেন্দ্রের দাবি, তেঘরিয়া (হলদিরাম) পর্যন্ত কাজের জন্য যে খরচ হবে তা ৫০ঃ৫০ অনুপাতে রাজ্যের সাথে ভাগ করতে চেয়েছিল কেন্দ্র। যদিও তাতে সায় দেয়নি রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন: উচ্চ-প্রাথমিকের তৃতীয় দফার কাউন্সেলিং নিয়ে বড় আপডেট! সামনে এল দিনক্ষণ
অন্যদিকে নিউ গড়িয়া থেকে দমদম এয়ারপোর্ট লাইন ৩২ কিলোমিটারের মেট্রো প্রকল্পের কাজের মধ্যে ৯.৮ কিলোমিটার কাজ শেষ হলেও ২২.২ কিলোমিটার কাজ এখনও ঝুলে রয়েছ। কেন্দ্রের দাবি, ধীর গতির কাজের কারণ ট্রাফিক অন্যত্র সরানোরও অনুমতি দেয়নি রাজ্য সরকার। একই অবস্থা জোকা থেকে বিবাদীবাগ পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার লাইনেও। আর এখানে জমি জটের জন্য রাজ্যকেই দায়ী করেছে কেন্দ্র।
এছাড়াও রয়েছে নোয়াপাড়া থেকে বারাসাত পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটারের লাইনের কাজও। এখানেও ১৫.১৬ কিলোমিটার রাস্তার কাজের দেরির জন্য এবং মাইকেল নগর থেকে বারাসত পর্যন্ত ৮.১২ কিমি জায়গায় জমি জটের জন্য রাজ্যের দিকেই আঙুল তুলেছে কেন্দ্র। অন্যদিকে কলকাতা পৌরসভা থেকে দেওয়া জলের পাইপলাইন রাজ্য সরকার অন্যত্র সরাতে না পারায়, বরানগর থেকে ব্যারাকপুর লাইনেও কাজেও দেরি হচ্ছে বলে দাবি করছে কেন্দ্র।