এত লস! শোচনীয় পুরসভার কোষাগার! শহরের তিনটি ইউনিটে এক ধাক্কায় কমল সম্পত্তিকর আদায়

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ হাতে গোনা আর মাত্র তিন মাস। তারপরেই শুরু হচ্ছে নতুন অর্থবর্ষ। হিসাব বলছে এখনও পর্যন্ত চলতি অর্থবর্ষে সম্পত্তিকার সংগ্রহের পরিমাণ গত অর্থ বর্ষের তুলনায় বাড়লেও তা খুব একটা ইতিবাচক নয়। হিসাব বলছে দক্ষিণ কলকাতায় সম্পত্তিকর সংগ্রহের পরিমাণ গত বছরের তুলনায় প্রায় সাড়ে চার শতাংশ কমে গিয়েছে।

পুরসভার (Kolkata Municipal Corporation) তিনটি ইউনিটে কমল সম্পত্তিকর আদায়

সম্পত্তিকর সংগ্রহের পরিমাণ কমেছে টলি ট্যাক্স ডিপার্টমেন্ট (টিটিডি) এবং ১১ নম্বর বরো এলাকাতেও। শোচনীয় অবস্থা কলকাতা পুরসভার (Kolkata Municipal Corporation) কোষাগারেরও। যা নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন কলকাতা পুরসভার পুর আধিকারিকরা। এমনিতেই গত এক বছর ধরে অবসরপ্রাপ্ত পুরকর্মীরা তাঁদের প্রাপ্য মোটা টাকা (গ্র্যাচুইটি, কমিউটেশন) পাচ্ছেন না। কাজ কাজ করেও গত তিন বছরের বিলের বকেয়া টাকা থেকে বঞ্চিত ঠিকাদারেরা।

কলকাতা পুরসভার (Kolkata Municipal Corporation) আয়ের অধিকাংশ টাকাই আসে সম্পত্তিকর থেকে। কিন্তু চলতি বছরের সম্পত্তিকর বাবদ আয় খুব একটা আশানুরূপ নয়। এইভাবে চলতে থাকলে আগামীদিনের কলকাতা পুরসভার কোষাগারের  অবস্থা আরও সঙ্গীন হয়ে পড়বে। এর ফলে কর্মীদের বেতন দেওয়াও খুব মুশকিল হয়ে যাবে।

পুরসভার (Kolkata Municipal Corporation) কর রাজস্ব বিভাগ সূত্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত অর্থবর্ষে অর্থাৎ ২০২৩-২৪ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত সম্পত্তিকর বাবদ আদায় হয়েছিল মোট ৯৭৯ কোটি ৭৬ লক্ষ ৯ হাজার ৪০৪ টাকা। আর চলতি অর্থবর্ষে ওই সময়কালে সম্পত্তিকর সংগ্রহের পরিমাণ ৯৮৭ কোটি ৫০ লক্ষ ৭২ হাজার ৮৯৩ টাকা। পরিসংখ্যানের হিসাব অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে সম্পত্তিকর বাবদ আদায় বেড়েছে মাত্র ৭ কোটি ৭৪ লক্ষ ৬৩ হাজার ৪৮৯ টাকা।

আরও পড়ুন: উল্টোপুরাণ! আবাস যোজনার টাকা পেল আউশগ্রামের ২০ বিজেপি পরিবার, শুভেচ্ছাবার্তা মমতার

লক্ষণীয় বিষয় হল দক্ষিণ কলকাতার দিকে গত অর্থবর্ষে এই সময়ে সম্পত্তিকর সংগ্রহের পরিমাণ ছিল ৪৩২ কোটি ২৫ লক্ষ ৩৬ হাজার ৭৮৮ টাকা। যা চলতি অর্থবর্ষে একধাক্কায় কমে গিয়ে হয়েছে ৪১৪ কোটি ৩৮ লক্ষ ২২ হাজার ২০৮ টাকা। অর্থাৎ, শহরের দক্ষিণ অংশে সম্পত্তিকর কমেছে প্রায় সাড়ে চার শতাংশ। রিপোর্ট বলছে, গড়িয়াহাটের টলি ট্যাক্স বিভাগে গত বছরের তুলনায় সম্পত্তিকর আদায় কমেছে প্রায় সাড়ে ছ’শতাংশ। ১ এপ্রিল থেকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত যা তথ্য আছে তা থেকে জানা যাচ্ছে গত অর্থবর্ষের তুলনায় এবছর ওই বিভাগে সম্পত্তিকর আদায় কমেছে ৭ কোটি ৫৯ লক্ষ ৭ হাজার ৩৯৫ টাকা।

গত বছরের তুলনায় এ বছর ১১ নম্বর বরো এলাকায় সম্পত্তিকর আদায় কমেছে ৮৬ লক্ষ ২১ হাজার ১৩৩ টাকা। ২০২৪-এর মার্চ মাসে গার্ডেনরিচে নির্মীয়মাণ বেআইনি বাড়ি ভেঙে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল।ওই ঘটনার পর বেআইনি নির্মাণ ঠেকাতে নড়েচড়ে বসে পুর (Kolkata Municipal Corporation) কর্তৃপক্ষ। বেআইনি নির্মাণ দেখলেই ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়ে তৈরি হয় ‘এসওপি’। অভিযোগ বাস্তবে গার্ডেনরিচে আবার বেড়েছে বেআইনি নির্মাণের রমরমা।

kolkata municipal corporation Government of West Bengal

সূত্রের খবর, গার্ডেনরিচে সম্পত্তিকর আদায়ের পরিমাণ গত অর্থর্ষের তুলনায় বেড়েছে ৩৬.৩৪ শতাংশ। আবার ১২ নম্বর বরো এলাকাতেও গত বছরের তুলনায় এ বছর মাত্র ০.৪৮ শতাংশ সম্পত্তিকর আদায় বেড়েছে। বেহালা, অর্থাৎ এসএসইউ বা সাউথ সাবার্বান ইউনিটে সম্পত্তিকর আদায় বেড়েছে মাত্র ১১.৮০ শতাংশ। এছাড়াও জোকা ইউনিটে সম্পত্তিকর বেড়েছে ১৩.৯৩ শতাংশ। তবে জানা যাচ্ছে, এই বৃদ্ধির হার আশানুরূপ না হওয়ায় চলতি মাসেই পুর কর্তৃপক্ষ কর রাজস্ব বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন।

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর