বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রকট হয়েছে চরম আর্থিক সংকট, আর এই কারণেই বন্ধ হয় গেল কলকাতা পুরসভার পেনশন। প্রজাতন্ত্র দিবসের পরের দিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এই বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয় যে আর্থিক সংকটের কারণেই পেনশন বন্ধ করা হচ্ছে। আচমকাই নেওয়া এই সিদ্ধান্তের ফলে বিপাকে পড়েছেন পুরসভার অবসপ্রাপ্ত কর্মীরা। বিগত ৮-৯ মাস ধরে প্রাপ্য বকেয়া না মেলার পর পেনশনও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে তাদের।
যদিও কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম দ্রুত এই অচলাবস্থা কাটিয়ে ওঠার আশা যুগিয়েছেন। তবে মেয়র আশ্বস্ত করার পরেও কবে পেনশন পাবেন সেই নিয়ে ঘোর অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে পুরসভার অবসপ্রাপ্ত কর্মীদের মধ্যে। একেতেই করোনার ভ্রুকুটি, তারমধ্যে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি! এমতবস্থায় তাদের সংসার কীভাবে চলবে, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।
বিপুল জনসমর্থন পেয়ে কলকাতা পুরসভায় ফের জয়ী হয় শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। এরপর দ্বিতীয়বারের জন্য মেয়র পদে বসেন ফিরহাদ হাকিম। দ্বিতীয়বার মেয়র পদে শপথ নেওয়ার দিনই ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন, বিপুল ঋণ মাথায় নিয়ে তিনি ফের মেয়রের চেয়ারে বসছেন। এই আর্থিক টানাটানির মধ্যে মানুষের জন্য কাজ চালিয়ে যাওয়াটাই চ্যালেঞ্জের বিষয়।
আর্থিক সংকট মেটাতে দায়িত্ব নেওয়ার পর কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপও নেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। রাজ্য সরকারের কাছ থেকে ৭০০ কোটি টাকার দাবিও করেন তিনি। পাশাপাশি এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাংকের থেকে ২০০০ কোটি টাকা ঋণও নেওয়া হয়। ঋণ নিয়েই বকেয়া মেটাতে উদ্যোগী হয়েছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তবে ওনার এই উদ্যোগ যে কাজে আসেনি, সেটা প্রমাণ করে দিলো বৃহস্পতিবার পুরসভার তরফ থেকে দেওয়া বিজ্ঞপ্তি।
পুরসভার বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, একুশের সেপ্টেম্বর মাসের পর যেসব কর্মীরা অবসর নিয়েছেন তাদের এই মুহূর্তে পেনশন দেওয়া যাচ্ছে না। বিজ্ঞপ্তিতে আর্থিক সংকটের কথাও স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে। বলে দিই, বর্তমানে পুরসভার ২২ হাজার স্থায়ী কর্মীদের বেতন মেটায় রাজ্য সরকার। এবং ২৬ হাজার অস্থায়ী কর্মীদের বেতন দেয় খোদ পুরসভা। কিন্তু আর্থিক সংকটের জেরে তাদেরও বেতন আটকে রয়েছে। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে বর্তমানে কতটা আর্থিক সংকটে ভুগছে কলকাতা পুরসভা। আর এই অচলাবস্থা কবে কাটবে, তাও জানা নেই কারও।