বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কলকাতার (Kolkata) ট্যাংরা কাণ্ডে ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য। একই পরিবারের তিনজন মহিলার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে উঠতে শুরু করেছে একাধিক প্রশ্ন। আত্মহত্যা নাকি খুন? এই রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় এখন এটাই সব থেকে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুরু থেকে তিনজন মহিলা আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করা হলেও এবার এই ঘটনায় খুনের মামলা রুজু করলেন তিনজন মৃতদের মধ্যে একজনের বাবা।
কলকাতার (Kolkata) ট্যাংরার রহস্য মৃত্যুতে খুনের মামলা রুজু
বুধবার ট্যাংরায় (Kolkata) একই বাড়ির তিনটি আলাদা ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছিল তিনজনের মৃতদেহ। তাদের মধ্যে দুজন মহিলা এবং একজন নাবালিকা। তাদের প্রত্যেকেরই হাতের শিরা কাটা ছিল। মৃত দুই গৃহবধূরা হলেন সুদেষ্ণা দে এবং রোমি দে। আর নাবালিকার নাম প্রিয়ম্বদা। এদের মধ্যে সুদেষ্ণা দে’র বাবা থানায় অভিযোগ জানিয়ে মামলা রুজু করেছেন। তাঁর দাবি মেয়েকে খুন করা হয়েছে। স্পষ্ট করে করে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করেননি তিনি। তবে এবার তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই এবার অজ্ঞাত পরিচয়ের বিরুদ্ধে খুনের মামলার রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
ট্যাংরার এই রহস্য মৃত্যুর ঘটনায় এরই মধ্যে মাথাচাড়া দিয়েছে বেশ কিছু প্রশ্ন। প্রথমত বাড়ির সবার যদি একসাথে আত্মহত্যা করার পরিকল্পনা থেকে থাকে তাহলে তারা আলাদা আলাদা ভাবে কেন করলেন? মৃতদেহগুলি যদি দোতলায় থাকে, তাহলে ম্যাজেনাইন ফ্লোরে রক্তের দাগ কেন? মঙ্গলবার দিনভর পাওনাদাররা এসে ডাকাডাকি করার পরেও কেউ দরজা খোলেনি কেন? তাহলে আরও আগে মহিলাদের মৃত্যু হয়েছিল? বিষয়টা লুকোতেই কি বাড়ির পুরুষরা দরজা খোলেননি? একই দাবি পাশের বাড়ির কেয়ারটেকারের।
কলকাতা (Kolkata) পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা জানিয়েছেন, কোনো সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। তবে আসলে কারণ কী? কেন মৃত্যু হল একই পরিবারের তিন সদস্যের? সেটা পোস্টমর্টেম রিপোর্ট থেকেই বোঝা যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি। একইসাথে তিনি জানিয়েছেন ভিসেরার কেমিক্যাল পরীক্ষাও গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে ওই পরিবারের আহত সদস্যরা সুস্থ হলেই তাঁদের নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন মনোজ ভার্মা।
আরও পড়ুন: অবশেষে মঞ্জুর! বড় নির্দেশ দিয়ে দিলেন জাস্টিস মান্থা, কোন মামলায়?
ভাবাচ্ছে আরও একটা বিষয়। তা হল বাড়ির সবার যদি পরিকল্পিত ভাবে আত্মহত্যা করা পরিকল্পনা থেকেই থাকে তাহলে ৩ জন মহিলা মারা গেলেন অথচ তিনজন পুরুষ এখনও জীবিত? তাই আবারও প্রশ্ন উঠছে আত্মহত্যা না কি খুন? কী কারণে এই চরম পরিণতি হল একই পরিবারের তিন সদস্যের? পরিবারের জীবিত সদস্যরাই প্রথম পুলিশকে আত্মহত্যার কথা জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, সকলে একসঙ্গে পায়েসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন। হাতের শিরা কেটে তিনজন আত্মহত্যা করেছেন। আর তাঁরা আত্মহত্যা করার জন্য গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু ইতিমধ্যেই যে সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে সেখানে দেখা যাচ্ছে নাবালক সহ দুই ভাই স্বাভাবিক ছন্দেই গাড়িতে উঠছেন।
প্রসঙ্গত, কলকাতার (Kolkata) ট্যাংরায় ৩ টি আলাদা আলাদা ঘর থেকে ২ গৃহবধূ ও তাঁদেরই এক মেয়ের মৃতদেহ উদ্ধার করার পর দেখা যায় ২ মহিলার গলা ও হাতের শিরা কাটা, আর কিশোরীর মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বেরোচ্ছিল। তাই প্রশ্ন উঠছে আহতদের দাবি মতো, সত্যিই কি এটা আত্মহত্যার ঘটনা? নাকি খুন? আসল সত্যিটা কি? তা জানতেই তদন্তে নেমেছেন অফিসারেরা। পুলিশ সূত্রে খবর আপাতত, তাঁরা ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছেন। জানা যাচ্ছে বৃহস্পতিবারেই প্রাথমিক রিপোর্ট আসার কথা আছে।