বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বছর শেষের আগেই নতুন করে ঝাঁজ বেড়েছে আর জি করের (RG Kar Case) তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ আন্দোলনের। তিলোত্তমার ন্যাবিচারের দাবিতে আবারও উত্তাল কলকাতার রাজপথ। ‘সিবিআই-এর এ কী হাল ধর্ষকদের করে আড়াল!’ হাতে প্রতীকী তালা নিয়ে সিজিও-কমপ্লেক্সের সামনে আরও একবার এভাবেই গর্জে উঠলেন আন্দোলনরত চিকিৎসক-নার্সরা।
ঝাঁজ বেড়েছে আর জি কর কান্ডের (RG Kar Case) প্রতিবাদ আন্দোলনের
দুর্গাপুজোর পর এবার বড়দিন। শহর জুড়ে আবারও উৎসবের আমেজ। কিন্তু সেসবই বড্ড ফিকে। অন্তত বিক্ষোভকারীদের কাছে তাই-ই। এদিনের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সিজিও-কমপ্লেক্সের (CGO Complex) সামনে জড়ো হয়েছেলিন রাজ্যের ডাক্তার-স্বাস্থ্যকর্মী-নার্সরা। আর জি কর কান্ডের (RG Kar Case) তদন্ত প্রক্রিয়ায় সিবিআইয়ের (CBI) বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেই এদিন সিজিও কমপ্লেক্সের সামনে প্রতীকী তালা ঝুলিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা।
পুলিশ তা খুলে দিতেই পুলিশের সাথে বিক্ষোভকারীদের ধস্তাধস্তিতে বেঁধে যায় ধুন্ধুমার কান্ড। আর জি কর কান্ডের (RG Kar Case) চার মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত এগোয়নি তদন্ত প্রক্রিয়া। এমনকি ৯০ দিনের মাথায় চার্জশিট জমা দিতে পারেনি সিবিআই। যার ফলে এই মামলার অন্যতম মূল অভিযুক্ত আরজিকর কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মন্ডলকে জামিন দিয়েছে আদালত।
এসবের মধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি বা সিএফএসএল টিমের রিপোর্ট। সেখানেই উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। যা থেকে উঠে আসছে একাধিক প্রশ্ন। ক্রাইম সিন বদলানোর প্রসঙ্গেও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে ওই রিপোর্ট। তাহলে কি ওই দিন সেমিনার রুমে নয় অন্য কোথাও ধর্ষণ-খুন করা হয়েছিল তিলোত্তমাকে? বিক্ষোভকারী ডাক্তারদের দাবি কেন্দ্রীয় সংস্থা সিএফএসএল ইঙ্গিত দিচ্ছে ঘটনার অকুস্থল অন্য কোনো স্থানে হতে পারে। তাছাড়া, হাসপাতাল সর্বক্ষণ খোলা থাকে তাই অপরাধীর পক্ষে ওই সেমিনার রুমে ঢুকে চুপিসারে এতবড় অপরাধ ঘটানো সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন: বাংলা সিরিয়ালে হিন্দি গান… নিজের ছেলেকেও আর বাঙালি বানাচ্ছে না! এ কোন দিলীপ ঘোষ?
প্রশ্ন উঠছে মূল চার্জশিটে তদন্তের এই বিষয়গুলি কেন উল্লেখ করেনি সিবিআই? আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, এই বিষয়গুলি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা আড়াল করার চেষ্টা করেছিল। তাই সিএফএসএল টিমের এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই আবার নতুন গতি পেয়েছে আরজিকর কান্ডের প্রতিবাদ আন্দোলন। এদিন তারই প্রতিবাদে সিজিও কমপ্লেক্সের সিবিআই-এর দফতর ঘেরাও অভিযানের ডাক দিয়েছিলেলন মেডিকেল সার্ভিস সেন্টার,সার্ভিস ডক্টর ফোরাম এবং নার্সেস ইউনিটি।
সিবিআইয়ের ভূমিকায় ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে এদিন এক বিক্ষোভকারী ডাক্তারি ছাত্র বলেছেন, ‘কলকাতা পুলিশও ধর্ষকদের আড়াল করার চেষ্টা করেছিল\। এখন সিবিআই। ১১ই সেপ্টেম্বর যে সিএফএসএল রিপোর্ট এসেছে, সেখানে তথ্য প্রমাণ লোপাট করার কথা উল্লেখ রয়েছে। তারপর ৯০ দিন কেটে গেলেও সিবিআই চার্জশিট দিতে পারল না।’ তবে যেভাবে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের দুই তদন্তকারী সংস্থা প্রকৃত সত্য, কার্যত গোপন করার চেষ্টা করছে তাতে আগামী দিনে এর বিরুদ্ধে আন্দোলন আরও তীব্র থেকে তীব্রতর করা হবে বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসক সংঘঠনের সদস্যরা।